কেউ ভেবে ছিল পৃথিবীটা এমন হয়ে যাবে। স্বাধীনচেতা মানুষগুলো অদৃশ্য এক ভাইরাসের কাছে আজ পরাধীন। নিজের ও পরিবারের সুরক্ষার জন্য ইচ্ছার বিরুদ্ধে স্বেচ্ছায় গৃহবাসী। জানালার গ্রীল ধরে দূর আকাশ পানে চেয়ে অপেক্ষার প্রহর গোনা। কবে আসবে সেই ফেলা আসা দিন। নিরাপদ, নিশ্চিন্ত জীবন। যেখানে করোনার ভয় নেই। প্রিয়জনকে জড়িয়ে ধরা যায়, হাতে হাত , কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পথ চলতে বাঁধা নেই। সবুজ ঘাসের মাঠে দল বেঁধে আড্ডায় মেতে ওঠা কিংবা চায়ের টেবিলে হাসি কান্নার গল্প বুনতে নিষেধের বালাই নেই। মানুষ কখনো পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ হতে চায় না । যদিও বা করোনা পরিস্থিতি বাধ্য করেছে কিছুটা পরাধীন হতে কিন্তু ব্যাকুল হৃদয় চার দেয়ালের গন্ডি ছেড়ে ছুটে যেতে চায় খোলা প্রান্তরে। বুক ভরে নিঃশ্বাস নিতে চায়। দেখতে চায় সবুজের সমারোহ, শুনতে চায় পাখিরদের মিষ্টি গান। মাতাল হাওয়ায় উড়িয়ে দিতে চায় হৃদয়ের রঙ্গিন ঘুড়ি। বৃষ্টির ছটায় সিক্ত হতে চায় এ তনু মন। কিন্তু চাইলেও করোনার শৃঙ্খলে বন্দি থাকার কারণে কিছুই সম্ভব হয় না। এমন যদি হতো ম্যাজিক দিয়ে পুরো পৃথিবীর করোনাকে গায়েব করে দেয়া যেত তাহলে কত ভালোই না হতো। বাস্তবতা অনেক কঠিন। জীবনটা তো ম্যাজিক নয়। তাই করোনাকে সঙ্গী করেই আমাদের বাঁচতে হবে। মানুষ আজীবন করোনার কাছে পরাধীন থাকতে পারে না। করোনা মোকাবেলা করেই আমাদের পথ চলতে হবে। বিধি নিষেধ মেনে সবাইকে কর্মচঞ্চল হয়ে উঠতে হবে। সবুজ ঘাসের মাঠ, চায়ের আড্ডা কিংবা পাখির গান শোনা, বৃষ্টিতে ভেজার স্বাদও নিতে হবে। মানুষের জীবনটাই এমন শুধু খাপ খাইয়ে নেয়া। আজ করোনার সাথে খাপ খাইয়ে চলতে হবে কাল হয়তো আরো নতুন কিছুর সাথে।যে কোন বৈরিতার সাথে নিজেকে মানিয়ে নিয়ে অনিশ্চয়তার পথে নিরন্তর ছুটে চলাই জীবন।
লেখকঃ সম্পাদক ও প্রকাশক, চারদিক
সোনারগাঁ প্রতিনিধি, দৈনিক দেশ রূপান্তর