নিউজ সোনারগঁ২৪ডটকম:
সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেনের হাতে সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকা তুলে দিয়েছেন আওয়ামীলীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা। গত দুটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাদের মনোনয়ন বঞ্চিত করে এবার হাসনাত পরিবারের মান রাখতে হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে উপজেলা পরিষদের নৌকার টিকেট। পরপর দুটি নির্বাচনে মনোনয়ন বঞ্চিত করার পর এবার জয়ের মাধ্যমে নির্ভর করছে আগামী দিনের হাসনাত পরিবারের ভবিষ্যত।
জানা গেছে, স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভায় দলীয় প্রার্থী হিসেবে মোশারফ হোসেনের নাম চূড়ান্ত করা হয়। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বৈঠকে আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ওবায়দুল কাদের, কাজী জাফরুল্লাহ, কর্নেল (অব.) মুহম্মদ ফারুক খান, আবদুর রাজ্জাক, রশিদুল আলম, মাহবুব উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, আবদুস সোবহান গোলাপ উপস্থিত ছিলেন।
দলীয় সুত্রে, ২০১৪ সালে নির্বাচনে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কায়সার হাসনাতকে মনোনয়ন বঞ্চিত করে সোনারগাঁ আসন থেকে নৌকার মনোনয়ন দেয়া হয় মোশারফ হোসেনকে। সে সময় মনোনয়ন পেয়ে মোশারফ হোসেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এর এ আসনটি জাতীয়পার্টিকে ছেড়ে দেওয়ায় জাতীয়পার্টির যুগ্ন-মহাসচিব লিয়াকত হোসেন খোকা বিনা ভোটে এমপি নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে সাবেক এমপি কায়সার হাসনাত ও তার চাচা মোশারফ হোসেন দলীয় মনোনয়নের জন্য দৌড়ঝাপ করেন। কিন্তু এবারও এ আসটি মহাজোটকে ছেড়ে দেয়ায় মনোনয়ন বঞ্চিত হন চাচা-ভাতিজা। মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন কায়সার হাসনাত। অবশেষে তিনি প্রশাসনের চাপের মূখে নির্বাচন থেকে সরে দাড়ান। ফলে এ আসনে এমপি নির্বাচিত হন লিয়াকত হোসেন খোকা। সে নির্বাচনে হাসনাত পরিবার থেকে মনোনয়ন না পাওয়া ও কায়সার হাসনাতকে জোড় করে নির্বাচন থেকে সরে দাড়ানোটাকে স্বাভাবিক ভাবে মেনে নিতে পারিনি হাসনাত সমর্থকরা। সে নির্বাচনে তাদের পরিবার থেকে মনোনয়ন বঞ্চিত করার পর হাসনাত পরিবারের আওয়ামীলীগের রাজনীতি কিছুটা হুমকির মূখে পড়ে।
সংসদ নির্বাচনে পর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকেন উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডভোকেট সামসুল ইসলাম ভুইয়া, সাধারণ সম্পাদকত মাহফুজুর রহমান কালাম, মোশারফ হোসেন ও এফসিসিআই এর পরিচালক জাহাঙ্গীর হোসেন। তবে, সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে আওয়ামীলীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা মোশারফ হোসেনের হাতে নৌকা তুলে দেন।
এদিকে, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়ন মোশারফ হোসেন হাতে নৌকা প্রতিক দিয়ে অনেকটা চ্যালেঞ্জের মূখে ঠেলে দিয়েছেন হাসনাত পরিবারকে। সংসদ নির্বাচনের মতোি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন তালিকায় ছিলেন। অপরদিকে, বর্তমান এমপি লিয়াকত হোসেন খোকার বিপরিতে সংসদ নির্বাচনে অংশ গ্রহন করেন হাসনাত পরিবার। এছাড়া কায়সার হাসনাত যখন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ নির্বাচনে অংশ গ্রহন করেন তখন তিনি আওয়ামীলীগের কোন নেতাকর্মীকে ডাকেননি। তিনি একা সিদ্ধান্ত নিয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করেছিলেন। যার ফলে শেষ পর্যন্ত তাকে নির্বাচন থেকে সরে যেতে বাধ্য হতে হয়েছে।
এদিকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে হাসনাত পরিবারকে নৌকা প্রতিক তুলে দেওয়ার পর তাদের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে আনন্দ বিরাজ করলেও বিষাদ লেগেছে আওয়ামীলীগের বড় একটি অংশে যারা সোনারগাঁ আওয়ামীলীগকে নেতৃত্ব দেন। তারা যদি এ নির্বাচনেও হাসনাত পরিবারকে সমর্থন না দিয়ে অন্য কাউকে সমর্থন দেন তাহলে মোশারফ হোসেনের জয়ও অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে। ফলে নৌকা পেয়েও এখন ঝুকি মুক্ত হতে পারেনি হাসনাত পরিবার। এবার যদি কোন কারনে নৌকা প্রতিকের জয় নিশ্চিত করতে না পারেন তাহলে ভবিষ্যতে তাদের পরিবার আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে ঝুঁকিতে পড়বে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।