• সকাল ৮:০৩ মিনিট বৃহস্পতিবার
  • ৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  • ঋতু : গ্রীষ্মকাল
  • ১৮ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
এই মাত্র পাওয়া খবর :
জামপুরে ৪টি ওয়ার্ডের নেতাকর্মী নিয়ে বাবুল ওমরের নির্বাচনী প্রচারনা সভা সোনারগাঁয়ে উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মী বেচা-কেনার হিড়িক সোনারগাঁয়ে নেতাকর্মী বেচা-কেনার হিড়িক সোনারগাঁয়ে করোনা যোদ্ধাকে ডাকাত আখ্যা দিয়ে হত্যার চেষ্টা সোনারগাঁয়ে যাত্রীবাহি বাসের ধাক্কায় অটোচালক নিহত সোনারগাঁ উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর নির্বাচনী কর্মীসভা অনুষ্ঠিত সোনারগাঁ জাদুঘরে ১৫ দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা সোনারগাঁয়ে মোটর সাইকেলে বেড়ানোর কথা বলে শিশুকে ধর্ষণ ঈদে গরীবের ভাগ্যেও জুটছেনা ছাডি মাংস ঈদে গবীরের মাংসের বদলে ভরসা ছাডি মাংস সোনারগাঁ উপজেলা কেন্দ্রীয় মসজিদে ঈদের জামাতের সময় সুচি সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে সোনারগাঁয়ের বাংলা বাজারে ঈদের জামাত আদায় সোনারগাঁয়ে গরুর মাংস কিনতে না পেরে মুরগী কিনতেও নাজেহার গরীর মানুষ সোনারগাঁয়ে গরুর মাংস ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া সোনারগাঁয়ে আলোর পথ সমাজ কল্যাণ সংস্থার খাদ্য সামগ্রী ও নগদ অর্থ বিতরণ সোনারগাঁয়ে ইট ভাটায় হামলা গাড়ি ভাংচুর ও হামলায় আহত ৫। সোনারগাঁয়ে বেড়েছে গরুর মাংসের দাম সোনারগাঁয়ে সাংবাদিক ও সুধী জনের সন্মানে জাগো সোনারগাঁও২৪.কমের ইফতার সোনারগাঁ সাব রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখকদের নতুন কমিটির অনুমোদন ঈদের আগে ও পরে দূর্ঘটনা রোধে চালকের সচেতন হতে বললেন হাইওয়ে পুলিশের প্রধান
`প্রতিদিন সড়কে ১৭ প্রাণহানি’

`প্রতিদিন সড়কে ১৭ প্রাণহানি’

Logo


গত এক বছরে (২০২১ সালের অক্টোবর থেকে ২০২২ সালের অক্টোবর) পর্যন্ত দেশে মোট ৫ হাজার ৩৭১টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে মারা গেছেন ৬ হাজার ২৮৪ জন। গড় হিসাবে প্রতিদিন সড়কে প্রাণহানি ঘটেছে ১৭ জনের। একই সময়ে দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ৭ হাজার ৪৬৮ জন এবং শারীরিকভাবে অক্ষম হয়েছেন ১২ হাজার ৫০০ জন।  

শুক্রবার বাংলাদেশ ইনিশিয়েটিভ, সেবক ও ড্রাইভার্স ট্রেনিং সেন্টার আয়োজিত ‌‘সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ক সংলাপ` শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ও বিশ্ব ব্যাংক গ্রুপের গ্লোবাল রোড সেফটি ফ্যাসিলিটি (জিআরএসএফ) জানিয়েছে, দেশে প্রতি বছর সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে ১৬ দশমিক ৭৪ জনের প্রাণহানি ঘটছে। পঙ্গু হয়েছেন ৪১৭ জন। প্রাণহানির দিক থেকে দেশের মোট মৃত্যুর ৩ দশমিক ৫ শতাংশ ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনার কারণে।

সংস্থা দুটির হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি বছর গড়ে ২৫ হাজার ২৩টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। সারা বিশ্বে সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশের অবস্থান ৮৮ তম। বাংলাদেশের মোট সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ৬৭ শতাংশের বয়স ১৫ থেকে ৬৪ বছরের মধ্যে। সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের ১৫-৪৯ বছর বয়সীদের মধ্যে পাঁচ জন পুরুষের বিপরীতে প্রাণহানি ঘটছে একজন নারীর। সড়ক দুর্ঘটনায় দেশের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ প্রবৃদ্ধির ৫ দশমিক ৩ শতাংশ।

জিআরএসএফের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির মধ্যে যানবহনের ধরণ অনুযায়ী সর্বোচ্চ মৃত্যু ঘটছে দুই ও তিন চাকার ব্যবহারকারীদের, যার হার ৩৩ শতাংশ। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে পথচারী, যা মোট দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ২৯ শতাংশ। চার চাকার যান ব্যবহারকারীর প্রাণহানির হার ১৮ শতাংশ। সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে বাইসাইকেল ব্যবহারীর হার ১৫ শতাংশ এবং অন্যান্য তিন শতাংশ।

বেসরকারি সংস্থা সেন্ট্রার ফর গভর্ন্যান্স স্ট্যাডিজের (সিজিএস) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত কয়েক বছরে বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির সংখ্যা উদ্বেগজনভাবে বেড়েছে।

বাংলাদেশ রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের (আরএসএফ) বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের সড়ক দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ৬ হাজার ২৮৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময় আহত হয়েছেন ৭ হাজার ৪৬৪ জন। এই সময়ে নিরাপদ সড়ক চাইয়ের (নিসচা-উই ডিমান্ড সেফ রোডস) হিসাব অনুযায়ী মোট তিন হাজার ৭৯৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ঘটেছে চার হাজার ২৮৯ জনের।

বেসরকারি সংস্থা সেন্ট্রার ফর গভর্ন্যান্স স্ট্যাডিজের (সিজিএস) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত কয়েক বছরে বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির সংখ্যা উদ্বেগজনভাবে বেড়েছে।

বাংলাদেশ রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের (আরএসএফ) বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের সড়ক দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ৬ হাজার ২৮৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময় আহত হয়েছে ৭ হাজার ৪৬৪ জন। এই সময় নিরাপদ সড়ক চাইয়ের (নিসচা-উই ডিমান্ড সেফ রোডস) হিসাব অনুযায়ী মোট ৩ হাজার ৭৯৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ঘটেছে ৪ হাজার ২৮৯ জনের।

সিজিএসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সড়ক দুর্ঘটনায় যানবাহনের ধরন অনুযায়ী বিপদজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছেছে মোটরসাইকেল। দুই চাকার এই বাহনটি বেশিরভাগ সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দায়ী।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের হিসাব অনুয়ায়ী, ২০২১ সালের সংঘটিত সড়ক দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে মোটরসাইকেল দায়ী ৩৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ। মোট ২ হাজার ৭৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার ২১৪ জনের এবং আহত হয়েছে ১ হাজার ৩০৯ জন। ২০২০ সালে এ বাহন দুর্ঘটনায় নিহত হয় ১ হাজার ৩৮১ জন এবং আহত হন ১ হাজার ৪৬৩ জন।

সড়ক দুর্ঘটনার কারণ

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ওয়ার্ল্ড ব্যাংক গ্রুপের গ্লোবাল রোড সেফটি ফ্যাসিলিটির (জিআরএসএফ) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের সড়ক দুর্ঘটনাগুলোর কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে বেপরোয়া চালনা, অতিরিক্ত গতি, অতিরিক্ত যাত্রী ও পণ্যবোঝাই, অবৈধ প্রতিযোগিতা, হেলমেট ও সিটবেল্ট না বাঁধার প্রবণতা, মাদকদ্রব্য সেবন করে গাড়ি চালনা, চালকের যথাযথ প্রশিক্ষণের অভাব, যানবাহনসমূহের যথাযথ পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করা এবং সহকারীর সহায়তায় গাড়ি চালানোর মতো বিষয়গুলোকে।

অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এআরআই) মতে, দেশের সংঘটিত সড়ক দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ৯০ শতাংশের জন্য দায়ী পথচারী ও যাত্রী, পরিবেশগত কারণে ঘটছে ৩০ শতাংশ দুর্ঘটনা এবং যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ঘটছে ১০ শতাংশ দুর্ঘটনা।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষক গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. শামছুল হক বলেন, ‘নিরাপদ সড়ক তখনই হবে যখন আমরা নিরাপদ চালক তৈরি করতে পারব। সড়ক দুর্ঘটনাকে আমরা নিছক দুর্ঘটনা বলতে পারি না। কারণ এগুলো আমাদের নিজেদের তৈরি। এটাকে ক্রাশ বা সংঘর্ষ বলতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘দেশে বর্তমানে সড়ক দুর্ঘটনার হার উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। এটি আরও বাড়বে যদি না আমরা দক্ষ ও প্রশিক্ষিত চালক তৈরি করতে না পারি। একজন দক্ষ ও প্রশিক্ষিত চালকই সড়কের যেকোনো পরিস্থিতি সামাল দিতে পারে।

অধ্যাপক শামছুল বলেন, ‘লাইসেন্স দেওয়ার আগে বিআরটিএর উচিত চালকদের যথাযথ প্রশিক্ষণ দেওয়া। প্রতিটি গাড়ির ফিটনেস ও চালকের লাইসেন্স দেওয়ার আগে বিআরটিএকে আরও সচেতন হতে হবে। দুর্ঘটনা ঘটলে শুধু চালককেই দোষারোপ করা হয়। কিন্তু এর পেছনে আরও কারণ থাকে। শুধু চালককে জেলে দেওয়া সমীচীন নয়। তাই সিস্টেমকে নিরাপদ করার জন্য সিস্টেমের পরিবর্তন দরকার। ফিটনেস সেন্টারগুলোতে সিসিটিভি দিলে বড় পরিবর্তন আসবে।’

যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘দেশের কর্মক্ষম ব্যক্তিরাই সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাচ্ছেন, যার প্রভাব পড়ছে অর্থনীতিতে। দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত ব্যক্তি এবং তাদের ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের আর্থসামাজিক ক্ষতি হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এই ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের জন্য গর্ব করে। সড়ক দুর্ঘটনা এ গর্বের জায়গাতেই বেশি আঘাত হানছে। পুলিশের তথ্যভাণ্ডার বিশ্লেষণ করে দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউট (এআরআই) বলছে, গত এক দশকে দেশের সড়ক-মহাসড়কে দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের ৫৪ শতাংশের বয়স ১৬ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। আর দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে সাড়ে ১৮ শতাংশ শিশু। এদের বয়স ১৫ বছরের নিচে।’

তিনি বলেন, ‘সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের হিসাবে সড়ক দুর্ঘটনায় একজন কর্মক্ষম ব্যক্তি প্রাণ হারানোয় ২৪ লাখ ৬২ হাজার ১০৬ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়। সেই হিসেবে প্রত্যেক নিহত ব্যক্তির পরিবার এ পরিমাণ অর্থ রাষ্ট্র থেকে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার হকদার। যদিও সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এ গঠিত সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতদের আর্থিক সহায়তা তহবিল থেকে নিহত ব্যক্তির পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকা ও আহত ব্যক্তিকে তিন লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিধান রয়েছে। তবে আইন কার্যকরের তিন বছরের মাথায় এ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কার্যক্রম আজও শুরু হয়নি।’


Logo

Website Design & Developed By MD Fahim Haque - Web Solution