নিউজ সোনারগাঁ টুয়েন্টিফোর ডটকম: সোমবার সকালে শোক র‌্যালী ও উপজেলা চত্বরে নির্মিত বঙ্গবন্ধ প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন উপজেলা আওয়ামীলীগের আহবায়ক কমিটি। শোকাহত মাসটির শেষদিনে শতাধিক গাড়ী ও মোটর শোভাযাত্রার মাধ্যমে উপজেলা প্রাঙ্গণে শোক র‌্যালীটির আয়োজন করা হয়। এতে উপজেলা আহবায়ক কমিটির আহবায়ক এডভোকেট সামসুল ইসলাম ভুইয়ার সভাপতিত্বে শোক র‌্যালী ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এডেেভাকেট আবু হাসনাত শহীদ বাদল। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন-আহবায়ক ও পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও আহবায়ক কমিটির সদস্য মাহমুদা আক্তার ফেন্সী, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাবেক সভাপতি নেকবর হোসেন নাহিদ, ঢাকা কলেজের সাবেক ভিপি ও আওয়ামীলীগের উপ-কমটির সহ-সম্পাদক ছগির আহম্মেদ, জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা সোহাগ রনি, উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সাধারণ আবু সাঈদ, ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদ হাসান বাবু, আওয়ামীলীগ নেতা আক্তার হোসেন, শাহাবুদ্দিন প্রধান, মাসুম বিল্লাহ, আবু হানিফা, আলমচাঁন, আনোয়ার হোসেন, লুৎফর রহমান, কবির আহম্মেদ, শ্রমিকলীগ তাজুল ইসলাম, রিয়াদ হোসেন প্রমুখ।

উপজেলা আওয়ামীলীগের কয়েকশত নেতাকর্মী নিয়ে শোক র‌্যালী ও শ্রদ্ধা নিবেদন অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহন করলেও দেখা যাইনি আহবায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য ডা: আবু জাফর চৌধুরী বিরুকে। আহবায়ক কমিটির সকল অনুষ্ঠানে ডাঃ বিরু তার নেতাকর্মীদের স্বতর্ফুত অংশ গ্রহন থাকলেও এই প্রথম ডাঃ বিরু কোন অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহন করতে দেখা যায়নি। তার অনুপস্থিতিতে দলে চলতে আলোচনা সমালোচনা।

শোক র‌্যালীতে আসা নেতাকর্মীরা জানান, ডাক্তার বিরুদ্ধে আহবায়ক কমিটির সকল অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহন করলেও এবার তাকে শোক র‌্যালী ও শ্রদ্বা নিবেদনের ব্যাপারে আহবায়ক কমিটি অবহিত করেননি। সে জন্য অনুষ্ঠানে তিনি কিংবা তার সমর্থিত কোন নেতাকর্মী দেখা যায়নি। তবে ডাঃ বিরুকে শোক র‌্যালীতে দেখা না গেলেও আহবায়ক কমিটির অনুষ্ঠানে যোগদেন নারায়ণগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সোহাগ রনি। যিনি দীর্ঘদিন হাসনাত পরিবারের সদস্যদের সাথে রাজনীতি করেছেন।

সুত্র জানান, গত বছরের জুলাই মাসে উপজেলা আহবায়ক কমিটির অনুমোদন দেয় জেলা আওয়ামীলীগের একাংশ। কমিটি ঘোষনার পর থেকে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের একাংশ এ কমিটির বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। কমিটি ঘোষনার পর থেকে আহবায়ক কমিটির সদস্য হওয়ার পর বিরু বিভিন্ন অনূষ্ঠানে জড়ালো ভুমিকা পালন করে আসছিলেন। কিন্তু তা কর্মকান্ডে সন্তুষ্ট হতে পারিনি আহবায়ক কমিটির অন্য সদস্যরা।

সুত্র আরো জানান, আহবায়ক কমিটি ঘোষনার পর টুঙ্গিপাড়া বঙ্গবন্ধুর মাজারে পুস্পার্ঘ্য অর্পন করতে যায় আহবায়ক কমিটির সদস্যরা সেখানে বিরু কাউকে না জানিয়ে কাঁচপুরের কয়েকজন আওয়ামীলীগের নেতাকে টুঙ্গিপাড়া নিয়ে যাওয়ায় ঘটনায় ক্ষেপে যান আহবায়ক কমিটির সদস্যরা। সে অনুষ্ঠানে কাঁচপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন চড়াও হন বিরুর উপর। মাওয়া ঘাটে ফেরীতে বিরুকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন। পরে মোশরাফ ওমরকে অন্য সদস্যরা বুঝিয়ে শান্ত করেন। সেখানেই শেষ নয় আহবায়ক কমিটি টুঙ্গিপাড়া যাওযার পর দেখতে পান সেখানকার রাস্তাঘাটের শুধু বিরুর ছবি দিয়ে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার ছবি সম্বলিত ফেস্টুন ব্যানার করে দলের সভানেত্রীকে শুভেচ্ছা জানানো হয়। এ ছবি দেখে আরেক দফা ক্ষেপে যান কমিটির সদস্যরা কিন্তু দলের মতবিরোধ হতে পারে কারনে সবাই তা মেনে নেন। এদিকে গত ১৫ আগস্টকে কেন্দ্র করে বিরু বিভিন্ন ইউনিয়নে সে তার সমর্থিত উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও অন্যান্য নেতাকর্মীদের নিয়ে আহবায়ক কমিটিকে পাশ কাটিয়ে প্রস্তুতিমুলক সভা করেন। এছাড়া আহবায়ক কমিটির বিভিন্ন অনুষ্টানে বিরু দলের আহবায়ক সামসুল ইসলামকে অবজ্ঞা করে নিজে মাইক হাতে নিয়ে অনুষ্টানের মুল ব্যক্তি হিসেবে আর্বিবারের চেষ্টা করতেন যা জেলা ও উপজেলার নেতারা মেনে নিতে পারতেন না। এছাড়া বিরুকে আহবায়ক কমিটির সদস্য করায় আহবায়ক কমিটির বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া নেতাকর্মীরা তাকে ও তার পরিবারকে ইঙ্গিক করে অনেক অশোভন বক্তব্য দিতেন যা আহবায়ক কমিটিকে প্রশ্নবিদ্ধ ও বিব্রত করতো। সেজন্য দলের আহবায়ক কমিটির সকল সদস্য ডা: বিরু’কে সহজ ভেবে মেনে নিতে পারতেন না।

অপরদিকে, আজ কাকতালীয় ভাবে শোক দিবস উপলক্ষে জেলা অডিটোরিয়ামের পাশের মাঠে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের করে সোহাগ ররি। সোহাগ রনি’র অনুষ্টানে অংশ গ্রহন করেন উপজেলা আহবায়ক কমিটির সদস্যরা। এছাড়া আহবায়ক কমিটি যখন বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাতে যান তখন সোহাগ রনি তার নেতাকর্মী নিয়ে বঙ্গবন্ধুর শ্রোগান দিয়ে আহবায়ক কমিটির সাথে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।