নিউজ সোনারগাঁ২৪ডটকম:
সোনারগাঁও পৌরসভার টিপরদী এলাকায় অবস্থিত চৈতী কম্পোজিট থেকে নির্গত তরল বিষাক্ত বর্জ্য ফেলায় স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছে উপজেলা চারটি ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ। এতে মারাত্মক বিপর্যস্ত হচ্ছে পরিবেশ ও ফসলি জমি খাল বিল ও নদী নালা। স্থানীয় জনগন এ বিষাক্ত বর্জ্য থেকে পরিবশে রক্ষার জন্য প্রশাসনের বরাবর লিখিত অভিযোগ ও কয়েকবার মানববন্ধন করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছে না।
জানাগেছে, সোনারগাঁও পৌরসভা এলাকায় চৈতী কম্পোজিট নামের একটি শিল্প প্রতিষ্ঠান নির্মাণের পর থেকে তাদের কোম্পানীর বিষাক্ত বর্জ্য মিশ্রিত পানি টিপদী খালের উপর ফেলে। এ খাল দিয়ে বিষাক্ত পানি উপজেলার সনমান্দি, পৌরসভা ও মোগরাপাড়া ও পিরোজপুর ইউনিয়নের শাখা খাল থেকে শুরু করে মেনীখালি ও ব্রক্ষ্মপুত্র নদের গিয়ে মিশে নদীর পানি কালো ও দুগর্ন্ধ হয়ে পড়ে ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এতে খালে মাছ নষ্ট হয়ে মাছ শুন্য হয়ে পড়েছে খালগুলো। এছাড়া বর্ষা মৌসুমে বর্জ্যগেুলো পানির সাথে মিশে তিনটি ইউনিয়নের ফসল ও ফসলী জমি গুলো নস্ট করে ফেলেছে। কালো পানি ও বিষাক্ত বর্জ্যরে কারণে মাছ খামারীরা তাদের মাছ চাষ বন্ধ করে দিয়েছে। এতে চরম ভোগান্তীতে পড়েছে চারটি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ।
স্থানীয়রা জানায়, চৈতী কম্পোজিট কর্তৃপক্ষ এলাকার কিছু প্রভাবশালীকে ম্যানেজ করে রাতের আধারে গোপন সুয়ারেজের মাধ্যমে তাদের বিষাক্ত বর্জ্যযুক্ত পানি বিভিন্ন খাল ও নদীতে ফেলে। ফলে বিকাল বেলা খালের পানির রং থাকে এক সকাল বেলা হয়ে যায় আরেক। তাদের ফেলা বর্জ্যগুলো এতটাই বিষাক্ত যে এ পানি শরীরের যেখানে লাগে সেখানে চুলকানি হয়ে ঘাঁ হয়ে যায়। এ ঘাঁ থেকে ইনফেকশন হয়ে অনেককে হাত-পা হারিয়ে চিরতরে পঙ্গুত্ব বরন করেছে। অনেকে আবার বর্জের পানিতে থাকা বিষাক্ত কেমিক্যালে স্বাসকষ্ট ও এলাজিসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। কম্পোজিটটি পানি পরিশোধনের জন্য ইটিবি নির্মান করলেও তা ব্যবহার করছেনা। সরকারের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বা পরিবেশ অধিদপ্তরের লোক জন পরিদর্শনে আসলে তা ব্যবহার করে অন্য সময়গুলোতে ইটিবি ব্যবহার করেনা।
স্থানীয়রা আরো অভিযোগ করে বলেন, চৈতী কম্পোজিটের কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে স্থানীয় প্রশাসন, স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তি ও বিশেষ পেশার লোকদের বিশেষ সুবিধা দিয়ে এসব কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে চৈতী কম্পোজিটের আশপাশে লোক বসবাস অযোগ্য হয়ে পড়বে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হবে পরিবেশ। চৈতী কম্পোজিটের আশপাশের খাল-বিল নদীনালা ও জলাশয়গুলোকে রক্ষা করতে হলে সরকারের নিয়মনুযায়ী ইটিবি ব্যবহার একান্ত জরুরী।
এ ব্যাপারে পৌরসভার মেয়র সাদেকুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তার মোবাইল ফোনটি ঊহৃ পাওয়া গেছে।
এব্যাপারে জানাতে চাইলে চৈতী কম্পোজিটের এজিএম মিজানুর রহমান জানান, আমাদের কোম্পানীর পানি ইটিবে ব্যবহারের মাধ্যমে পরিশোধিত করে বের করি। এক ফোটা পানিও আমরা খালে ফেলিনা।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহীনুর ইসলাম জানান, এ ব্যাপারে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।