নিউজ সোনারগাঁ২৪ডটকম: সোনারগাঁ উপজেলা একমাত্র ২৫০ শষ্যা বিশিষ্ট সরকারী হাসপাতালে ডাক্তার বদলির হিড়িক পড়েছে। কাউকে পদোন্নতি কাউকে আবার অন্যত্র বদলি করা হয়েছে। এতে চরম ভোগান্তীতে পড়েছে রোগীরা। যদিও কয়েক মাস ধরে ডাক্তার সংকটে ভোগছিল হাসপাতালটি। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার হালিমা সুলতানা একজন গাইনী ও একজন আবাসিক মেডিকেল অফিসার ও কয়েকজন সহকারীকে নিয়ে কোন মতে হাসপাতালটিকে জীবিত রেখেছিলেন। কিন্তু একসাথে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার পদোন্নতি নিয়ে বদলি ও গাইনী ডাক্তার বদলিতে চরম ভোগান্তীতে পড়ছে হাসপাতালটি। এতে চরম ভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে স্বাস্থ্য সেবা। সোনারগাঁবাসী বঞ্চিত হচ্ছে তাদের নাগরিক অধিকার থেকে। অপরদিকে, মাত্র দু’একজন ডাক্তার ও কয়েকজন সহযোগী প্রতিদিন ৬/৭ শত লোকের চিকিৎসা দিতেও হিমশিম খাচ্ছেন।
জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ জেলার ৫টি উপজেলার মধ্যে সোনারগাঁ উপজেলার ৫০ শষ্যা হাসপাতালটিতে চলছে ডাক্তার বদলির হিড়িক। কিন্তু একজন ডাক্তারের বদলীর পরিবর্তে অনেকজন ডাক্তার এখানে দায়িত্ব না দেয়ার ডাক্তারহীন হয়ে পড়ছে হাসপাতালটি। উপজেলা প্রায় সাড়ে ৪ লাখ নাগরিকের চিকিৎসা সেবা দিতে উপজেলার বৈদ্যেরবাজার এলাকায় রয়েছে একটি হাসপাতাল। হাসপাতালটি নির্মাণের পর থেকে প্রয়োজনীয় ডাক্তার ও জনবলের অভাবে চিরকাল স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে সোনারগাঁবাসী। যদিও সদ্য বদলী হওয়া হালিমা সুলতানা এখানে দায়িত্ব নেয়ার পর হাসপাতালে স্বাভাবিক পরিবেশ ও অভ্যন্তরিন অবকাঠামো পূর্ন সংস্কার করে তিনি হাসপাতালের অন্যান্য দায়িত্ব পালন করার পর নিজে বর্হি বিভাগে রোগী দেখে ৪জন ডাক্তার নিয়ে হাসপাতালটি স্বাভাবিক ভাবে চালিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে আসছিলেন। তাদের সাথে সাহায্য করার জন্য কয়েকজন সহযোগীকেও অর্ন্তভুক্ত করেন। তিনি থাকাকালীর সময়ে উর্ধ্বতন কর্তকর্তাদের কাছে ডাক্তারের সংকট নিরসনে কয়েকবার চিঠি দিলেও উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কর্মপাত করেননি। ফলে দিনে দিনে হাসপাতালটি তার পুর্ন সেবা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এছাড়া ডাক্তারের তুলনায় অতিরিক্ত রোগী থাকার কারনে ডাক্তারাও ঠিকমত স্বাস্থ্য সেবা দিতে পারতেন না রোগীদের। ফলে রোগী ও ডাক্তাদের মধ্যে চলত মানসিক অভ্যন্তরিন অস্থিতিরতা। এতে কাক্ষিত সেবা কেউ কাউতে দিতে পারতেন না।
সুত্র মতে গত ৩ মাস আগে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মহিউদ্দিনকে বদলি করা হয় অন্যত্র। সে জায়গায় এখনো কাউকে নিযোগ না দেয়া শুন্য হয়ে আছে। তার কয়েকদিন পর ট্রেনিংয়ে পাঠানো হয় ডেন্টার ডাক্তার আফরিন আক্তারকে। সে পদটি এখন শুন্য ফলে দীর্ঘদিন ধরে ডেন্টারের কোন চিকিৎসা হচ্ছে না এ হাসপাতালটিতে। এছাড়া ডাক্তার না থাকায় যন্ত্রপাতিগুলিও নস্ট হচ্ছে ব্যবহার না করা করনে। এদিকে, সদ্য বদলি করা হয়েছে গাইনী ডাক্তার সুমনা আক্তারকে ও পদোন্নতি দিয়ে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ হালিমা সুলতানা হককে। ফলে গত কয়েকদিন ধরে আবাসিক অফিসার ডাক্তার সজিব হোসেন কয়েকজন সহকারীকে নিয়ে একাই হাসপাতালের রোগীকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিচ্ছেন রোগীদের। এতে যেমন ভোগান্তীতে পড়ছে রোগীরা তেমনি অতিরিক্ত রোগীর কারনে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন ডাক্তার ও সহযোগীরা।
এ ব্যাপারে সাংবাদিক ও সাহিত্যিক রবিউল হুসাইন জানান, উপজেলার সাড়ে ৪ লাখ নাগরিকের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে ৫০ শষ্যা বিশিষ্ট একটি হাসপাতাল নাগরিক সুবিধার জন্য খুবই নগন্য। আমরা সরকারের কাছে আশা করবো ঐতিহাসিক এলাকার এ হাসপাতালটিকে আরো আধুনিকায়ন করে কয়েকজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নিয়োগ দিয়ে সোনারগাঁবাসীর স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করেন।