নিউজ সোনারগাঁ টুয়েন্টিফোর ডটকম: গত ১১ ফেব্রুয়ারী রাতে বাংলাদেশ লোক ও শিল্প ফাউন্ডেশন চত্বরে আনসার ও টুরিস্ট পুলিশের পিটুনিতে আহত সোনারগাঁ যুবলীগের প্রচার সম্পাদক নাছির উদ্দিনের কোন খোঁজ খবর নেননি যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু ও যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলী হায়দারসহ অন্যান্য নেতারা। এমনকি যুবলীগের তারা কোন ধরনের প্রতিবাদও করেননি। এদিকে যুবলীগ নেতাকে পিটিয়ে আহত করার ঘটনায় নাছিরউদ্দিন ৬জনকে আসামী করে একটি অভিযোগ দিয়েছেন সোনারগাঁ থানায়।
এদিকে নাম না প্রকাশ করার শর্তে এক যুবলীগ নেতা জানান, গত ১১ তারিখে নাছিরউদ্দিকে বেধম পিটিয়ে আহত করার পর তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এরপর গতকাল মঙ্গলবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে সোনারগাঁ স্ব্স্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ঘটনার তিনদিন অতিবাহিত হলেও কোন নেতা তার খোঁজ খবর নেননি অপরদিকে, আজ পৌরসভা যুবলীগের উদ্যোগে বসস্ত দিবসে ঘটা বসন্ত বরন অনুষ্ঠান পালন করে ভুড়ি ভোজের আয়োজন করেছে অথচ অনুষ্ঠানস্থল থেকে সোনারগাঁ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মাত্র কয়েক মিনিটের দুরত্ব। এই দুরত্ব অতিক্রম করে তারা যুবলীগ নেতাকে দেখতে হাসপাতাল যাননি নাছিরউদ্দিনকে দেখতে।
সুত্র জানায়, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ১১ তারিখ সন্ধ্যায় সোনারগাঁ জাদুঘরে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার ও টুরিষ্ট পুলিশের সদস্যরা উপজেলা যুবলীগের সভাপতি নাছিরউদ্দিকে পিটিয়ে মারাত্নক আহত করে। আহত নাছিরউদ্দিনকে প্রথমে সোনারগাঁ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। পরে সেখানে চিকিৎসার পর আবার সোনারগাঁ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। আলোচিত এ ঘটনার তিনদিন অতিবাহিত হলেও তার উপর হামলার কোন প্রতিবাদ ও তার চিকিৎসার খোঁজ খবর নিতে হাসপাতালে যাননি যুবলীগের কোন নেতা।
আহত যুবলীগ নেতা নাছির উদ্দিন জানান, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমাকে আনসার ও টুরিষ্ট পুলিশ পিটিয়েছে। আমাকে কেন কি কারণে মারধর করা হলো আমার যুবলীগের পক্ষ থেকে কোন প্রতিবাদ তো দুরের কথা আমি কি অবস্থায় আছি কেউ আমার খোঁজ খবর নেয়নি। অথচ আমি ছোট বেলা থেকে আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। মাঝখান দিয়ে বিদেশ থেকে এসে যুবলীগের প্রচার সম্পাদক পদটি লাভ করি। বিদেশ থেকে যে টাকা উপার্জন করেছি তার সব টাকা দলের পেছনে খরচ করেছি সাথে বাপের পৈতৃিক সম্পতিও বিক্রি করে দল চালিয়েছি। ২০২১ সালে হেফাজত কান্ডে মোগরাপাড়া চৌরাস্তা আওয়ামীলীগের পার্টি অফিস ভাংচুরে ঘটনায় কোন নেতা সাহস পায়নি মামলা করার সেখানে আমি বাদি হয়ে মামলা করছিলাম। এরপর সড়ক জনপথ যখন আওয়ামীলীগ অফিস ভাঙ্গতে আসে তখন আমি ভোলডোজারের সামনে দাড়িয়ে ছিলাম আমি বলেছিলাম আগে আমাকে মারতে হবে তারপর পার্টি অফিস ভাঙ্গতে হবে। সেদিন সোনারগাঁয়ের কোন নেতাকে চোখে দেখিনি। আজ আমাকে অন্যায় ভাবে আনসার পুলিশ পেটালো আমার সংগঠনের কোন নেতা প্রতিবাদ তো দুরের কথা আমারকে ফোন করেও কোন নেতা খোঁজ খবর নেননি। এই দল এতো আন্দোলন সংগ্রাম করে দল আমাকে এটাই উপহার দিলো। তিনি কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, নেতারা চৈতি থেকে শুরু করে কত জায়গা থেকে মাসিক বিভিন্ন হারে চাঁদা পায় আমাকে নাছিরকে এক জায়গা থেকে কিছু সম্মানী দিতো সেটাও আমার সভাপতি বন্ধ করে দিয়েছে। তিনি বলেন, যে দল নেতা মৃত্যুশয্যায় নেতার খোঁজ খবর নেয়না সে দল করে লাভ কি এর চেয়ে রাজনীতি ছেড়ে নেতাদের তোষামোদি ছেড়ে কাজ করে ভাত খাবো সেটাতে অনেক সুখ।
নাছির উদ্দিনের স্ত্রী জানান, আমার স্বামী রাত নেই দিন নেই সারাদিন রাজনীতিতে সময় দেন। নেতারা যে যা বলেন তিনি সেটাই করার চেষ্টা করেন। রাজনীতির কারণে পরিবারে অনেক অশান্তি হয়েছে তারপর তিনি রাজনীতি ছাড়েননি। আজ আমার স্বামীকে আনসাররা অন্যায় ভাবে পেটালো অথচ কোন নেতা তার খোঁজ খবর নিলো না। এটা কি কোন রাজনৈতিক দলের কাজ।
এ ব্যাপারে যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু জানান, সে ব্যক্তিগত কারনে মারামারি করছে সেটা কি দল দায়বার বহন করবে না। সংগঠনের জন্য হলে আমরা প্রতিবাদ করতাম তারপরও আমি লোক পাঠিয়ে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছিলাম।