নিউজ সোনারগাঁ২৪ডটকম:
সোনারগাঁ উপজেলার পৌরসভার টিপরদী এলাকায় অবস্থিত চৈতী কম্পোজিটের বিষাক্ত বজ্য নির্গমনের গোপন সুয়ারেজের পিটটি সিমেন্ট দিয়ে বন্ধ করে দেয় এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা। এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে পীটটি বন্ধ করেন তিনি। কিন্তু ঈদের ছুটিতে ও এমপি খোকা দেশের বাহিরে থাকার কারণে চৈতী কম্পোজিট তার নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী দিয়ে বন্ধ করা পীটটির মোটা পাইপ ভেঙ্গে বিষাক্ত বর্জ্য এবার খালের পরিবর্তে ফসলী জমিতে ফেলছে। এতে ওই এলাকার কয়েকশত বিঘা জমির ফসল ইতিমধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে।
এর আগে গত ৭ জুন লিয়াকত হোসেন খোকা সরেজমিনে চৈতী কম্পোজিটের বিষাক্ত পানি ফেলার তিনটি সুয়ারেজের খোঁজ খবর নেন। পর চৈতী কম্পোজিটের চারপাশের খাল ও জলাশয়গুলো ঘুরে দেখেন। পরে তিনি চৈতী কম্পোজিটকে বিষাক্ত পানি খালে না ফেলার জন্য আহবান করেন।
জানা গেছে, সোনারগাঁও পৌরসভার টিপুরদী এলাকায় ২০০১ সালে চৈতি কম্পোজিট নামের একটি কোম্পানি গড়ে উঠে। কোম্পানি স্থাপনের পর থেকে কোম্পানির ক্যামিকেল মিশ্রিত বর্জ্য স্থানীয় খালে ফেলে পরিবেশ দূষণ করে। এ অভিযোগে কয়েক দফায় কোম্পানির গ্যাস, পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করাসহ অর্থিক জরিমানা করা হয়। সম্প্রতি চৈতি কোম্পানি কর্তৃপক্ষ তাদের কেমিক্যাল মিশ্রিত পানি কয়েকটি সুরঙ্গের মাধ্যমে খালে ফেলে ওই এলাকায় মোগরাপাড়া. পিরোজপুর, সনমান্দি ইউনিয়ন ও পৌরসভাসহ ৩০টি গ্রামের লোকজনের পানি ব্যবহার অনুপযোগী করে তোলে। কোম্পানির বর্জ্য পানিতে ফেলার কারনে স্থানীয় কয়েকজনের পুকুরের মাছ মরে যায়। এছাড়াও এলাকার মানুষ পানি ব্যবহার করতে পারছেন না।
এ নিয়ে প্রশাসনের কাছে এলাকাবাসী একাধিবার অভিযোগ দায়ের করলেও কোন ফল আসেনি। গত ৭ জুন বিকেলে উপজেলা পরিষদ চত্বরে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকার কাছে এলাকাবাসী অভিযোগ নিয়ে আসলে তাৎক্ষনিক ওই এলাকা পরিদর্শন করে ওই কোম্পানির বিষাক্ত বর্জ্য নিস্কাশনের প্রমাণ পান। এ সময় চৈতি কর্তৃপক্ষকে এ পানি না ফেলার নির্দেশ দেন এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা। এর পরের দিন এমপি সরেজমিনে গিয়ে বর্জ্য ফেলার পীটটি বন্ধ করে দেন।
কয়েকদিন বন্ধ থাকার গত দুদিন আগে ঈদের ছুটি ও এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা দেশের বাহিরে থাকার সুযোগে চৈতী কম্পোজিট তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে রাতের আধারে সুয়ারেজের গোপন পাইনটি ভেঙ্গে দেয়। পাইটি ভেঙ্গে দেওয়ার কারণে কালো গন্ধ যুক্ত বিষাক্ত পানি সরাসরি পৌরসভার ফসলী জমিতে গিয়ে পড়ছে। গত দুদিনে বিষাক্ত বর্জের পানি পৌরসভার গোয়ালদী এলাকার কয়েকশত বিঘা জমির ফলস নষ্ট হয়ে গেছে। এতে ওই এলাকায় সবজীসহ ক্ষেত্রের ধান নষ্ট হয়ে ক্ষতির মুখে পতিত পড়েছে কৃষকরা।
সরেজমিনে চৈতী কম্পোজিটের আশাপাশে ঘুরে দেখা গেছে, এমপির বন্ধ করা পীটটি ঠিকই আছে। কিন্তু চৈতী কর্তৃপক্ষ পীটটির আগে মাটি খুড়ে গোপন সুয়ারেজের পাইটি ভেঙ্গে দেওয়ার কারণে বিষাক্ত কালো গন্ধ যুক্ত পানি ফসলী জমিতে পড়েছে। এতে ওই এলাকার কয়েকশত বিঘা জমির সবজী ও ফসল নষ্ট হয় গেছে। সবজীর গাছগুলো কালো রং ধারন করে শুকিয়ে গেছে।
পৌরসভার গোয়ালদী এলাকার কৃষক মঞ্জুর হোসেন জানান, আগে চৈতী কম্পোজিট গোপন ড্রেন দিয়ে খালে পানি ফেলত। এখন ড্রেনটি বন্ধ করে দেওয়ার পর চৈতী মাটির নিচের পাইপ ভেঙ্গে দেওয়ায় বিষাক্ত পানি সরাসরি ফসলী জমিতে পড়ে আমারসহ আশপাশের কয়েকশত বিঘা জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। এতে অর্থিক ক্ষতির মূখে পড়েছি। চৈতী আমাদের কোন কথাই শুনছেনা। আমরা আমাদের ক্ষতিপুরন না পেলে মহাসড়ক বন্ধ করে চৈতী কম্পোজিটের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করবো।
এ ব্যাপারে চৈতী কম্পোজিটের এজিএম মিজানুর রহমান সাহেবের সাথে যোগাযোগ করা হয়ে তিনি নিউজ সোনারগাঁ২৪ডটকমের কথা বলার সাথে সাথে লাইনটি কেটে দেন।