নিউজ সোনারগাঁ টুয়েন্টিফোর ডটকম: বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রধান সহযােগী সংগঠন হচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ । আর এই যুবলীগ বর্তমান সময়ে আওয়ামীলীগের অন্যতম শক্তিশালী সহযােগী সংগঠন হিসেবে প্রমাণ রেখেছে । তারই ধারাবাহিকতায় সোনারগাঁ উপজেলা যুবলীগও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে । তবে সাম্প্রতিক সময়ে সোনারগাঁ উপজেলা যুবলীগ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে দলীয় কর্মসূচি পালন করে আসছেন ।
সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আলাদা আলাদাভাবে দুই এলাকায় বিভক্ত হয়ে নিজস্ব নেতাকর্মীদের নিয়ে কর্মসূচি পালন করছেন । যা নিয়ে তৃণমূলে নানা আলাপ আলােচনার জন্ম নিচ্ছে । যদিও আলাদা কর্মসূচি পালন করার পিছনে তারা তাদের নিজস্ব যুক্তি দাঁড় করিয়েছেন । তবে তাদের এই যুক্তির চেয়ে তৃণমূল নেতাকর্মীরা একত্রে কর্মসূচি পালন করাকেই বেশি যথােপযুক্ত মনে করছেন এবং তারা বাহ্যিক ঐক্যবদ্ধতাকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন ।
সুত্র জানায়. ২০১৭ সালে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবলীগকে পাশ কাটিয়ে কেন্দ্রীয় যুবলীগ থেকে সোনারগাঁ উপজেলা যুবলীগের আহবাযক কমিটির অনুমোদন নিয়ে আসেন বর্তমান সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু ও সাধারণ সম্পাদক আলী হায়দার।তৎকালীন সময়ের যুবলীগকে বিলুপ্ত না করে আহবায়ক ঘোষনা দেয়ায় কমিটির বিরুদ্ধে মামলা করেন সাবেক যুবলীগের সভাপতি গাজী মুজিবুর রহমান ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহআলম রূপম।সেই মামলায় জিতে যান বর্তমান কমিটির সদস্যরা। পরে রফিকুল ইসলাম নান্নুকে সভাপতি ও আলী হায়দারকে সাধারণ সম্পাদক করে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট একটি পুনাঙ্গ কমিটি ঘোষনা করা হয়।
কমিটি ঘোষনার পর উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার কমিটি নিয়ে শুরু হয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে টানাপোড়া। কে কাকে কার লোক দিয়ে কমিটি করবে সে নিয়ে শুরু হয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে প্রতিযোগিতা। সে সময় কমিটি নিয়ে অর্থ বানিজ্যেরও কথা উঠে। চাউল আছে কমিটি দিতে এক একটি ইউনিয়নে কয়েক লাখ টাকার বানিজ্য হয়েছে। সে বানিজ্যে সভাপতির নামটি বেশী উঠে আসে।এছাড়া কমিটিতে খুনি ও মাদক ব্যবসীদের স্থান দেয়ায় সমালোচনার মুখে পড়ে যুবলীগ। এদিকে উপজেলার বেশীর ভাগ কমিটি দেয়া হয় সভাপতির নিদেশে। সেজন্য কমিটি ঘোষনার পর থেকেই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে দুরত্ব সৃষ্টি হয়। অবশেষে তাদের মধ্যে ভাঙ্গনের মধ্যে দিয়ে দৃুজন দুদিকে নেতাকর্মী নিয়ে অবস্থান নেন। বর্তমানে সভাপতি রাজনীতি করছেন সাবেক এমপি কায়সার হাসনাতের সাথে আর সাধারণ সম্পাদক আলী হায়দার আছেন উপজেলা আহবায়ক কমিটির সদস্য ডাক্তার আবু জাফর চৌধুরী বিরুর সাথে।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে এক ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা জানান, দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাথে রাজনীতি করেছি। রাজনীতির জীবনে মোগরাপাড়ার নেতাকর্মীদের সাথেই জড়িত ছিলাম। রাজনীতি করতে করতে অনেক সম্পদ নষ্ট করেছি হামলা-মামলার শিকার হয়েছি কিন্তু মোগরাপাড়ার রাজনীতি থেকে বিচ্যুতি হইনি। যুবলীগে কমিটিতে স্থান পাওয়ার জন্য সাবেক এমপি. চেয়ারম্যান ও যুবলীগের নেতা থেকে শুরু করে অনেক নেতার পিছনে পিছনে ঘুরেছি। সে সময় অনেকেই বলেছে কমিটি আনতে যেহেতু অনেক ঘুরাঘুরি ও অনেক অর্থ খরচ হয়েছে এখন কমিটি নিতেও অর্থ খরচ করতে হবে।অবশেষে বাধ্য হয়েই অর্থের বিনিময়ে কমিটিতে স্থান পেয়েছি। কমিটিতে স্থান পেয়ে শুধু নেতা হিসেবেই নিজেকে পরিচয় দিতে পারেছি, মিছিল মিটিংয়ে অর্থ ও সময় ব্যয় করে নেতাকর্মী নিয়ে যোগদান করেছি। কিন্তু বিনিময়ে যুবলীগের নেতাদের কাছ থেকে কোন সুযোগ সুবিধা পাইনি। বরং নেতারা সুযোগ বুঝে কাজে লাগিয়েছেন আর অর্থ নিয়েছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলী হায়দার জানান, আমি দীর্ঘদিন ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলাম। আমি জানি রাজনীতি করতে গিয়ে একজন কর্মী কতটুকু হামলা মামলা ও নির্যাতনের শিকার হতে হয়। সেজন্য আমি চেয়েছিলাম আমার যুবলীগে তৃনমুল থেকে ত্যাগী নেতাকমীদের নিয়ে একটি শক্তিশালী কমিটি গঠন করা কিন্তু তখন বাস্তবতা ছিল ভিন্ন। সেজন্য আমি আমার মনের মতো করে যুবলীগটিকে সাজাতে ব্যর্থ হয়েছি। কিন্তু যুবলীগে নেতাকর্মীরা ঠিকই নেতাকে চিনতে পেরেছে কারা অর্থ বানিজ্য করে আর কারা দলের জন্য কাজ করে। বর্তমানে সোনারগাঁ উপজেলা সকল ইউনিয়নের যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা আমার সাথে আছে আমি তাদের নিয়ে একটি শক্তিশালী প্লাটফর্ম তৈরী করতে চেষ্টা করছি।
তবে বিভিন্ন সভা সমাবেশে যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু দাবি করেন, অন্য সময়ের চেয়ে যুবলীগ এখন অনেক শক্তিশালী।যুবলীগে কোন বিভক্তি নাই।