নিউজ সোনারগাঁ২৪ডটকম:

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসতে ততই যেন টেনশন বাড়ছে সোনারগাঁ উপজেলার বিভিন্ন দলের কর্মী সমর্থদের মধ্যে। নির্বাচন হবে নাকি আগের মতো অনির্বাচিত সংসদ হবে। নির্বাচন হলে আওয়ামীলীগ থেকে কে মনোনয়ন পাবে নাকি গত বারের মতো জাতীয়পার্টিকে এ আসন ছেড়ে দিবে। অপরদিকে বিএনপি নির্বাচনে আসবে নাকি আসবেনা আসলে সোনারগাঁ থেকে কাকে মনোনয়ন দিবে এ নিয়ে চলছে আওয়ামীলীগ ও বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে উৎকন্ঠা।কে নিয়ে আসতে পারেন দলের মনোনয়ন এ নিয়েও চলছে হিসাব-নিকাশ।

সুত্র জানায়, আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সোনারগাঁ থেকে আওয়ামীলীগের রয়েছে একাধিক প্রার্থী। এর মধ্যে সাবেক সংসদ আবদুল্লাহ আল কায়সার যিনি ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৮২ হাজার ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হয়েছিলেন এবং গতবার মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছিলেন, মোশারফ হোসেন যিনি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছিলেন, উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালাম যিনি সাংগঠনিক ভাবে সবার চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন, ডাঃ আবু জাফর চৌধুরী বিরু যিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন-সম্পাদক ও বাংলাদেশ স্বাধীনতা চিকিৎসা পরিষদের (স্বাচিপ) সাংগঠিক সম্পাদক, এএইচএম মাসুদ দুলাল যিনি কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের উপ-কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক।

অপরদিকে, বিএনপিতে রয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রনালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী রেজাউল করিম যিনি সোনারগাঁ থেকে তিনবার নির্বাচিত এমপি হয়েছেন, আজহারুল ইসলাম মান্নান যিনি কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য থানা বিএনপির সেক্রেটারী ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ওয়াহিত ইমতিয়াজ বকুল যিনি কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক।

এদিকে জাতীয়পার্টি থেকে রয়েছেন বর্তমান সংসদ লিয়াকত হোসেন খোকা ও অন্যান্য হোসাইন মৌসুমী যিনি কেন্দ্রীয় জাতীয় মহিলা পার্টির সাধারণ সম্পাদক।

আগামী একাদশ জাতীয় নির্বাচনে ৩টি দল থেকে একাধিক প্রার্থী মনোনয়নের জন্য কেন্দ্রে দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন। এদিকে, মনোনয়ন পাওয়ার আশার সারা বছর জুড়ে সকল দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা তাদের নেতাকর্মী নিয়ে মাঠে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মসূচী পালন করেছেন। এ কর্মসূচী পালন করতে গিয়ে দেখা নেতাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগ ও উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতারা সোনারগাঁ থেকে নৌকার মনোনয়নের জন্য কেন্দ্রীয় নেতাদের অনুরোধ করেছেন। এ আসনটি গতবার জাতীয়পার্টির জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। এবার যাতে এ আসনটি আওয়ামীলীগের হাত ছাড়া না হয় সেজন্য নেতারা কেন্দ্রে জোড় লবিং শুরু করেছেন। নেতাদের লবিংয়ের পরও মনে শান্তি পাচ্ছেন না তাদের কর্মী সমর্থকরা। নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে তাদের উৎকণ্ঠা ততই যেন বাড়ছে। সোনারগাঁ আসনটি মহাজোট আওয়ামীলীগকে দিবে না গত বারের মতো জাতীয়পার্টিকে ছেড়ে দিবে। এ নিয়ে চলছে সংশয়। তবে কিছুদিন আগেও এ আসনটি গতবারের মতো জাতীয়পার্টিকে ছেড়ে দিবে বলে চাউল হলেও দিন যত ঘনিয়ে আসছে জাতীয়পার্টির আশাও ক্ষীন হচ্ছে। এছাড়া জাতীয়পার্টি থেকে একমাত্র লিয়াকত হোসেন খোকা একা লাঙ্গলের দাবিদার হলেও এরশাদের কন্যা অন্যন্যা হোসাইন মৌসুমীও দাবি করছেন। তিনি নাকি এরশাদের সবুজ সংকেত নিয়েই মাঠে কাজ করছেন। দু’জন দাবি দারের কারণে হয়তো এবার এ আসনটি জাতীয়পার্টির হাতছাড়া হতে পারে।

এছাড়া আওয়ামীলীগ থেকে সাবেক এমপি কায়সার হাসনাত জনসমর্থনের দিক দিয়ে এগিয়ে রয়েছেন বলে দাবি করেছেন তার কর্মীরা। তারা জানান, নৌকার মনোনয়ন যদি সোনারগাঁয়ে কেউ পায় তা পাবে কায়সার হাসনাত। মোশারফ হোসেনের কর্মীরা দাবি করেন গতবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাকে মনোনয়ন দিয়েছিলো দল। শেখ হাসিনার নির্দেশে মোশারফ হোসেন তার মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করেছেন। নেত্রী ওই সময় কথা দিয়েছিলেন তাকে পরবর্তিতে মুল্যায়ন করবে। সে হিসেবে তারকর্মীরা দাবি করে কায়সার হাসনাত না পেলে হাসনাত পরিবার থেকে মোশারফ হোসেন মনোনয়ন পাবে। মাহফুজুর রহমান কালামের নেতাদের দাবি কালাম একজন দক্ষ সংগঠক। দীর্ঘদিন দলকে আকড়ে ধরে রেখেছেন। নৌকার মনোনয়ন দিলে তাকে দিবে দল। এএইচএম মাসুদ দুলাল যিনি কেন্দ্রীয় নেতা হিসেবে পরিচিত। এছাড়া এবার তরুদের মধ্যে তাকে নিয়ে বেশ আলোচনা হয়েছে। তার কর্মীদের দাবি মনোনয়ন যদি কাউকে দেওয়া হয় তাহলে তরুন স্বচ্ছ রাজনীতিবিদ হিসেবে এএইচএম দুলাল মাসুদ যোগ্য। তবে, এ দলে একাধিক প্রার্থী থাকার কারণে অভ্যন্তরিন কোন্দলের কারণে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেলেও নিজেদের কোন্দলের কারণে পরাজিত হতে পারে এ শংকায় জাতীয়ার্টিকেও এ আসনটি গতবারের মতো ছাড় দিতে পাওে মহাজোট।

আওয়ামীলীগ নেতাদের দাবি গতবার এ আসন থেকে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন না দেওয়ায় দল সাংগঠনিক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে। এবারও যদি এখান থেকে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন বঞ্চিত হয় তাহলে সোনারগাঁ থেকে সংগঠনিক ভাবে আওয়ামীলীগের মেরুদন্ডহীন হয়ে পড়বে।

জাতীয়পার্টির দাবি লিয়াকত হোসেন খোকা সোনারগাঁয়ে ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন এছাড়া মহাজোট হলে এ আসনটি জাতীয়পার্টিকে ছাড় দিতে হবে।
থানা বিএনপির দাবি খালেদা জিয়ার মুক্তি না হলে বিএনপি নির্বাচন করবেনা। তবে, নির্বাচনে বিএনপি অংশ গ্রহন করলে জনপ্রিয়তার দিক থেকে রেজাউল করিমই মনোনয়ন পাবে। অপরদিকে, মান্নান পন্থিদের দাবি তার নেতার ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। তিনি আওয়ামীলীগের আমলে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হয়েছেন। এছাড়া দলের দুঃসময়ে আন্দোলন সংগ্রম হামলা হামলায় নেতাকর্মীদের পাশে ছিলেন। ফলে নির্বাচনে বিএনপি অংশ গ্রহন করলে মান্নানই মনোনয়ন পাবে। এছাড়া ওয়াহিদ বিন ইমতিয়াজ একজন ক্লিন ইেেমজের ব্যক্তি তার সাথে দলের কারো কোন্দল নেই। তাকে মনোনয়ন দিলে বিএনপির সকল নেতাকর্মীরা একত্রে কাজ করে বিএনপিকে জয়যুক্ত করবে।