নিউজ সোনারগাঁ টুয়েন্টিফোর ডটকম: সরকারী স্বাস্থ্য বিধি অনুযায়ী একজন করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি হোম কোয়ারেন্টারে ও তার পরিবার বাধ্যতামুলক ভাবে লক ডাউন থাকতে হবে। সরকারী এ নির্দেশ মানছেনা সোনারগাঁ উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের বাড়ী মজলিশ ও বাড়ী চিনিস দু গ্রামের মানুষ। এজন্য প্রতিদিনই দুই গ্রামে বাড়ছে করোনা আক্রান্তর সংখ্যা। অপরদিকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের হোম কোয়ারেন্টার ও লক ডাউনের বিষয়টি তদারকি না করার কারণে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি ও পরিবার যে যার যার মতো বাড়ি থেকে বের হয়ে ঝুঁকির মুখে ফেলছে পুরো দুটি গ্রামসহ অন্যান্য অঞ্চল।
জানাগেছে, সোনারগাঁ উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের গোহাট্ট্রা গ্রামে গত ১৯ শে এপ্রিল আঃ রহিম (৬৫) নামের এক ব্যক্তি করোনার উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু বরন করেন। এরপর তার নমুনা পরিক্ষা করার পর করোনার পজেটিভ ধরা পড়ে। এরপর তার স্ত্রীরও করোনা সনাক্ত হয়। যদিও তিনি বর্তমানে সুস্থ হয়েছেন। এর থেকে মোগরাপাড়া চৌরাস্তার এলাকার বাড়ী মজলিশ ও বাড়ী চিনিস এলাকায় এক ইউপি সদস্যসহ বর্তমানে প্রায় ২২ জনের মতো করোন রোগী রয়েছে। এছাড়া উপসর্গ নিয়ে প্রতিটি পরিবারে আক্রান্ত রয়েছেন। অনেকে ভয়ে পরিক্ষা করছেন না আবার অনেকে নমুনা ইতিমধ্যে সংগ্রহ করা হয়েছে। এরমধ্যে উপসর্গ নিয়ে ২জন মারা গেছেন।
স্থানীয়রাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের বাড়ী মজলিশ ও বাড়ী চিনিষ দুটি গ্রামই ঘনবসতিপুর্ণ। এলাকাটি মোগরাপাড়া চৌরাস্তার পাশে হওয়ায় স্থানীয় লোকদের পাশাপাশি অনেক বহিরাগতরাও বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করেন। এতো লোকের কারনে দুটি গ্রামেই শারীরিক দুরত্ব বজায় রাখা সম্ভব না। এছাড়া অতিরিক্ত বহিবারগত থাকায় নিয়ম অনুযায়ী লকডাউন মানেনি কেউ। এছাড়া স্থানীয় সমাজ ব্যবস্থা দুর্বল থাকায় স্থাণীয়দের কথাও শুনতেন না ভাড়াটিয়ারা। ফলে তারা বিভিন্ন স্থান থেকে কাজকর্ম শেষ করে দোকান ও পাড়া মহল্লায় যে যার মতো আড্ডা দিতেন। এতে শারীরিক দুরত্ব বজায় না থাকায় একজন করোরা আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে বাড়তে বাড়তে গত এক সপ্তাহে সেখানে জনপ্রতিনিধি ও তার সহধর্মিনীসহ করোনা রোগী সংখ্যা বেড়ে ২২ জনের মতো হয়েছে। আক্রান্ত হওয়ার পর প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিটি আক্রান্ত ব্যক্তির বাড়ীসহ আশপাশের বাড়িঘর লক ডাউন করে দিয়ে আসেন। কিন্তু দু একদিন অতিবাহিত হওয়ার পর করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি ও তার পরিবারের লোকজন বিভিন্ন কারণে ঘরে বাহিরে আসতে শুরু করে। প্রয়োজনে দোকান ও বাজারে গিয়ে বজার করতেও দেখা যায়। স্থানীয় সমাজ ব্যবস্থা দুর্বল হওয়ায় করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিকে ঘরে রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারছেনা। এছাড়া প্রশাসনের পক্ষ থেকে মনিটরিং না থাকায় করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি ও তার পরিবার মোগরাপাড়া কাঁচা বাজার ও দোকানে গিয়ে অন্য ব্যক্তিদেরও আক্রান্ত করছে।
এ ব্যাপারে বাড়ী মজলিশ গ্রামের বাসিন্দা বুলবুল আহম্মেদ জানান, বর্তমানে উপজেলার করোনার হটস্পট বাড়ি মজলিশ ও বাড়ি চিনিস দুটি গ্রাম। প্রতিদিনই দুটি গ্রামে বাড়ছে করোনা আক্রান্তর সংখ্যা। প্রশাসনের পক্ষ থেকে একদিন এসে আক্রান্ত ব্যাক্তির বাড়ি লক ডাউন করার পর দেখা যায় ২/১ পর আক্রান্ত ব্যক্তি ও তার পরিবারের লোকজন লক ডাউন ভেঙ্গে প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে ঘরের বাহিরে গিয়ে ঔষধ বাজার সদাই করছে। কেউ কারো কোন কথাই শুনছেন না। ফলে ধীরে ধীরে সুস্থ ও সচেতন ব্যক্তিরাও করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে করোনা রোগীর ও তার পরিবারের লক ডাউন নিশ্চিত করতে না পারলে এখান থেকে পুরো উপজেলায় করোনা ছড়িয়ে পড়বে।