• বিকাল ৪:২৪ মিনিট শুক্রবার
  • ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  • ঋতু : গ্রীষ্মকাল
  • ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
এই মাত্র পাওয়া খবর :
সোনারগাঁয়ে প্রাথমিকে অনলাইন বদলী আবেদনে অনিয়মের অভিযোগ জামপুরে ৪টি ওয়ার্ডের নেতাকর্মী নিয়ে বাবুল ওমরের নির্বাচনী প্রচারনা সভা সোনারগাঁয়ে উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মী বেচা-কেনার হিড়িক সোনারগাঁয়ে নেতাকর্মী বেচা-কেনার হিড়িক সোনারগাঁয়ে করোনা যোদ্ধাকে ডাকাত আখ্যা দিয়ে হত্যার চেষ্টা সোনারগাঁয়ে যাত্রীবাহি বাসের ধাক্কায় অটোচালক নিহত সোনারগাঁ উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর নির্বাচনী কর্মীসভা অনুষ্ঠিত সোনারগাঁ জাদুঘরে ১৫ দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা সোনারগাঁয়ে মোটর সাইকেলে বেড়ানোর কথা বলে শিশুকে ধর্ষণ ঈদে গরীবের ভাগ্যেও জুটছেনা ছাডি মাংস ঈদে গবীরের মাংসের বদলে ভরসা ছাডি মাংস সোনারগাঁ উপজেলা কেন্দ্রীয় মসজিদে ঈদের জামাতের সময় সুচি সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে সোনারগাঁয়ের বাংলা বাজারে ঈদের জামাত আদায় সোনারগাঁয়ে গরুর মাংস কিনতে না পেরে মুরগী কিনতেও নাজেহার গরীর মানুষ সোনারগাঁয়ে গরুর মাংস ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া সোনারগাঁয়ে আলোর পথ সমাজ কল্যাণ সংস্থার খাদ্য সামগ্রী ও নগদ অর্থ বিতরণ সোনারগাঁয়ে ইট ভাটায় হামলা গাড়ি ভাংচুর ও হামলায় আহত ৫। সোনারগাঁয়ে বেড়েছে গরুর মাংসের দাম সোনারগাঁয়ে সাংবাদিক ও সুধী জনের সন্মানে জাগো সোনারগাঁও২৪.কমের ইফতার সোনারগাঁ সাব রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখকদের নতুন কমিটির অনুমোদন
লাগামহীন হয়ে পড়ছে সোনারগাঁয়ের ক্লিনিকগুলো

লাগামহীন হয়ে পড়ছে সোনারগাঁয়ের ক্লিনিকগুলো

Logo


নিউজ সোনারগাঁ২৪ডটকম: দিন যত যাচ্ছে তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দেশের মানুষ। এ মানুষকে স্বাস্থ্য খাতে সরকারী সেবা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় দিনে দিনে বাড়ছে লাগামহীন ভাবে বাড়ছে বে-সরকারী ক্লিনিক। এর মধ্যে অনেক ক্লিনিক উন্নত চিকিৎসা নিশ্চয়তা দিয়ে তৈরী করা হলেও তার পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে তৈরী হচ্ছে মানহীন চিকিৎসার সেবা নামে প্রতারনা। গত ১০ বছরের ব্যবধানে উন্নত সেবার মনোভাব নিয়ে মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় তৈরী হয়েছে ২০টিরও বেশী ক্লিনিক। স্থাণীয় প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় দিনে দিনে ব্যাঙ্গের ছাতার মতো গড়ে উঠছে এসব ক্লিনিক। আর অতি মুনাফা লোভী ক্লিনিকগুলোর মালিকরা বিশেষজ্ঞ ডাক্তার না রেখে সাধারণ ফার্মাস্টিস ও নার্স দিয়ে চলাচ্ছে এ ক্লিনিকগুলো। ফলে দিনে দিনে বাড়ছে ভুল চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর ঘটনা। এ সব মৃত্যুর ঘটনায় কোন বিচার না হওয়ায় ক্লিনিক মালিকগুলো দিনের পর দিন তাদের এ অপরাধ মুলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

জানা গেছে, গত ১০ বছরের ব্যবধানে সোনারগায়ে ছোট-বড় ২০টির মতো বে-সরকারী হাসপাতাল। অধিক মুনাফা লাভের আশায় একজন ব্যক্তি সিন্ডিকেট করে এসব মানহীন প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলছেন। এরমধ্যে রয়েছেন স্থানীয় ক্ষমতাশীল ব্যক্তি, রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী। উপজেলার মোগরাপাড়া চৌরাস্তা, উদ্ধবগঞ্জ, কাঁচপুর, নয়াপুর, বারদী, জামপুর ইউনিয়ন ও পৌরসভা এলাকায়। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশী হাসপাতাল গড়ে উঠেছে মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায়। এসব হাসপাতালগুলোতে নেই বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নেই প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি। ফামাস্টিস নার্স ও ওয়ার্ড বয় দিয়ে চলে সেবা। তারা তাদের ক্লিনিকগুলো চালানোর জন্য উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দালাল নিয়োগ করেন। দালালরা বাড়ী বাড়ি গিয়ে রোগীদের বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যেতে উৎসাহ তৈরী করে। এজন্য দালালরা হাসপাতাল মালিক ও ডাক্তারদের কাছ থেকে কমিশন নিয়ে থাকেন। আর ডাক্তারগুলো তাদের রোগীদের অপ্রয়োজনীয় টেস্ট বানিজ্যের মাধ্যমে বিভিন্ন হয়রানিসহ রোগীর ভেতর মানসিক অস্থিরতা সৃষ্টি করেন। বিশেষ করে গাইনী ডাক্তারগুলো সবচেয়ে বেশী হয়রানি করেন প্রসূতি মায়েদের। তারা ঢাকা থেকে এসে চমকপদ বিজ্ঞাপন ও দালালের মাধ্যমে তাদের প্রচার-প্রচারনা এমন ভাবে এলাকায় ছড়িয়ে দেন যেন সকল রোগীর একমাত্র সমাধান তারাই দিতে পারেন। এভাবে রোগীদের ভোলবাল বুঝিয়ে টেষ্ট বানিজ্য শেষে সময়ের আগেই সিজার করতে বাধ্য করেন। এতে রোগীসহ নবজাত শিশু বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বলেও অনেকে অভিযোগ তুলেছেন।

সুত্র জানায়, গত ১০ দিনের ব্যবধানে সোনারগাঁয়ে ২জন প্রসূতি ভুল চিকিৎসায় মারা গেছেন। এর মধ্যে একটি মামলা হলেও আরেকটি টাকার মাধ্যমে রফাদফা করেছেন বলে স্থানীয়রা। সুত্র আরো জানায়, সোনারগাঁ উপজেলায় নুরজাহান নামের এক গাইনী ডাক্তার দীর্ঘদিন ধরে মোগরাপাড়া চৌরাস্তার শপিং কমপ্লেক্স মার্কেটের ৩য় তলায় সোনারগাঁ জেনারেল হাসপাতাল নামের একটি ক্লিনিকে বসে রোগী দেখেন। তার হাতে ওই হাসপাতালে সেবা নিতে আসা ২ প্রসূতি মারা যান। গত ২০১৫ সালের প্রথম দিকে মোগরাপাড়া চৌরাস্তায় সোনারগাঁ জেনারেল হাসপাতালে শাহানাজ নামের এক দালালের মাধ্যমে চিকিৎসা নিতে আসেন সোনারগাঁ সরকারী ডিগ্রী কলেজের পিওন পিয়ার আলীর ভাড়াটিয়া বাক প্রতিবন্ধি ও দিনমজুর ডালিমের স্ত্রী এক সন্তানের জননী শাহানাজ বেগম (২২)। সেখানে আলট্টা সোনোগ্রাম শেষে ৮ মাসের পেটের বাচ্চাকে সিজার করতে হবে বলে জানান নুরজাহান। নয়তো পেটের বাচ্চা ও মায়ের ক্ষতি হবে। এ ভয় দেখিয়ে তাৎক্ষনিক দিন মজুর ডালিম ধারদেনা করে টাকা এনে স্ত্রীকে সিজার করান ডাঃ নুরজাহানের কাছে। সিজারের পর ডাঃ নুরজাহান পেটের শিশুটিকে মৃত বলে ঘোষনা করেন এবং তারাহুড়ো করে পেটের মধ্যে গজ রেখেই সেলাই করে দ্র্রুত চলে যান। পরে সেই প্রসূতি মৃত্যুর কোলে ঠলে পড়েন। এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে হাসপাতালের মালিক জয়মিয়া।

বছর খানেক আগে নুতন সেবা হাসপাতালে এক শিশুকে নিয়ে আসেন তার মা। সেখানে সুমন নামের এক ডাক্তার ওই শিশুকে সেবা দেন। শিশুটির পরিবার অভিযোগ করেন শিশুটিকে অতিমাত্রায় এন্ডিবায়োটিক দেয়ার ফলে রাতের বেলা শিশুটি মারা যায়।

 

এরপর চলতি মাসের ১০ তারিখে একই হাসপাতালে একই কায়দায় আমান্তিকা নামের এক প্রসূতিকে ভুল চিকিৎসা করেন ডাঃ নুরজাহান। আমান্তিকাকে সিজার করে তারাহুড়ো করে চলে যান আরেকটি সিজার করতে। পরে নার্সরা অমান্তিকার পেটে গজ রেখেই সেলাই করে দেয়।

এদিকে, সেলাইয়ের পর রাত যত বাড়তে থাকে আমান্তিকার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। তার পেট ব্যাথাসহ কয়েকবার বমি করেন। পরে হাসপাতালের নার্সরা আমান্তিকা শারীরিক অবস্থার কথা ডাঃ নুরজাহানকে জানালে তিনি শনিবার সকালে অমান্তিকাকে নারায়ণগঞ্জ কেয়ার হাসপাতালে নিতে বলেন। সেখানে নিয়ে গেলে আমান্তিকাকে ২ দফা অপারেশন করেন নুরজাহান। অপারেশন শেষে আমান্তিকার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি হলে রোগীর স্বজদের জানানো হয় রোগীর কিডনিতে সমস্যা আছে তাকে দ্রুত ঢাকা আজগর আলী হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। শনিবার রাতেই স্বজনরা রোগীকে আজগর আলী হাসপাতালে নিয়ে গেলে সোমবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। সেখানে রোগীর স্বজনরা ১লাখ ২৭ হাজার টাকা হাসপাতাল বিল দিয়ে মৃত আমান্তিকাকে বাসায় এনে কবর দেন।

গতকাল শনিবার সকালে সোনারগাঁ উপজেলার আয়েশা আমজাদ ক্লিনিকের আমজাদ ডাক্তারের ছেলে দুলাল মিয়ার স্ত্রী শিউলী সরকার ঝনা আক্তার নামের একটি রোগীকে রুমে নিয়ে যায় সেখানে একটি বেঞ্চে বসিয়ে তার কি সমস্যা শুনেই তার কাছ থেকে টাকা রেখে একটি পেসক্রিপশন ধরিয়ে দেন। পরে রোগী ঝনা আক্তার সিড়ি দিয়ে নামার সময় জ্ঞান হারিয়ে সিড়ির মধ্যে পড়ে যান। এসময় তার সঙ্গে থাকা মায়ের আত্মচিৎকারে আশপাশের লোকজন তাকে ধরাধরি করে একটি সিড়িতে বসিয়ে মাথায় পানি দিতে থাকেন এতেও তার জ্ঞান না ফিরলে কিছুক্ষন পর শিউলী সরকার সিড়ির মধ্যে বসিয়েই তাকে চিকিৎসা দিতে থাকেন। পরে পথচারী ও স্থানীয়রা ডাঃ শিউলী সরকার তাকে হাসপাতালে না পাঠিয়ে সিড়িতে বসিয়ে চিকিৎসা দেয়ায় তার উপর চড়াও হয়। পরে স্থাণীয় ও পথচারীরা রোগী ঝনা আক্তারকে অজ্ঞান অবস্থায় গাড়ীতে তুলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠিয়ে দেয়।

সোনারগাঁবাসী অভিযোগ করেন, একের পর এক ভুল চিকিৎসা রোগীর মৃত্যুর হওয়ার পর ক্লিনিক মালিকগুলো বেপোরোয়া ভাবে তাদের হাসপাতালগুলো পরিচালনা করে যাচ্ছেন। হাসপাতাল মালিকদের প্রত্যেক্ষ মদদে অভিজ্ঞ ডাক্তার রোগীর ভুল চিকিৎসা করে মৃত্যুর দিকে ঢেলে দিচ্ছি। এজন্য তারা প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করে বলেন, প্রশাসন যদি নিয়মিত এ হাসপাতালগুলোতে মনিটরিং করেন তাহলে অনভিজ্ঞ ডাক্তার ও নার্সরা এখানে এসে চিকিৎসা করতে পারবে না। এছাড়া ভুল চিকিৎসায় মারা গেছে তদন্ত করে ওই ডাক্তার ও হাসপাতাল মালিককে আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।


Logo

Website Design & Developed By MD Fahim Haque - Web Solution