নিউজ সোনারগাঁ টুয়েন্টিফোর ডটকম: সোনারগাঁ উপজেলার জামপুর ও সাদিপুর ইউনিয়নবাসীর কাছে আতংকের এক নাম নুর, আলামিন ও গোলজারের দ্বারা পরিচালিত গুন্ডা বাহিনী। যাদের কাজ হলো ২টি ইউনিয়নে অন্যের জমি দখল করে কোন কোম্পানী বা ব্যক্তির কাছে বিক্রি করা অখবা কোম্পানী কিংবা ব্যক্তির হয়ে অন্যের জমি দখল বরা। তাদের দ্বারা পরিচালিত গুডা বাহিনীর গত কয়েক বছরে এ কাজ করে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি টাকা আর নিঃশ্ব করেছেন অসংখ্য পরিবারকে। উপজেলা আওয়ামীলীগের শীর্ষস্থানীয় এক নেতার নাম বিক্রি করে ওই এলাকায় সৃষ্টি করেছেন ত্রাসের রাজত্ব। তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে মিথ্যা মামলা ও হামলা শিকার হয়েছেন কয়েকজন ব্যক্তি। এছাড়া অন্যের হয়ে জমি দখল নিয়ে গিয়ে কাঁচপুরে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করেন এ গুন্ডা বাহিনী।
সম্প্রতি বৃহস্পতিবার একটি নিরীহ পরিবারের বাড়িঘর দখলে নিতে ভাঙচুর ও লুটপাট করে তাদের ভিটেমাটিছাড়া করার অভিযােগ উঠেছে। দলিল জালিয়াতি করে ওই নিরীহ পরিবারের এক কোটি টাকা মূল্যের ওই সম্পত্তি দখল করেন তারা। এ ঘটনায় উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের বাগবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা আবদুস সােবহান নামের এক ব্যক্তি এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
সােনারগাঁ থানায় লিখিত অভিযােগপত্রে উল্লেখ করেন, স্থানীয় একটি শিল্পকারখানার মালিকের পক্ষ নিয়ে স্থানীয় জামপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আবদুন নুর ও তাঁর সহযােগী ইউনিয়ন যুবলীগের নেতা আল – আমিন মিয়া ওরফে ডিস আলামিন, গােলজার হােসেন, আজিজুল হকের নেতৃত্বে ২৫-৩০ জনের একদল যুবক গতকাল সকালে অস্ত্রের মহড়া দিয়ে তার বৃদ্ধ মা রেহাতুন নেছা ( ৭০ ) ও বােন নাজমা বেগমকে পিটিয়ে আহত করে, তার প্রবাসী ভাইয়ের স্ত্রীকে লাঞ্ছিত করে তাঁদের বাড়িঘর ভাঙচুর করে ঘরের আসবাব লুটপাট করে এবং তাদের বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে বাড়ি ও পাশের নিচু জমি দখল করে নেন । এলাকাবাসীর সামনে বাড়িঘর দখল করে নেওয়ার ঘটনা ঘটলেও গুন্ডা বাহিনীর ভয়ে কেউ এগিয়ে আসেননি। তিনি (সােবহান) আইনজীবীদের সহযােগিতা নিয়ে থানায় লিখিত অভিযােগ করার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনার সত্যতা পেয়ে দখলদার নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান শুরু করে । পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে গুন্ডা বাহিনী এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান । পরে পুলিশের উপস্থিতিতে পরিবারের সদস্যরা তাঁদের বাড়িতে প্রবেশ করেন।
সােবহান জানান, গত ৫ মার্চ আমি ও আমার পরিবারের সদস্যরা গুন্ডা বাহিনী চাপে একটি কারখানার মালিকের কাছে ১৩ শতাংশ জমি বিক্রি করি। আবদুন নুর ও তাঁর সহযােগীরা ঢাকা শহরে কারখানাটির প্রধান কার্যালয়ে আমাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ভূমির নিবন্ধন করেন। ১৩ শতাংশ জমির মূল্য দিয়ে গুন্ডা বাহিনী একটির পরিবর্তে দুটি দলিলে আমাদের স্বাক্ষর নেন এবং তাঁরা জালিয়াতি করে পাঁচ বছর ধরে বিদেশে কর্মরত আমার ছােট ভাই দেলােয়ার হােসেনের স্বাক্ষর নকল করে ১৩ শতাংশের বাইরে আরও ৩৪ শতাংশ জায়গা লিখে নেন। ওই সম্পত্তির বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় এক কোটি টাকা। পরে জালিয়াতি করে লিখে নেওয়া ৩৪ শতাংশ জমির দলিলটি বাতিল চেয়ে গত বুধবার আমাদের পরিবারের সাতজন ওয়ারিশ বাদী হয়ে জজ আদালতে ওই কারখানার মালিক ও স্থানীয় বৈদ্যেরবাজার সাবরেজিস্ট্রারের ( উপনিবন্ধক ) বিরুদ্ধে মামলা করি।
আবদুন নুর ও আল – আমিন জানান, ‘ আমাদের নামে মিথ্যা অভিযােগ করা হয়েছে।
সােনারগাঁ থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, ওই পরিবারের সদস্যদের তাদের বাড়িঘরে থাকার ব্যবস্থা করেছি । জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান চালিয়েছি । আদালতে বিষয়টি মীমাংসা না হওয়া পর্যন্ত কেউ তাদের উচ্ছেদ করতে পারবে না।