• সন্ধ্যা ৭:৩১ মিনিট বৃহস্পতিবার
  • ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  • ঋতু : গ্রীষ্মকাল
  • ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
এই মাত্র পাওয়া খবর :
বন্দর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী মাকসুদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বউয়ের মামলা সোনারগাঁয়ে ৩ চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ ৯ প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ, ৪ জন বাতিল সোনারগাঁয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে যুবককে অপহরন করে নির্যাতনের অভিযোগ সানাউল্লাহকে ডাকাত আখ্যা দিয়ে হত্যা চেষ্টা ও ১৫ মামলার আসামী গ্রেপ্তার বন্দরে ইউএনও অফিসের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যের আত্মহত্যা সোনারগাঁয়ে ২দিন ধরে মাদ্রাসা ছাত্র নিখোঁজ সোনারগাঁয়ে দুই ব্যাক্তি আটক, ৪৯ লাখ জাল টাকা উদ্ধার অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন আজিজুল ইসলাম মুকুল সোনারগাঁয়ে ৩ চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ ১৪ জনের মনোনয়নপত্র দাখিল তাপদাহের প্রভাব পড়েছে সোনারগাঁয়ের বাজার ও মার্কেটগুলোতে মাহফুজুর রহমান কালামের নির্বাচনী প্রচারনায় নেতাকর্মীর ঢল সোনারগাঁ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভুল চিকিৎসায় নারীর মৃত্যুর অভিযোগ সোনারগাঁ থেকে বাড়ি ফেরার পথে লাশ হলেন পিতা-পুত্র তীব্র গরমের কারনে প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষনা খুলবে ২৮ এপ্রিল! অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন মাহফুজুর রহমান কালাম সোনারগাঁয়ে প্রাথমিকে অনলাইন বদলী আবেদনে অনিয়মের অভিযোগ জামপুরে ৪টি ওয়ার্ডের নেতাকর্মী নিয়ে বাবুল ওমরের নির্বাচনী প্রচারনা সভা সোনারগাঁয়ে উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মী বেচা-কেনার হিড়িক সোনারগাঁয়ে নেতাকর্মী বেচা-কেনার হিড়িক সোনারগাঁয়ে করোনা যোদ্ধাকে ডাকাত আখ্যা দিয়ে হত্যার চেষ্টা
জাতীয় অধ্যাপক প্রফেসর আলমগীর সিরাজুদ্দীন এবং কিছু কথা

জাতীয় অধ্যাপক প্রফেসর আলমগীর সিরাজুদ্দীন এবং কিছু কথা

Logo


মোঃ আবু হানিফ, ‍অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ, বান্দরবান: স্কুলে বা  কলেজে পড়ার সময় থেকেই প্রফেসর ডক্টর আলমগীর মোহাম্মদ সিরাজুদ্দীনের নাম অনেক শুনেছি। তবে সে জানাশোনা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সাবেক উপাচার্য হিসাবে । একজন জ্ঞান তাপস হিসাবে তাঁকে কীভাবে চিনেছি সে গল্পই এখানে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে স্নাতক প্রথম বর্ষে পড়ার সময় “Muslim Law” পড়াতেন শ্রদ্ধেয় শিক্ষক রিদওয়ানুল হক স্যার (Dr. Ridwanul Hoque, বর্তমানে ঢাবি আইন বিভাগের অধ্যাপক)। রিদওয়ান স্যার তখন তরুণ গবেষক। স্যার প্রচুর রেফারেন্স সহ কারে পড়াতেন। আমি এমনিতেই মফস্বলের কলেজ থেকে এসেছি তার উপর স্যারের এমন ব্যাপক রেফারেন্সে যেন খেই হারিয়ে ফেললাম। আমার আইনজীবী পিতাকে  (যার অসীম অনুপ্রেরণায় আমি চবি’র আইন বিভাগে ভর্তি হই) বলেই ফেললাম, আমার দ্বারা আইন পড়া মনে হয় হবে না। আমার বাবা সব শুনে আমাকে প্রবোধ দিলেন, “আইন বুঝে পড়ার জিনিষ। ধৈর্য দিয়ে পড়ে Basic Principles গুলি আত্মস্থ করার চেষ্টা কর।” আমি ধৈর্যের সাথে লেগে থাকার চেষ্টা করলাম।

রিদওয়ান স্যারের কথায় আবার আসা যাক। তাঁর তথ্য বহুল দ্রুত বেগে ছুটে চলা লেকচার ও হ্যান্ডআউট হতে কিছু আহরণ করার চেষ্টা করলাম। তিনি মুসলিম আইনের ‘ম্যারেজ’ চ্যাপ্টার দিয়ে শুরু করেছিলেন। এখনো মনে আছে Abdul Kadir VS Salima  মামলায় জাস্টিস মাহমুদ কর্তৃক মুসলিম বিবাহের সংজ্ঞায়ন। এতো ব্যাপক ভাবে সাবজেক্টটি পাঠদান করায় স্যারের নিকট কৃতজ্ঞ। এর ফলে অন্য যেকোনো বিষয়ের চেয়ে তখন Muslim Law এর উপরে সবচেয়ে বেশি বই আমার সংগ্রহে ছিল।

রিদওয়ান স্যার তখন ‘Shari’a Law and Society’ নামে একটি বই আমাদের সাজেস্ট করেন। বইটির লেখক আলমগীর মোহাম্মদ সিরাজুদ্দীন। বইটি তাঁর স্বতন্ত্র গবেষণাধর্মী রচনা। বইটি পড়ে লেখক সম্পর্কে উচ্চ ধারনা গড়ে উঠে। বইটিতে তিনি ভারতীয় উপমহাদেশে ইসলামিক আইনের ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক বিকাশের পাশাপাশি কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিশেষত মুসলিম পারিবারিক আইনের প্রেক্ষাপট,  বিকাশ ও সমসাময়িক অবস্থার উপরে আলোকপাত করেছেন। তিনি উক্ত গ্রন্থে রেফারেন্স হিসাবে সম্রাট আওরঙ্গজেবের উদ্যোগে প্রণীত বিশিষ্ট মুসলিম আইন সংকলন ‘ফতোয়া – ই আলমগীরী’ কে উদার ভাবে ব্যবহার করেছেন। উক্ত বইয়ে লেখক আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে উপমহাদেশে ইসলামিক পারিবারিক আইনের বিষয়ে আলোচনা করেছেন। সেথেকেই প্রফেসর আলমগীর সিরাজুদ্দীনের প্রতি আমার অন্যরকম একটা শ্রদ্ধা বোধ তৈরী হয়।

পরবর্তীতে আমার এলাকার কৃতি সন্তান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের গুনী বড় ভাই মইন ভাইয়ের (Dr. Mohammad Moin Uddin, বর্তমানে চবি আইন বিভাগের শিক্ষক) সাথে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতি’র (বেলা) একটি প্রোগ্রামে যাই। প্রফেসর সিরাজুদ্দীন সে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি ইংরেজিতে খুবই সাবলীল ও জ্ঞানদীপ্ত বক্তব্য প্রদান করেন। এ রকম একজন স্মার্ট,  প্রজ্ঞাবান ও আধুনিক মনন সম্পন্ন ব্যক্তি আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ছিলেন তা ভেবে খুব ভালো বোধ করেছিলাম। এর পর থেকে তাঁর জ্ঞানদীপ্ত উচ্চ ব্যক্তিত্বের প্রতি আমার অসীম শ্রদ্ধাবোধ সৃষ্টি হয়। এখনো তাঁর বা তাঁর বিষয়ে যেকোনো লেখা,  সাক্ষাৎকার,  প্রবন্ধ ইত্যাদি মনোযোগ দিয়ে পড়ার চেষ্টা করি।

প্রফেসর সিরাজুদ্দীন ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন থেকে ডক্টরেট ও পোস্ট ডক্টরেট সম্পন্ন করেন এবং লিংকনস ইন হতে ব্যারিস্টার এট ল’  অর্জন করেন। তিনি ২০১৭ সালে মহান একুশে পদকে ভূষিত হয়েছেন। চবি’র ইতিহাস বিভাগ হতে অবসরে যাওয়ার পরে তিনি প্রফেসর ইমিরিটাস হিসাবে নিয়োগ পান। আমার সবসময় মনে হয়েছে তাঁর দীর্ঘ অবসর জীবনে তাঁকে আরো কোন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব প্রদান করা হলে জাতি বেশি উপকৃত হতে পারত। তারপরেও জীবনের ছায়াহ্নে প্রচারবিমুখ এ মানুষটিকে ‘জাতীয় অধ্যাপক’  হিসাবে স্বীকৃতি দিয়ে সরকার তাঁকে সম্মানিত করেছেন। প্রফেসর আলমগীর মোহাম্মদ সিরাজুদ্দীন স্যারকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। সৃষ্টিকর্তা তাঁকে দীর্ঘজীবী করুন।


Logo

Website Design & Developed By MD Fahim Haque - Web Solution