নিউজ সোনারগাঁ২৪ডটকম:
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৩ সোনারগাঁ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন সাবেক এমপি আবদুল্লাহ আল কায়সার। তিনি সিংহ মার্কা নিয়ে ইতিমধ্যে মাঠে গণসংযোগ ও প্রচার-প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন। আবদুল্লাহ আল কায়সার আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতিকে মনোনয়ন না পাওয়ায় তিনি আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। কায়সার হাসনাতের স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া নিয়ে দল ও দলের বাহিরে চলছে নানান আলোচনা সমালোচনা। এদিকে কায়সার স্বতন্ত্র প্রার্থী নিয়ে বিপাকে পড়েছেন সোনারগাঁয়ে মহাজোটের শরিক দল আওয়ামীলীগ। কেন্দ্রীয় নির্দেশ অমান্য করে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে মাঠ কামড়ে ধরেছেন সাবেক এমপি কায়সার হাসনাত।
জানাগেছে, ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন সাবেক প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক রেজাউল করিমকে ৮২ হাজার ভোটের ব্যবধানে সোনারগাঁ আসনে ২৩ বছর পর আওয়ামীলীগের জয় এনে দেন কায়সার হাসনাত। এরপর ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে কায়সারকে মনোনয়ন না দিয়ে তার চাচা মোশারফ হোসেনকে মনোনয়ন দেন আওয়ামীলীগ। অপরদিকে জাতীয়পার্টি থেকে মনোনয়ন পান জাতীয়পার্টির যুগ্ম-মহাসচিব লিয়াকত হোসেন খোকা। সেই সময় দলের নির্দেশে মোশারফ হোসেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিলে বিনা ভোটে এমপি নির্বাচত হন লিয়াকত হোসেন খোকা। তিনি নির্বাচিত হওয়ার পর ৫ বছরে আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের সাথে সুসর্ম্পক গড়ে তুলতে ব্যর্থ হন। ফলে এ আসনে লাঙ্গলের পবির্ততে নৌকার মনোনয়নের জন্য মাঠ চষে বেড়ান কায়সার হাসনাতসহ আরো ৮জন। জেলা নেতৃবৃন্দসহ কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের কাছে এ আসনটিকে মহাজোটকে না দেওয়ার জন্য অনুরোধ করে। নেতাদের অনুরোধ রক্ষা না করে কেন্দ্র থেকে আবারও মহাজোটের প্রার্থী লিয়াকত হোসেন খোকাকে এ আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয়। তাকে মনোনয়ন দেওয়ার পর অন্যান্য মনোনয়ন প্রত্যাশী মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করে নিলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন কায়সার হাসনাত ও তার চাচা মোশারফ হোসেন। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে তার চাচা মোশারফ হোসেনের অবৈধ ঘোষনা করেন জেলা রিটানিং কর্মকর্তা। এদিকে গত ৯ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন হলেও মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার না করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন সাবেক এমপি কায়সার হাসনাত।
এদিকে তার স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার পর তিনি সিংহ মার্কা নিয়ে মাঠে প্রচার-প্রচারনা ও গণসংযোগ করতে থাকেন। ১০ তারিখে প্রতিক বরাদ্ধের পর বিকাল বেলা মোগরাপাড়া চৌরাস্তা আওয়ামীলীগ কার্যালয়ের সামনে এক জনসভা করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ঘোষনা দেন তিনি। সেখানে তিনি বলেন, আমি আওয়ামীলীগের মনোনয়ন চেয়ে ছিলাম কিন্তু দলে আমাকে মনোনয়ন দেয়নি। তাই আমি আমার সোনারগাঁয়ের তৃনমুল আওয়ামীলীগকে বাঁচাতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সিংহ মার্কা নিয়ে নির্বাচন করবো। এরপর কেন্দীয় আওয়ামীলীগ সংবাদ সম্মেলন করে দেশের সকল বিদ্রোহী প্রার্থীদের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করার ঘোষনা দিলেও তিরি প্রত্যাহার না করে গণসংযোগ চালিয়ে যাবেন বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। গত ১২ ডিসেম্বর সোনারগাঁ রয়েল রির্সোটে উপজেলা আওয়ামীলীগে উদ্যোগে আয়োজিত মহাজোট প্রার্থীকে সমর্থন দেয়া অনুষ্ঠানে কায়সার হাসনাতকে ডাকেন জেলার নেতৃবৃন্দ। তাদের ডাকেও সারা দেননি কায়সার হাসনাত।
গতকাল রবিবার জাতীয় বিজয় দিবস উপলক্ষে উপজেলা আওয়ামীলীগের উদ্যোগে আয়োজিত বিজয় র্যালী অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি শামীম ওসমান বলেন, কায়সার আমার ভাতিজা, সে আমার একজন কর্মীও। আমি বলে গেলাম সেও আমাদের মতো এক মঞ্চে এসে লাঙ্গলের পক্ষে ভোট চাইবেন। নয়তো তিনি বহিস্কার হবেন। এছাড়া সোমবার (১৭ ডিসেম্বর) সকালে সড়ক ও সেতুমন্ত্রী মেঘনা ২য় সেতু পরিদর্শনে এসে জানান, আগামীকাল মঙ্গলবারের মধ্যে দেশের সকল বিদ্রাহী প্রার্থীদের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করতে হবে নয়তো তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমতাবস্থায় নির্বাচনী মাঠে থাকবেন নাকি সরে যাবেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি নিউজ সোনারগাঁকে জানান আমি তৃনমুল আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের বাঁচাতে নির্বাচন করতে এসেছি এমপি হতে আসি নাই। আমি নির্বাচনী মাঠে আছি আগামী ৩০ পর্যন্ত মাঠে থেকে জয় নিয়ে এ আসনটি শেখ হাসিনাকে উপহার দিবো।