নিউজ সোনারগাঁ টুয়েন্টিফোর ডটকম: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইদুল ইসলামকে বদলীয় করা হয়েছে। ১৪ জুলাই অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার সেলিম রেজা সাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ বদলীর কথা জানানো হয়। এতে জানানো হয়, মো.সাইদুল ইসলামকে সোনারগাঁ থেকে টাঙ্গাইল সদর উপজেলায় বদলী করা হয়েছে। পাশাপাশি টাঙ্গাইল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতিকুল ইসলামকে তার স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদের ওয়েব সাইট থেকে জানা যায়, ২২ নম্বর নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিসেবে ছিলেন অঞ্জন কুমার সরকার। তিনি গত ২০১৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি যোগদানের পর ওই বছরের নভেম্বরে বদলী হন।
সোনারগাঁয়ে ঘুরতে আসা এক সচিবের প্রটৌকল নিয়ে সচিবকে সন্তুষ্ট করতে না পারায় সচিবের ক্ষোভের জেরে তাকে অঞ্জন কুমারকে সোনারগাঁ ধেকে বদলি করা হয়।
পরবর্তীতে ওই বছরের ১১ নভেম্বর রকিবুর রহমান খান যোগদান করলেও মাত্র ৪ মাস পরেই ২০২০ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি বাদলী হয়ে যান।
গত এসএসসি পরিক্ষা চলাকালীন সময়ে কাঁচপুর পরিক্ষা কেন্দ্র প্রবেশ নিয়ে সোনারগাঁয়ের এসিল্যান্ডের সাথে দ্বন্ধ হয় উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বাবু ওমরের সাথে। পরিক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে বাঁধা দেয়ার ঘটনা তৎকালীন ইউএনও রকিবুল রহমানকে জানান। রকিকুল রহমাাা খান পরিক্ষা কেন্দ্রের নিয়ম অনুযায়ী বাবু ওমরকে প্রবেশ করতে নিষেধ করেন। এতে বাবু ওমরের ভাই কাঁচপুর ইউনিয়নের চেয়ারমান মোশারফ ওমর ক্ষুদ্ধ হয়ে উপজেলা জনপ্রতিনিধি ঐক্য ফোরামের সদস্যদের নিয়ে উপজেলার মাসিক আইনশৃঙ্খলা মিটিং বয়কট করে ইউএনওকে বদলি করার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ে আবেদন করেন। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে তাকে জনপ্রশাসন সোনারগাঁ থেকে বদলি করে ফরিদপুরে পাঠান।
বর্তমান ইউএনও মো. সাইদুল ইসলাম গত ১ মার্চ যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকে করোনা শুরু হয়। করোনাকালে তিনি করোনা মোকাবেলায় ছুটে বেরিয়েছেন উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে। করোনার মধ্যে দ্রব্যমুল্যের দাম নিয়ন্ত্রন, মানুষকে ঘরে রাখা, সুুরক্ষা সামগ্রী প্রদান ও ত্রান বিতরনে সকলের প্রশংশা কুড়ান। এছাড়া বিভিন্ন এলাকায় স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে অনেক উন্নয়নমুলক কাজ করেছেন। তবে, তিনি যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন কারণে দ্বন্ধ শুরু হয় স্থানীয় রাজনীতিবিদ ও জনপ্রতিনিধিদের সাথে। সেই দ্বন্ধের জেরে গত সোমবার তাকে বদলি করা হয়।
তবে, একই তথ্য ভান্ডারে দেখা যায় এর আগে যারাই ইউএনও হিসেবে ছিলেন তাদের প্রত্যেকেই একবছর কিংবা দুই বছর আবার কেউ তাদেরও বেশি সময় সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদের ইউএনও হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। হঠাৎ করে বছর ঘুরতে না ঘুরতে পর পর ৩ জন ইউএনও বদলের ঘটনায় সোনারগাঁয়ের প্রশাসনের সুশাসন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন সোনারগাঁঁবাসী।
বৈদেরবাজার এলাকার সফিকুল ইসলাম ইমাম জানান, একজন ইউএনও একটি এলাকায় এসে তার কাজকর্ম ও উন্নয়নের পরিকল্পনা করতে সময় দিতে হয়। কিন্তু রাজনীতিবিদদের মন জয় ও অনৈতিক কাজে সমর্থন না দেয়ায় এক বছরে ৩ জন ইউএনও বদলি করা হয়েছে। এ বদলি বদলি খেলায় উন্নয়ন ও সুশাসন বিঘ্ন হচ্ছে। তবে সুশাসন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সোনারগাঁবাসী। সেজন্য তিনি সরকারের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।