নিউজ সোনারগাঁ টুয়েন্টিফোর ডটকম: মুল কমিটির বেশীর ভাগ ছাত্রলীগ পদধারী ছাত্রলীগ করার বয়স তো নেই বললেই চলে যাদের বেশীর ভাগই বিয়ে সাদি করে ১/২ পিতার জনক আবার মুল কমিটির মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হলেও এখনও শেষ করতে পারেননি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটি। তারপরও এরা সোনারগাঁ উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটিতে বহাল। আত্মীয় করণ ও অদৃশ্য শক্তির বলে তারা শত অভিযোগ মাথায় নিয়েও বহাল তবিয়তে রয়েছেন ছাত্রলীগের মতো ঐতিহ্যবাহি একটি সংগঠন। তবে, চলতি মাসের ২০ তারিখে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ এনে উপজেলা কমিটির সকল কার্যক্রম স্থগিত করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সেই সাথে অর্থের বিনিময়ে বিএনপি জামায়েতের নেতাদের ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করার অভিযোগ এনে সাদিপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কমিটিও বিলুপ্ত করা হয়েছে।
২০১৫ সালে শুরুর দিকে হাসান রাশেদকে সভাপতি এবং রাসেল মাহমুদকে সাধারণ সম্পাদক করে ১বছরের জন্য কমিটি অনুমোদন দেয় জেলা ছাত্রলীগ। যা মেয়াদ শেষ হবার অনেক পর ২০১৭ সালের শেষে অক্টোবরে এসে কমিটি পূর্নাঙ্গ করা হয় যা আবার পূনরায় ১বছরের জন্য অনুমোদন দেয় জেলা ছাত্রলীগ। সেই কমিটির মেয়াদ যা ২০১৮ সালেই শেষ হয়ে যায়। শুধু তাই নয় সভাপতি হাসান রাশেদ বয়সসীমা এবং সকল নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে দায়িত্ব পালন করছেন।
এছাড়া হাসান রাশেদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বালু ভরাট ব্যবসা নিয়ন্ত্রন, টেন্ডার ও কমিটি গঠন করতে অর্থ বানিজ্যে জড়িয়ে পড়েন। সবচেয়ে বড় আশ্চর্যের বিষয় হলো হাসান রাসেদ জীবনে কখনো রাজনীতি করনেনি। তার বড় ভাই রাসেল দীর্ঘদিন ছাত্রলীগের রাজনীতি করেছেন যিনি বর্তমানে ইটালীতে বসবাস করেছেন। হাসান রাসেদ হুট করে এসে সাবেক এমপি কায়সার হাসনাতের সাথে কয়েকটি ফেস্টুন ব্যানার ছাপিয়ে ৩ মাসের মধ্যে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি বনে যান। যা নিয়ে সোনারগাঁ ছাত্রলীগের ইতিহাসে আলাউদ্দিনের চেরাগের মতো। হাসান রাশেদ বর্তমান বয়স চল্লিশোর্ধ্য হওয়ার পর বিয়ে করেও তিনি ছাত্রলীগের সভাপতি। এছাড়া তার মুল কমিটির অন্যান্য গুরুত্বপূর্ন সহ-সভাপতি মাহফুজুর রহমান মিঠু, রুবেল আহমেদ, সোহেল রানা, শাওন চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক সজিব আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিল্লাল, সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদ রানা, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মোঃ আনিস, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক সাগরসহ আরো অনেক নেতাই বিয়ে করে ১/২ ছেলে-মেয়ের পিতা হয়েছেন। যার কারনে নতুনরা ছাত্রলীগে আসতে নিরুৎসাহিত হচ্ছে এবং ছাত্রলীগ হচ্ছে আদর্শগত দিক থেকে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।
১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজ হাতে গড়ে তোলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। বাঙ্গালীর প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে ঐতিহ্যবাহি ছাত্রলীগের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। এই সংগঠনটির যে নিয়ম নীতি রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হল নিয়মিত ছাত্র, অবিবাহিত এবং বয়সসীমা ২৯ এরমধ্যে হতে হবে। কিন্তু তার কোনটাই নেই নারায়ণগঞ্জ জেলার আওতাধীন সোনারগাঁ উপজেলা ছাত্রলীগের।
এ ব্যাপারে সোনারগাঁ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাসেল মাহমুদ জানান, ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে এক বছরের জন্য উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি করা হয়েছিল। এ কমিটির সভাপতি সাধারণ সম্পাদক দুজনই বিবাহিত। তাদের বিরুদ্ধে অর্থের বিনিময়ে ছাত্রদল, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি ও স্থানীয় জাতীয় পার্টির নেতাদের সঙ্গে সখ্যতা রাখার অভিযোগ রয়েছে। কেন্দ্র ঘোষিত কোনো কার্যক্রমে তারা অংশগ্রহণ করেনি। অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে সোনারগাঁ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হাসান রাশেদ বলেন, আমরা অর্থের বিনিময়ে কোনো নেতা নির্বাচিত করিনি। কেন্দ্রঘোষিত সকল কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেছি। কেন্দ্র থেকে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে আমরা সে সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছি।
এব্যাপারে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হাসান রাশেদকে নিউজ সোনারগাঁ টুয়েন্টিফোর ডটকমের পক্ষ থেকে ৬টি প্রশ্ন করে একটি ম্যাসেজ করা হয়। যার উত্তর তিনি দেননি। প্রশ্নগুলো হলো, হাসান সাহেব, উপজেলা ছাত্রলীগ মানে আপনি বালু ভরাট, টেন্ডার ও অর্থের বিনিময়ে কমিটি দিয়েছেন ২। কেন্দ্রের কর্মসুচিতে পালনে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার কতোটুকু সতস্য ৩। আপনার বয়স চল্লিশোর্ধ্য, আপনি বিবাহিত আপনি কি এ পদে থাকার যোগ্যতা রাখেন কিনা? ৪। অর্থের বিনিময়ে বিএনপি জামায়েত ও ছাত্রদলের নেতাদের পদ পদবী দিয়েছেন ৫। আপনার মুল কমিটির বেশীর ভাগ সদস্য বিবাহিত এ ব্যাপারে আপনার বক্তব্য কি? ৬। এ মুর্হতে কমিটি ছাড়ার সিদ্বান্ত নিয়েছেন কিনা।