নিউজ সোনারগাঁ টুয়েন্টিফোর ডটকম: একমাত্র আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই নয়াগাঁও গ্রামে ২০ ধরে একের পর চলে আসছে একের পর এক মারামারি, হত্যাকান্ড নিরিহ মানুষের রক্তে রক্তাক্ত হচ্ছে নিরিহ মানুষ। গ্রামের নেতৃত্বকে কেন্দ্র করে জমি কেনাবেচা ও বালু ব্যবসা নিয়ন্ত্রন নিজেদের হাতে পুঞ্জিভুত করেছে নিজেদের দ্বন্ধ ছড়িয়ে দিচ্ছে নিরহ গ্রামবাসীর মধ্যে। এতে নেতাদের বেশী কিছু ক্ষতি না হলেও নি:স্ব হয়ে গেছে নয়াগাঁও গ্রামের অসংখ্য মানুষ। এরই ধারাবাহিকতা শনিবার সকালে শরম আলী নামের এক নিরিহ ব্যক্তি প্রতিপক্ষের অস্ত্রের আঘাতে নিহত হয়েছেন আহত হয়েছেন আরো ৩০জন ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়েছে অসংখ্য বাড়ীঘর।
জানাগেছে, আওয়ামীলীগ প্রথমবার ক্ষমতায় আসার পর আধিপত্য বিস্তার নিয়ে হাজী আলাউদ্দিন ও বাদল মিয়ার মধ্যে দ্বন্ধ শুরু হয়। তারা দু’জনেই আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত থাকায় এলাকায় নিরিহ মানুষকে জিম্মি করে একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রন নিতে চায়। এ নিয়ে সে সময় আলাউদ্দিন ও বাদলের মধ্যে একাধিকবার সংঘর্ষ হয়। এতে অনেক নিরিহ লোক আহত হয় এবং বাড়ীঘর ভাংচুর করা হয়। এলাকার অনেকে তাদের সাথে দ্বন্ধে জড়াতে না চাইলে তাদের বাড়ীঘরে হামলা চালানো হতো। বাধ্য হয়ে নয়াগাঁও গ্রামের মানুষ কারো না কারো পক্ষ নিতে হতো। আর এ পক্ষ নিয়েই হতো মারামারি। এক পক্ষের লোকেরা আরেক পক্ষের লোকজনের সাথে তুচ্ছ ঘটঁনায় মারামারিতে জড়িয়ে পরতো। এভাবে দীর্ঘদিন চালার পর ব্যবসায়ীক কারণে এক হয়ে যান বাদল ও হাজী আলাউদ্দিন। তখন মাহবুব নামের একজন (যাদের বেল্চা গ্রুপ নামে পরিচিত) তারা তাদের বিপক্ষে অবস্থান নিতে শুরু করে। আগে যারা বাদল ও আলাউদ্দিনের পক্ষ নিয়ে মারামারি করতো তারা সব কিছু থেকে বঞ্চিত হয়ে বাদল আলাউদ্দিনের বিপক্ষ অবস্থান নেয়ায় ফের শুরু হয় দ্বন্ধ। সর্বশেষ গত কয়েকদিন আগে নয়াগাঁও এলাকায় একটি কোম্পানীর কাজ নিয়ে আলাউদ্দিন বাদল ও বেল্চা গ্রুপের মধ্যে দ্বন্ধ শুরু হয়। তখন শম্ভুপুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী কাদিরের বাড়িতে বসে তাদের মধ্যে একটা সমঝোতা হয়। সেখানে বলা হয় বেল্চা গ্রুপকে বালু ভরাটের একটা নিদিষ্ট পরিমান টাকা দিয়ে দিবে। কিন্তু বালু ভরাট শুরু হওয়ার পর থেকে বেল্চা গ্রুপকে কোন টাকা প্রদান করেনি বাদল ও আলাউদ্দিন গংরা। এ নিয়ে বেল্চা গ্রুপের সাথে আলাউদ্দিনের মনমালিন্য শুরু হয়। বালুর টাকা যাতে প্রতিপক্ষকে না দিতে হয় সেজন্য কৌশলে ধরে শুক্রবার বিকেলে আলাউদ্দিনের ছেলে ইয়ানবী ও বাদলের নেতৃত্বে একটি দল দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সাদেকুর রহমান নামের এক মুদি দোকানদারকে কুপিয়ে মারাত্মক আহত করে। এর জের ধরে শুরু হয় দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে ব্যর্থ হয়। পুলিশের উপস্থিতিতে আলাউদ্দিনের লোকজন বেল্চা গ্রুপের লোকজনের বাড়ীতে হামলা চালিয়ে বাড়ীঘর ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। এ ঘটনায় আজ শনিবার সকালে বেল্চা গ্রুপ ও আলাউদ্দিন বাদলের গ্রুপের সাথে ফের সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে শমর আলী নামের এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা করা হয় এবং আরো ৩০জনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করা হয়। এরমধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশংকা জনক বলে জানিয়েছেন আহতের স্বজনরা। হত্যা কান্ডের পর নিহত ব্যক্তি আলাউদ্দিনের লোক বলে দাবি করে তার স্বজনরা। তারা জানান, বেল্চা গ্রুপের লোকজন শরম আলীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে।
এ ব্যাপারে সোনারগাঁ থানার ওসি তদন্ত তবিদ রহমান জানান, শুক্রবার বিকেলে সংঘর্ষের ঘটনা শুনে থানা পুলিশের একাধিক টিম পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে কাজ করছে। হত্যার ব্যাপারে তিনি জানান পুলিশ যাওয়ার পর দুই পক্ষই বাড়ী ছেড়ে চরে গিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে একজন নিহত হন।