নিউজ সোনারগাঁ টুয়েন্টিফোর ডটকম: দেশে সাধারণ ছুটি থাকলেও ছুটি নেই সোনারগাঁ উপজেলা প্রশাসনের। বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাস থেকে সোনারগাঁবাসীকে রক্ষা করতে অবিরাম কাজ করে যাচ্ছেন তারা। মানুষকে করোনা থেকে রক্ষা করতে আজও উপজেলার জনবহুল গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
আজ শনিবার সকাল থেকে উপজেলার মোগরাপাড়া চৌরাস্তা, মেঘনা শিল্পাঞ্চল ও কাঁচপুর এলাকায় তারা বিভিন্ন মার্কেট ও ফুটপাতগুলোতে তারা অভিযান চালিয়ে ফুটপাতের দোকানগুলো বন্ধ ও গোপনে খোলা মার্কেটে অভিযান চালায়। এসময় ভ্রাম্যামান আদালতের গাড়ী দেখেই অবৈধভাবে খোলা মার্কেটের দোকানদার বন্ধ করে পালিয়ে যান।
জানাগেছে, করোনার ভাইরাসের প্রাদূর্ভাবেরশুরু থেকেই সাধারন মানুষকে ঘরে রাখতে সরকারের পক্ষে থেকে গত মাসের ৭ এপ্রিল পুরো নারায়ণগঞ্জ জেলাকে লক ডাউন ঘোষনা করা হয়। লক ডাউনের পর থেকে সোনারগাঁয়ের গুরত্বপুর্ন এলাকাগুলোতে কঠোর হন পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন। তারা মোগরাপাড়া ও কাঁচপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে মানুষকে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে জরিমানাও করেন। তারপর মানুষ প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে ঘরে বাহিরে বের হন। এদিকে, দিনে দিনে সোনারগাঁয়ে করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকে। বর্তমানে সোনারগাঁয়ে মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১৩০জন এরমধ্যে মারা গেছেন ৪জন, সুস্থ হয়েছেন ৩৯জন।
এদিকে গত ১০ তারিখ থেকে দেশের সকল মার্কেট ও শপিংমলগুলো খুলে দেন সরকার। সারা দেশের ন্যায় সোনারগাঁয়েও মার্কেটগুলি খুলে বসেন দোকানদাররা। কিন্তু স্বাস্থ্য বিধি না মানায় খোলার ৪ দিনের মধ্যে সোনারগাঁয়ের সকল মার্কেট পরবর্তি নির্দেশ দেয়া না পর্যন্ত বন্ধ করে দেন প্রশাসন। সরকারী নিষেধ অমান্য করে কিছু অসাধূ দোকানদার দোকান খোলা রাখার অপরাধে ১০জনকে আটক করে ৫৯ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এরপর মার্কেটের দোকানদার প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে মার্কেটের পেছনের গেইট খুলে কাস্টমার ভেতরে প্রবেশ করিয়ে বেচাকেনা করতে দেখা গেছে। তারপর প্রশাসন সে সকল কাষ্টমারদের ধাওয়া দিয়ে বিতারিত করেন। প্রশাসনের হাত থেকে বাঁচতে অনেকে পরিবার পরিজন নিয়ে ফুটওভার ব্রিজ দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যান। যার ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এরপর বন্ধ হয়নি মার্কেটের দোকানদারদের দোকান বন্ধ করার প্রবনতা। তারা মার্কেটের গলি ও ফুটপাতে গিয়ে দোকান খুলে বেচাবিক্রি শুরু করে। এসব অসচেতন মানুষ ও অসাধূ দোকানদারদের বাড়ি ফেরাতে আজও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মোগরাপাড়া চৌরাস্তা, মেঘনা নিউটাউন ও কাঁচপুর এলাকায় ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) আল মামুন। তিনি করোনা শুরু হওয়ার পর থেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তার অফিস সহকারীদের নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়েছেন। সাধারণ মানুষকে ঘরে ফেরাতে কখনও বুঝিয়েছেন আবার কখনও কঠোর হয়েছেন।
উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভূমি) আল মামুন জানান, সরকারের নির্দেশে বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাস থেকে সোনারগাঁবাসীকে রক্ষা করতে কাজ করে যাচ্ছি। স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধি মেনে চলার অভ্যাস করলে শুধু করোনা ভাইরাস নয়, আর সব ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া থেকেও আমরা বেঁচে থাকতে পারব। আর তাই স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধি আমাদের এবং আমাদের পরিবারের জন্যে মেনে চলতে হবে। কেননা আক্রান্ত ব্যক্তি উপসর্গহীন অবস্থায়ও আরেকজনকে আক্রান্ত করতে পারে। তিনি আরো জানান, আমরা আমাদের সামর্থ্য অনুয়ারী জনগনকে ঘরে রাখার চেষ্টা করছি। করোনা ভাইরাস আল্লাহর হুকুমেই আমাদের মাঝে এসেছে আবার আল্লাহর হুকুমেই করোনা ভাইরাস থেকে আমাদের বেঁচে থাকতে হবে, সে জন্যে ঘরে থাকতে হবে ঘরে থেকেই ইবাদত করতে হবে।