নিউজ সোনারগাঁ২৪ডটকম: ঈদে ঘরমুখো মানুষের চাপ বাড়লেও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জ অংশে কোথাও কোনও যানজট নেই। মহাসড়কে কোথাও যাতে গাড়ি থামিয়ে যাত্রী উঠানামা করে যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি না হয় এবং যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে হাইওয়ে পুলিশ ও জেলা পুলিশের ১২শ’ সদস্য যৌথভাবে দায়িত্ব পালন করছে।
শনিবার সোনারগাঁয়ের কাঁচপুর থেকে মেঘনা সেতু পর্যন্ত সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় এই মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। ঈদে ঘরমুখো মানুষের চাপ রয়েছে প্রতিটি বাসস্ট্যান্ডেই। কাঁচপুর ও মদনপুর বাসস্ট্যান্ডে বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন হাজারো মানুষ। তাদের মধ্যে দূরপাল্লার যাত্রীই সবচেয়ে বেশি।
কাঁচপুর মোড়ে কথা হয় কুমিল্লাগামী বাসের জন্য অপেক্ষমাণ যাত্রী নূরুন নাহারের সঙ্গে। তিনি জানান, ‘দুই দিন আগেই বাসের টিকিট কেটেছি। বাস আমাদের বাস থেকে নেওয়ার কথা দুপুর ১টার দিকে। কিন্তু এখন দেড়টা বেজে গেছে। বাস আসেনি।’
স্টার লাইন পরিবহনের চট্টগ্রামের যাত্রী সাব্বির হোসেন দোলন বলেন, ‘বাসের টিকিট কেটেছি প্রায় ছয় দিন আগে। আধা ঘণ্টা ধরে বাসের জন্য অপেক্ষা করছি। গাড়ি ছাড়তে ঢাকা থেকে কিছুটা দেরি করেছে। তবে ঈদের সময় একটু দেরি হবে, এটাই স্বাভাবিক।’ তিশা সার্ভিসের চালক রোমান মিয়া বলেন, ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এবার যানজট নেই। মহাসড়কে দ্বিতীয় কাঁচপুর, দ্বিতীয় মেঘনা ও দ্বিতীয় মেঘনা-গোমতী সেতু নির্মাণ করার কারণে চলাচল অনেক সহজ হয়েছে। ঢাকা থেকে ছেড়ে একটানে গাড়ি নিয়ে কুমিল্লা চলে আসতে পারছি। কিন্তু সেতু হওয়ার আগে আমাদের অনেক ভোগান্তি পোহাতে হতো।’
কাঁচপুরে ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্বে নিয়োজিত ইন্সপেক্টর মো. শরফুদ্দিন জানান, ‘সিদ্ধিরগঞ্জে সাইনর্বোড থেকে কাঁচপুর সেতুর পশ্চিম পাশে আগে প্রতিনিয়তই যানজট লেগে থাকতো। কিন্তু কাঁচপুর সেতু খুলে দেওয়ায় এখন আর আগের মতো যানজট হয় না।’ তিনি আরও জানান, রোজার ঈদের চেয়ে কোরবানির ঈদে ঘরমুখো মানুষের চাপ বেশি থাকে। এছাড়া রোজার ঈদের আগের তিন দিন এবং পরের তিন দিন পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল বন্ধ থাকে। ঈদুল আজহার সময়ও পণ্যবাহী ট্রাক বন্ধ থাকলেও এবার কিন্তু মহাসড়কে পশুবাহী ট্রাক চলাচল করবে। যে কারণে ঈদের সময় মহাসড়কে চাপ বাড়বে। তবে ঈদে যানবাহনের চাপ বাড়লেও যানজটের কোনও শঙ্কা নেই।’
স্টার লাইন বাসের চট্টগ্রামের যাত্রী আহমেদ হুমায়ুন কবির জানান, ঈদুল আজহার সময় কোরবানির পশুবাহী ট্রাক মহাসড়কে চলাচল করবে। সে কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানবাহনের চাপ কয়েকগুণ বেড়ে যাবে। তবে দুটি সড়কের নারায়ণগঞ্জ অংশে রাস্তা কোনও ধরনের ভাঙাচোরা বা খানাখন্দ না থাকায় রাস্তার কারণে যানজট হওয়ার কোনও আশঙ্কা নেই বলে তিনি মনে করছেন।
শ্যামলী পরিবহনের চালক আলী আক্কাস জানান, মহাসড়কে নতুন তিনটি সেতু এবং কাঁচপুর সেতুর পূর্বপাশে ওভারপাস থেকে ওঠার সময় এবং নামার সময় যদি ট্রাফিক বা হাইওয়ে পুলিশ সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করে এবং পশুবাহী ট্রাক থামিয়ে পুলিশ বা চাঁদাবাজ চক্র চাঁদাবাজি করতে না পারে তবে ঈদের সময় যাত্রীরা স্বস্তিতে বাড়ি ফিরতে পারবে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা বসানো হয়েছে কাঁচপুর পয়েন্টে। মেঘনা সেতুর সামনে এবং পেছনেও সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের ওসি’র কার্যালয় থেকে কাঁচপুর পয়েন্টের যানজট বা যানবাহন বিকল হলে দ্রুত সরানোর নির্দেশনা দেওয়া যাচ্ছে। এছাড়া মেঘনা সেতুর পূর্বপাশে হাইওয়ে পুলিশের জন্য নির্মাণ করা হাইওয়ে পুলিশ কমান্ড অ্যান্ড মনিটরিং সেন্টার থেকে কাঁচপুর, মেঘনা ও মেঘনা-গোমতী সেতুসহ মহাসড়কের সার্বক্ষণিক নজরদারি করা হচ্ছে।