নিউজ সোনারগাঁ২৪ডটকম: ২০১৮ সালের ৪ জানুয়ারী সোনারগাঁ উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের কান্দারগাঁও এলাকাতে সোনারগাঁ রির্সোস সিটিতে বালু ভরাটকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের বিরোধের জের ধরে মোহাম্মদ আলী (৩০) নামের যুবলীগের এক নেতাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করে বালু সন্ত্রাসীরা। এ হত্যার ঘটনায় আদালতে নারাজি পিটিশন দাখিল করেছেন মামলার বাদি।
সোমবার (৭ জানুয়ারী) নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মাহমুদুল মহসীনের আদালতে অধিকতর তদন্তের জন্য নারাজি পিটিশন দাখিল করেন মামলার বাদি নিহতের মা শিউলী বেগম। শুনানী শেষে আদালত অধিকতর তদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ সিআইডিকে নির্দেশ দেন।
এদিকে সোমবার শুনানী শেষে আদালতপাড়ায় বাদি ও তার ভাইকে মারধরসহ তাদেরকে প্রাণনাশের হুমকী দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে জামিনে থাকা আসামীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় পুলিশ সুপারের বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন মামলার বাদি।
নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের এএসআই শহীদুল ইসলাম জানান, বাদির নারাজি পিটিশনের প্রেক্ষিতে আদালত অধিকতর তদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ সিআইডিকে নির্দেশ দেন।
নারাজি পিটিশনে বাদি শিউলী বেগম উল্লেখ করেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে দাখিলকৃত চার্জশীটে আফজালের নাম বাদ দিয়েছেন। অথচ মামলার ১নং আসামী মোশারফ মেম্বার, অপর দুই আসামী পনির ও বাহাউল তাদের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে আফজালের নাম উল্লেখ করেছেন।
এছাড়া চার্জশীটে যাদেরকে স্বাক্ষী হিসেবে দেখানো হয়েছে তাদের অধিকাংশ আসামী পক্ষের আত্মীয় স্বজন। এর মধ্যে ১৩নং স্বাক্ষী আব্দুল গাফফার আসামী নোয়াবের আপন বোনের স্বামী। এছাড়া হত্যাকান্ডে যে সকল অস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সেই সকল অস্ত্র জব্দ করেন নাই।
তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্তের ফলাফল বাদিকে অবগত করেন নাই। তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামীদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে চার্জশীট প্রদান করেছে বলে বাদি নারাজি পিটিশনে উল্লেখ করেন। তিনি মামলাটি অধিকতর তদন্তের দাবি জানান।
অপরদিকে পুলিশ সুপারের বরাবরে দাখিলকৃত অভিযোগে বাদি উল্লেখ করেন, সোমবার সকালে আদালতে শুনানী শেষে বের হওয়ার পরে আদালতপাড়ায় মামলার বাদি শিউলী বেগম ও তার ভাই জাকির হোসেনকে আসামী মোশারফ মেম্বার, দিপু, শান্ত, জসিম, কবির, আবু সাঈদ, হাবিব, জসিম মিলে মারধর করে এবং তার ভাই জাকির হোসেনকে ১নং আসামী মোশারফ মেম্বার হুমকী দেয় বেশি বাড়াবাড়ি করলে জাকিরকে জবাই করে হত্যা করা হবে। এসময় তারা মামলা তুলে নেয়ারও হুমকী দেয়। এ ঘটনায় তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেও উল্লেখ করেন।
উল্লেখ্য ২০১৮ সালের ৪জানুয়ারী নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার পিরোজপুর এলাকাতে বালু ভরাটকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের বিরোধের জের ধরে মোহাম্মদ আলী (৩০) নামের যুবলীগের এক নেতাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করে বালু সন্ত্রাসীরা।
এ ঘটনায় সোনারগাঁ থানায় মামলা হয়েছে। মামলাটি প্রথমে সোনারগাঁ থানা পুলিশ তদন্ত করলেও পরবর্তীতে পুলিশ সুপারের নির্দেশে মামলাটি তদন্ত করে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। মামলার ১নং আসামী মোশারফ মেম্বার, অপর দুই আসামী পনির ও বাহাউল আদালতে ১৬৪ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন।
সম্প্রতি ডিবি পুলিশ আদালতে চার্জশীট দাখিল করে। নিহত মোহাম্মদ আলী উপজেলার সাহাপুর গ্রামের এলাকার মৃত আরজান আলীর ছেলে।