নিউ সোনারগাঁ টোয়েন্টিফোর ডটকম: সোনারগাঁ উপজেলার চৌরাস্তা এলাকা বাড়ি মসজিস গ্রামের মানুষ অব্যাহত শব্দ দূষণ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। গত কয়েকদিন ধরে কয়েকটা কিন্ডার গার্টেন এর বার্ষিক ক্রিয়া ও সংস্কৃতি অনুষ্ঠান উপলক্ষে সকাল থেকে রাত নয়টা দশটা পর্যন্ত উচ্চশব্দে মাইকের সাউন্ডের কারনে শিশু বয়োবৃদ্ধ ও অসুস্থ রোগীসহ সাধারন মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। তাদের অব্যাহত শব্দ দূষণে কারনে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে পড়লেও তাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলছে না।
জানা গেছে, সোনারগাঁ উপজেলার মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকা গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোড ও বাড়ি মজলিস গ্রামের ভিতরে দশ-বারোটি কিন্টারগার্ডেন গড়ে উঠেছে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী এসব কিন্ডারগার্টেনে শিশুদের জন্য খেলাধুলার মাঠ থাকা বাধ্যতামূলক থাকলেও সরকারি নিয়মনীতি অমান্য করে আগাছার মত গড়ে ওঠা এ কিন্ডারগার্টেনগুলো শিক্ষা ব্যবস্থা পরিচালনা করছেন। এসব কিন্ডারগার্টেনগুলো কোন খেলার মাঠ না থাকায় হাবিবপুর গোরস্থানের পিছনে একটি ফাঁকা জায়গায় অস্থায়ীভাবে মঞ্চ বানিয়ে তাদের বা বার্ষিক ক্রীড়া ও সংস্কৃতি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেজন্য একেকটি কিন্ডারগার্টেন টানা দুই থেকে তিনদিন উচ্চস্বরে মাইক বাজিয়ে তাদের অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। এভাবে ১০-১২ টি কিন্ডারগার্ডেন প্রায় ১৫-২০ দিন ধরে অস্থায়ী মঞ্চ বানিয়ে ছেলে মেয়েদের খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চালিয়ে যান। তাদের মঞ্চে লাগানো উচ্চশব্দে অসুস্থ হয়ে পড়ে বাড়ি মসজিস গ্রামের বয়োবৃদ্ধ শিশু অসুস্থ রোগীরা। উচ্চশব্দের কারণে তারা আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। অনেকে মৌখিকভাবে উচ্চস্বরে মাইক বাজানো নিষেধ করলেও তারা কাউকে পরোয়া না করে নিজের ইচ্ছা মত সকাল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত গান-বাজনা বাজান। এব্যাপারে বাড়ি মজলিসের বাসিন্দার প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
মাঠের পাশে থাকা এক ভাড়াটিয়া জানান, গত জানুয়ারি মাস থেকে মাঠটিতে কয়েকটি স্থানীয় কিন্ডারগার্ডেনের শিক্ষকরা তাদের শিক্ষার্থী নিয়ে বার্ষিক ক্রীড়া ও সংস্কৃতি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আসছেন। আশেপাশে কোন মাঠ না থাকায় তারা মাঠে তাদের স্কুলের খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান কররে এটা দোষের কিছু না কিন্তু সকাল থেকে রাত থেকে রাত নয়টা দশটা পর্যন্ত উচ্চ শব্দে মাইক বাজানোর কারণে শিশুরা ঘরে ঘুমাতে পারে না, পরীক্ষার্থীরা পড়তে পারছেনা, অসুস্থ ও বয়োবৃদ্ধরা উচ্চ শব্দের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। তাদেরকে স্থানীয়রা একাধিকবার উচ্চশব্দে মাইক বাজানো নিষেধ করলেও তারা কোন কর্ণপাত করে না। এ কারনে বাড়ি মজলিস গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে অধ্যক্ষ জানান, আমাদের নিয়ম অনুযায়ী প্রত্যেকটা কিন্ডারগার্টেনে শিশুদের খেলার জন্য একটি মাঠ বাধ্যতামূলক থাকলেও আমাদের তা নেই। বাধ্য হয়ে আমরা এই মাঠটি ব্যবহার করছি। তবে আশেপাশে বিল্ডিং থাকায় মাইকের বিকট শব্দে কিছুটা সমস্যা হয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রকিবুর রহমান খান বলেন, শব্দ দূষণের ব্যাপারে আমি ছাড় দিতে রাজি না। এটা খুবই বিরক্তকর একটা জিনিস। শব্দ দূষণের কারণে আশেপাশে কয়েক হাজার মানুষের সমস্যা হয়। যারা শব্দ ব্যবহার করে তারা করুক তাতে আমাদদের কোন সমস্যা নেই। কিন্তু আমার কথা হলো যারা শব্দ ব্যবহার করেন তারা করুক কোন সমস্যা নাই কিন্তু অন্য মানুষের কথা চিন্তা করে তারা যেন যে ওই স্থানটিতে তা সীমাবদ্ধ রাখেন। এছাড়া আমি প্রত্যেক জনপ্রতিনিধিকে শব্দ দূষনের ব্যাপারে আন্তরিক হওয়ার আহবান জানিয়েছি। এছাড়া আমি প্রত্যেক মসজিদ মাদ্রাসা গুলোতে চিঠি পাঠাবো যাতে তারা শব্দটা নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে রেখে ওয়াজ মাহফিল অথবা অন্যান্য অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করেন।