বিপাকে কর্মহীন কারুশিল্পীরা
- আপডেট টাইম : সোমবার, মে ১৮, ২০২০
রবিউল হুসাইন
করোনা মহামারীর কারণে প্রায় দুই মাস যাবৎ কর্মহীন রয়েছেন সোনারগাঁয়ের শতাধিক কারুশিল্পী। করোনা প্রাদুর্ভাবের জন্য এখানকার কারুশিল্পীরা তাদের কারুপণ্য উৎপাদন ও বিপণন করতে না পেরে চরম আর্থিক সংকটের মধ্যে পড়েছেন। সমাজের অসহায় ও দুস্থ পরিবারকে সরকার বিভিন্ন সাহায্য-সহযোগিতা দিলেও এই কারুশিল্পীরা পাচ্ছেন না কোনো সহায়তা। ফলে পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে কারুশিল্পী পরিবারগুলোকে। সোনারগাঁয়ে অবস্থিত কারুশিল্পীদের নিয়ে কাজ করে বাংলাদেশের একমাত্র কারুশিল্প প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন। এই ফাউন্ডেশনের অভ্যন্তরে ৩৫ জন কারুশিল্পীর কারুপণ্যের স্থায়ী স্টল রয়েছে। করোনার কারণে এসব স্টল গত ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ। তা ছাড়া কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের নিজস্ব তালিকাভুক্ত প্রায় অর্ধশতাধিক কারুশিল্পী রয়েছেন। তারা সবাই করোনা পরিস্থিতির জন্য এখন কর্মহীন। এসব কারুশিল্পীর মধ্যে জামদানি, মৃৎশিল্প, কাঠের চিত্রিত হাতি-ঘোড়া, নকশিকাঁথা, নকশি হাতপাখা, বাঁশ ও বেতশিল্প, কাঠ খোদাই শিল্প ও পাটশিল্প অন্যতম। এসব কারুশিল্পী তাদের কারুপণ্য তৈরি ও বিক্রি করতে না পেরে দিশেহারা অবস্থায় রয়েছেন।
জামদানির শিল্পী মোহাম্মদ আলী বলেন, প্রতি বছর ঈদের আগে আমরা জামদানি তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটালেও এবার করোনার জন্য সবাই কর্মহীন। হাতে কোনো অর্ডার নেই। জামদানির তাঁত প্রায় সবগুলোই বন্ধ রয়েছে। যে কয়টা শাড়ি বোনা হয়েছিল, সেগুলোও অর্ধেক দামে লোকসানে বিক্রি করে দিতে হয়েছে। এ অবস্থায় কেউ আমাদের সহায়তা প্রদান করেনি। আমরা অনেক কষ্টে দিন কাটাচ্ছি।
কাঠ খোদাই কারুশিল্পী আউয়াল মোল্লা জানান, কারুশিল্পীরা তাদের কারুপণ্য তৈরির মাধ্যমে দেশের ঐতিহ্যকে ধরে রাখছে। অথচ বর্তমান সংকটকালে এসব কারুশিল্পীর পাশে কেউ নেই। সরকারিভাবে দ্রুত দেশের সব কারুশিল্পীর জন্য বিশেষ প্রণোদনার ব্যবস্থা করার আহ্বান জানান তিনি।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক মো. রবিউল ইসলাম জানান, করোনা পরিস্থিতির কারণে সৃষ্ট দুর্যোগে কারুশিল্পীদের কষ্টের কথা বিবেচনা করে আমরা ইতিমধ্যে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে সমস্যাগ্রস্ত কারুশিল্পীদের একটি তালিকা প্রেরণ করেছি। মন্ত্রণালয় এটি যাচাই-বাছাই করে তাদের সহায়তা প্রদান করবে বলে আশা করছি।
সূত্র: দৈনিক দেশ রূপান্তর