নিউজ সোনারগা টুয়েন্টিফোর ডটকম: দীর্ঘতী প্রতীক্ষাক্ষা পর অবশেষে বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হতে যাচ্ছে সোনারগাঁ উপজেলার মেঘনা নদীবেষ্টিত প্রত্যন্ত চর নুনেরটেক। প্রায় ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে সোনারগাঁয়ের মূল ভূখন্ড থেকে মেঘনা নদীর তলদেশ দিয়ে ৩৩ হাজার ভোল্টের বিদ্যুৎ লাইন টানার কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে।
৫৪৭ দশমিক ৮৪ একর আয়তনের এ চরে বৈদ্যুতিক খুঁটি স্থাপনের কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। গত ২৪ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সাংসদ লিয়াকত হোসেন খোকা বৈদ্যুতিক খুঁটি স্থাপনের কাজ উদ্বোধন করেন।
বর্তমান সরকার ঘোষিত ২০২১ সালের মধ্যে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার অংশ হিসেবে সোনারগাঁয়ে বিদ্যুৎবঞ্চিত এ চরে বিদ্যুৎসংযোগ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান সাংসদ।
জানা গেছে, মেঘনা নদীর মধ্যে প্রায় ২০০ বছর আগে জেগে ওঠা এ চরে বর্তমানে প্রায় ২০ হাজার লোকের বসবাস। এখানকার বেশির ভাগ মানুষ মৎস্যজীবী ও কৃষিজীবী। নুনেরটেকবাসী স্বাধীনতার পর থেকেই স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে বিদ্যুতের দাবি জানিয়ে আসছিলেন।
এবার বিদ্যুৎসংযোগের কাজ শুরু হওয়ায় আশার আলো দেখছে এখানকার মানুষ। চরটিতে বিদ্যুৎসংযোগের জন্য ইতিমধ্যে একটি উপকেন্দ্র ও দুটি টাওয়ার নির্মাণে মাটি ভরাটের কাজ চলছে।
নুনেরটেকের বাসিন্দা ওসমান আলী জানান, এ দ্বীপে দুটি প্রাইমারি স্কুল, একটি হাইস্কুল ও একটি মাদ্রাসা রয়েছে। বিদ্যুৎ না থাকায় এখানকার শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার সমস্যা হয়। বিদ্যুৎ এলে সে সমস্যার নিরসন হবে বলে আশা করি।
বারদী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জহিরুল হক বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের নুনেরটেক দ্বীপটি ছিল বিদ্যুৎবিহীন একটি জনপদ। এখানকার মানুষ বিদ্যুতের জন্য দীর্ঘদিন থেকে দাবি জানিয়ে এলেও তাদের এ দাবি পূরণ করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু বর্তমান সরকার এ প্রত্যন্ত দ্বীপে বিদ্যুৎসংযোগ দেওয়ার যে উদ্যোগ নিয়েছে তা সত্যি প্রশংসনীয়।’
সোনারগাঁ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির উপমহাব্যবস্থাপক জোনাব আলী জানান, নুনেরটেকে বিদ্যুৎসংযোগ দেওয়ার জন্য দ্রুতগতিতে কাজ এগিয়ে চলছে। ইতিমধ্যে খুঁটি স্থাপনের প্রায় ৭০ শতাংশ কাজ শেষে হয়েছে। বাকি কাজও খুব শিগগির শেষ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। হয়তো আগামী ছয় মাসের মধ্যে নুনেরটেকে বিদ্যুৎসংযোগ দেওয়া সম্ভব হবে।
সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রকিবুর রহমান খান বলেন, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে নুনেরটেক দ্বীপকে আমার গ্রাম আমার শহর প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে দ্বীপটিতে বিদ্যুৎসংযোগ দেওয়ার কাজ শুরু করা হয়েছে। অচিরেই এ দ্বীপে আরও উন্নয়নমূলক কাজ করা হবে। চরটিকে আধুনিক শহরের সুযোগ সুবিধাসমৃদ্ধ একটি জনপদ হিসেবে গড়ে তোলা হবে। তথ্যসূত্রঃ দেশ রূপান্তর