নিউজ সোনারগাঁ২৪ডটকম:
গণতান্ত্রিক সরকার উৎখাত ও বিস্ফোরক দিয়ে সরকারী দফতর ও গুরুত্বপূর্ন স্থাপনা হামলার অভিযোগে সোনারগাঁ থানা পুলিশের দায়ের করা একের পর এক মামলায় গ্রেফতারের ভয়ে গৃহ ও পরিবার ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে সোনারগাঁ থানা বিএনপির নেতাকর্মীরা। অনেক নেতাকর্মীরা আবার মামলার আসামী না হয়েও গ্রেফতার আতংকে বাড়ীঘর, পরিবার পরিজন ছেড়ে যাযাবর জীবন যাপন করছেন।
আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সোনারগাঁ উপজেলায় বিএনপির একাধিক প্রার্থী মনোনয়নের জন্য দোড়ঝাপ শুরু করে ছিলেন। এর মধ্যে কেউ মাঠে কেউ কোর্টে কেউ বাড়িতে বসে মাঠ গুছাচ্ছিলেন। অনেকে আবার মাঠে না থেকেও কেন্দ্র গিয়ে ধরনা দিচ্ছেন মনোনয়নের জন্য। সরকারের শেষ সময়ে এসে কেন্দ্রীয় বিএনপির নেতারা খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আন্দোলন করলেও অনেকে আবার আন্দোলনের নামে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতিও নিচ্ছেন। এদিকে কেন্দ্রীয় বিএনপির খালেদা জিয়াকে না মুুক্তি না দিলে নির্বাচনে আসবেনা বলেও ঘোষনা দিয়েছেন। তারপরও থানা পর্যায়ে নেতারা মনোনয়নের জন্য মাঠে কাজ করে যাচ্ছেন। এদিকে নির্বাচনের বছর এসে সোনারগাঁয়ে সাবেক প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক রেজাউল করিম, সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম মান্নান, থানা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু জাফর, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক ওয়াহিত বির ইমতিয়াজ বকুল, যুব উন্নয়ননের সাবেক পরিচালক অলিউর রহমান আপেল মনোনয়নের জন্য মাঠে দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন। এর মধ্যে আজহারুল ইসলাম মান্নান ও ওয়াহিদ বিন ইমতিয়াজ বকুল নির্বাচনী মাঠে কাজ করলেও বাকি কাউকে বছর জুড়ে দেখা যায়নি।
এদিকে. নির্বাচনের বছরে যখন থানা বিএনপির নেতারা মাঠ গুছাতে ব্যস্ত ঠিক সেই মুর্হুতে একের পর এক মামলায় জজ্জরিত হয়ে নির্বাচনী মাঠ থেকে ছিটকে পড়েছেন। চলতি বছরের ফেব্রয়ারী মাসে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা সালাউদ্দিন সালুর নেতৃত্বে কাঁচপুর মহাসড়কে বিক্ষোভ মিছিল করে বিএনপির নেতাকর্মীরা সেই মিছিলকে কেন্দ্র করে পৌর কাউন্সিলরসহ বিএনপি ১০ নেতাকর্মীকে আটক করে পুলিশ। এরপর নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সহ আরো কয়েকজন নেতাকর্মীকে আটক করে কয়েকশত নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর মাঠ থেকে ছিটকে পড়ে থানা বিএনপি। এর রেশ কাটতে না কাটতে গত সপ্তাহে কাঁচপুর ইউনিয়ন বিএনপির কার্যালয়ে গোপন মিটিং করার সময় সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম সজিবসহ থানা বিএনপির সভাপতিসহ ৩৩ জনের বিরুদ্ধে একটি বিস্ফোরক মামলা দায়ের করে সোনারগাঁ থানা পুলিশ।
এছাড়া গত সোমবার সাদিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সেলিমকে আটকের ৪৪ জন নেতাকর্মীর নামে মামলা করে পুলিশ। অপরদিকে, গতকাল বুধবার বারদী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান আজগর আলীকে তার ব্যবসা প্রতিষ্টান থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয় তিনি সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের সাথে তিনি জড়িত।সে ঘটনায়ও পুলিশ বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।
এদিকে, মামলার ভয়ে কেন্দ্রীয় বিএনপির কোন কর্মসূচী পালন করতে দেখা যাচ্ছে না থানা বিএনপিকে। অনেক নেতারা আবার গোপনে ঢাকায় গিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে গোপনে আন্দোলনে শরিক হচ্ছেন। নির্বাচনকে সামনে রেখে একের পর মামলায় কোনঠাসা হয়ে পড়ছে থানা বিএনপির নেতাকর্মী ও তৃনমুল নেতারা। মামলায় গ্রেফতার ও গ্রেফতার করে নতুন কোন মামলা জড়িয়ে দেওয়ার ভয়ে এলাকা ছাড়ছে নেতাকর্মীরা। ফলে সোনারগাঁয়ে ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার কয়েক হাজার নেতাকর্মী বাড়িঘর পরিবার পরিজন ও ছেলে মেয়ে ছেড়ে যাযাবর জীবন যাপন করছে বলে জানিয়েছেন থানা বিএনপির নেতাকর্মীরা।