নিউজ সোনারগাঁ টুয়েন্টিফোর ডটকম: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলা সাব রেজিস্ট্রি অফিসের সাব রেজিস্টার বদলি হওয়ার পর থেকে ভোগান্তিতের পড়েছেন জমি ক্রেতা বিক্রেতারা। সোনারগাঁ উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার আনম বজলুর রশিদ মন্ডল বদলি হওয়ার পর থেকে এ অফিসে কাউকেই দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। ফলে বন্ধ রয়েছে জমি কেনা বেচা। এতে করে শুধু জমি ক্রেতা বিক্রেতাই নয়, এ সাব রেজিস্ট্রি অফিসকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছেন। বন্ধ রয়েছে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও। ফলে দীর্ঘদিন ধরে তাদের আয়ের পথ বন্ধ হয়ে আছে।
কলাপাতা রেষ্টুরেন্টের বিজ্ঞাপন
১৭১.০২ বর্গ কিলোমিটারের আয়তনের সোনারগাঁয়ে ৯টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা রয়েছে। প্রতিদিন গড়ে এ সাব রেজিস্ট্রি অফিসে দেড় থেকে ২শ দলিল তৈরি হয়। এ থেকে প্রতিদিন সরকারের একটা বিরাট অংশের রাজস্ব আদায় হয়ে থাকে। সাব রেজিস্ট্রি অফিসের সাব রেজিস্টার পুনরায় নিয়োগ না পাওয়ার কারণে গত ১৫ দিনে প্রায় ৮ কোটি টাকার রাজস্ব বঞ্চিত হয়েছে সরকার। যতদিন দিন যাচ্ছে ততোই রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
সুত্র জানায়, গত ১৭ ডিসেম্বর সোনারগাঁ উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার আনম বজলুর রশিদ মন্ডল বদলি। হওয়ার পর থেকে এ অফিসে কাউকেই দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। ফলে বন্ধ রয়েছে সোনারগাঁ সাব রেজিস্ট্রি অফিসের সকল কার্যক্রম। এর পর থেকে এ অফিসে কোন সাব রেজিস্ট্রার দায়িত্ব পালন করেননি। জমি কেনা বেচা না করতে পেরে অনেকের চিকিৎসা, মেয়ের বিয়ে খরচসহ নানা খরচ মেটাতে নানা সমস্যায় পড়েছেন।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে একজন দলিল লিখক জানান, রেজিস্ট্রার আনম বজলুর রশিদ মন্ডল নারায়ণগঞ্জ জেলার দুটি উপজেলার সাব রেজিষ্টারের দায়িত্ব পালন করতো। বদলী হওয়ার সময় রেজিস্ট্রার আনম বজলুর রশিদ মন্ডল সোনারগাঁয়ে পোষ্টিং নেয়ার জন্য এই সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের দায়িত্ব বুঝিয়ে না দিয়ে কৌশল অবলম্বন করেছে। যাতে কর্তৃপক্ষ তাকে এখানে পুর্ণবহাল করেন। এছাড়া ৩ সপ্তাহ ধরে জমি রেজিষ্ট্রি হচ্ছে না হওয়ার কারণে জমি রেজিষ্ট্রির জট লেগে যাবে সে সময় তিনি মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে জমিগুলো রেজিষ্ট্রি করে দিবেন।
সোনারগাঁ উপজেলা সাব রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লিখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শহীদ সরকার বলেন, ১৭ ডিসেম্বর তৎকালীন সাব রেজিস্টার বদলি হওয়ার পর এ অফিসে কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। ফলে দলিল সৃজন বন্ধ হয়ে আছে। প্রতিদিন গড়ে ৪৫-৬০ লাখ টাকার রাজস্ব আদায় হয়ে থাকে। দলিল সৃজন বন্ধ থাকায় সরকার মোটা অংকের রাজস্ব বঞ্চিত হয়।
কাঁচপুর ইউনিয়নের বড় চেঙ্গাইন গ্রামের আবুল হাসেম জানান, ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে মেয়ের বিয়ের দিন তারিখ ঠিক হয়ে আছে। জমি বিক্রি করে বিয়ের খরচ মেটাতে হবে। জমি রেজিস্ট্রি বন্ধ থাকায় মহা দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলাম।
সোনারগাঁ উপজেলা সাব রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লিখক বিল্লাল হোসেন বলেন, সাব-রেজিস্টার না থাকার কারনে জমি কেনা বেচা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে ক্রেতা বিক্রেতা নানা ধরনের সমস্যায় পড়েছেন। তাছাড়া মানুষ ভোগান্তিতে আছেন। সাব রেজিস্ট্রার পর্দায় করে সমস্যার সামধান জরুরি হয়ে পড়েছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা রেজিস্ট্রার মো. জামিলুর রহমান বলেন, বদলি জনিত কারনে পদটি শূন্য। এ পদে পদায়নের বিষয়টি ভূমি মন্ত্রনালয় দেখবাল করেন। সমস্যা সমাধানের জন্য দ্রুত এ পদে পদায়ন জরুরি। এ পনে দ্রুত কাউকে পদায়ন করার জন্য আমার পক্ষ থেকে চেষ্টা থাকবে।