নিউজ সোনারগাঁ২৪ডটকম:
স্বাধীনতার পর এবারই প্রথম আওয়ামীলীগ সরকারের মন্ত্রী পেল নারায়ণগঞ্জবাসী। দীর্ঘ ১৭ বছর পর মন্ত্রী পেয়ে নারায়ণগঞ্জবাসীর মধ্যে দেখা দিয়েছে আনন্দ উচ্ছাস। নারায়ণগঞ্জ থেকে আওয়ামী লীগের এমপি গোলাম দস্তগীর গাজী এবার মন্ত্রী হতে যাচ্ছেন। তিনি বস্ত্র ও পাট মন্ত্রীর দায়িত্ব পাচ্ছেন। গাজী নারায়ণগঞ্জ-১( রূপগঞ্জ) আসনের এমপি। ২০০৮, ২০১৪ ও সর্বশেষ গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জয়ী হন তিনি। যদিও তার মনোনয়ন নিয়ে ছিল নানা নাটকীয়তা।গোলাম দস্তগীর গাজীই নারায়ণগঞ্জের ইতিহাসে আওয়ামীলীগ সরকারের প্রথম মন্ত্রী। এর আগে যতবারই আওয়ামীলীগ সরকার গঠন করেছে কখনো নারায়ণগঞ্জ থেকে কাউকে মন্ত্রী করা হয়নি।
এবার নারায়ণগঞ্জ থেকে কে মন্ত্রীত্ব পাচ্ছেন এ আলোচনায় যাদের নাম ছিল তাদের মধ্যে শামীম ওসমান, নজরুল ইসলাম বাবু ও গোলাম দস্তগীর গাজীর নাই বেশ শোনা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাকি দুজনকে ছাপিয়ে গোলাম দস্তগীর গাজীই পেয়ে গেলেন মন্ত্রীত্বের টিকেট।
রাজধানী লাগোয়া হওয়ায় রাজনৈতিক অঙ্গনে রাজনীতির সূতিগার হিসেবে পরিচিত নারায়ণগঞ্জ। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে মহান মুক্তিযুদ্ধে এ জেলার অবদান খাটো করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। স্বাধীনতার পর সত্তর দশকের শেষের দিকে জিয়াউর রহমানের (বিএনপি) শাসনামলে নারায়ণগঞ্জ থেকে এম এ সাত্তারকে পাটমন্ত্রী করা হয়। তিনি নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ আসনের এমপি ছিলেন। এম এ সাত্তারকে মন্ত্রী করার মধ্যে দিয়ে নারায়ণগঞ্জবাসী প্রথম মন্ত্রীত্বের স্বাদ পায়।
আশির দশকে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের (জাতীয় পাটি) শাসনামলে সোনারগাঁয়ের আ ন ম বাহাউল হককে উপ-মন্ত্রীর পদমর্যায় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান করা হয়। ফলে তখন প্রথম উপমন্ত্রীরও স্বাদ পায় নারায়ণগঞ্জবাসী।
১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর নারায়ণগঞ্জ থেকে আব্দুল মতিন চৌধুরীকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী করা হয়। মতিন চৌধুরী রূপগঞ্জ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসে। নারায়ণগঞ্জের পাঁচটি আসনেই আওয়ামীলীগের প্রার্থীরাই বিজয়ী হয়। কিন্তু নারায়ণগঞ্জবাসীর কপালে মন্ত্রী জোটেনি।২০০১ সালে আবার বিএনপি ক্ষমতায় আসে। তখন আব্দুল মতিন চৌধুরীকে পূনরায় বস্ত্রমন্ত্রী করা হয়। একই সাথে সোনারগাঁও আসন থেকে নির্বাচিত এমপি অধ্যাপক রেজাউল করিমকেও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী করা হয়।
২০০৮ সালের নির্বাচনে আবার আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসে। এরপর থেকে আওয়ামীলীগ সরকারই সবসময় সরকার গঠন করে আসছে। ২০১৪ সালের নির্বাচনে জেলার পাঁচটি আসনের মধ্যে আওয়ামীলীগ তিনটি ও তাদের শরিক জাতীয় পাটি দুটি আসনে এমপি নির্বাচিত হয়। কিন্তু এবারের মন্ত্রী সভায়ও নারায়ণগঞ্জ স্থান পায়নি। তার ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও আওয়ামীলীগ জয়লাভ করে। স্বাধীনতার পর এবারই প্রথম আওয়ামীলীগ সরকার থেকে নারায়ণগঞ্জবাসী পূর্ন মন্ত্রী পেয়ে বেশ উচ্ছসিত।