নিউজ সোনারগাঁ টুয়েন্টিফোর ডটকম: প্রতিদিন সকাল বেলা প্রায় দেশ থেকে শতাধিক শতাধিক নারী, শিশু-পুরুষ জড়ো হোন সোনারগাঁ উপজেলার কাজী ফজলুল ইউমেন্স কলেজ এলাকার শহীদ মজনু পার্কের সামনে। তারা সবাই খাদ্য অধিদপ্তরের ওপেন মার্কেট সেলের (ওএমএস) দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে থাকেন। ওএমএসের চাল ও আটা কিনতে তারা সকাল থেকে সপ্তাহে ৫দিনই জড়ো হোন এখানে। প্রায় দেশ শতাধিক শতাধিক নারী, শিশু-পুরুষ প্রতিদিন সকালে সারীবদ্ধ ভাবে লাইনে দাড়িয়ে অপেক্ষা করেন ওএমএস এর চাল ও আটার জন্য। তাদের বেশীর ভাগই নারী। লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা একাধিক নারী-পুরুষ জানান, তাদের কেউ কেউ সকাল সাতটা আটটা থেকে ওএমএসের পণ্যের জন্য অপেক্ষা করছেন। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে আটা ও চাল বিতরন হয়।
সেখান থেকে চাল ও আটা কেনেন হাবিবপুর গ্রামের বাসিন্দা নাজমা আক্তার। তিনি বাসাবাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করেন। তিনি জানান ‘সকাল সাড়ে সাতটার দিকে চালের জন্য এখানে অপেক্ষা করে বেলা সাড়ে ১০টার পর চাল কিনেছেন। তিনি ৫ কেজি চাল ১৫০ টাকা আর ২ কেজির প্যাকেট আটা ৪৩ টাকায় কেনেন। এতে তার খরচ হয়েছে ১৯৩ টাকা।
নাজমা আরও বলেন, বাজার থেকে ৫ কেজি চাল আর ২ কেজি আটা কিনতে কমপক্ষে ৩০০ টাকা লাগত। কিন্তু এখান থেকে কেনার ফলে ১৮০ টাকার মতো সাশ্রয় হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি মোটা চাল ৫৪-৫৫ টাকা এবং খোলা আটা প্রতি কেজি ৪২ থেকে ৪৫ টাকা। আর প্যাকেট আটা ৪৮-৫০ টাকায় বিক্রি করা হয়।
দোকানের দেখা গেল, দোকানের সামনে এসে কোনো লাইন কিংবা শৃঙ্খলা আর নেই। সবাই নিজেদের ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি বিক্রেতার দিকে বাড়িয়ে দিচ্ছেন। সবার উদ্দেশ্য আগে পণ্য কেনা। দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার কারণে নারী-পুরুষ অনেককে ঘেমে ভিজে যেতে দেখা গেছে। গরমে লাইনে সামান্য কষ্ট হলেও চাল কিনতে কোন বিশৃঙ্খলা নেই।
ওএমএস এর ডিলাল ইমাম হাসান জানান, প্রতি রবিবার থেকে বৃহস্পতিবার (সরকারী ছুটি ছাড়া) সকাল ৯টা থেকে চাল ও আটা বিক্রি শুরু করি যতক্ষন শেষ না হয় ততক্ষন চলে আমাদের বেচাবিক্রি। প্রতিদিন জন প্রতি ৫ কেজি চাল ১৫০ টাকা ও ৫ কেজি আটা ১০০ টাকায় বিক্রি করে থাকি। একজন ব্যক্তি তার আইডি কার্ডের ফটোকপি দিয়ে কিনতে পারেন ওএমএস এর চাল ও আটা।
সোনারগাঁ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা সৈয়দ করিব হোসেন জানান, সারা দেশের ন্যায় সোনারগাঁ উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার ১৪ জন ডিলারের মাধ্যমে ওএমএস এর চাল বিতরণ করা হচ্ছে। প্রতিদিন প্রত্যেক ডিলারকে দেড়টন চাল ও এ টন আটা দেয়া হয়। তবে দেয় টন চাল ও ১টন আটা ৭জন ডিলারকে দেয়া হয়। বাকি ৭জন ডিলারকে শুধু দেড়টন চাল বিতরণ করা হয়। যে কোন নারী পুরুষ তাদের আইডি কার্ডের ফটোকপি দিয়ে চাল ও আটা কিনতে পারেন।