নিউজ সোনারগাঁ২৪ডটকম ঃসোনারগাঁও পৌরসভার ছিটানো মশার ঔষধে কাজ করছেনা বলে অভিযোগ করেছেন পৌরবাসী। সারা দেশে এডিস মশার প্রকোশ বেড়ে যাওয়ার পর পৌরসভা কর্তৃপক্ষ পৌরসভার কয়েকটি স্থানে মশা নিধনের জন্য ঔষধ ছিটানো শুরু করে। তবে ডাকঢোল পিটিয়ে ঔষধ ছিটানো শুরু করলেও এখন পৌরসভার অনেক স্থানে ঔষধ দেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে। আবার যেখানে ঔষধ দেয়া হয়েছে সেখানে কার্যকারী ঔষধ ছিটানো হচ্ছেনা বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে। ফলে ঔষধ ছিটানোর একদিন পরই তা আগের মতো বাসা-বাড়িতে ফিরে আসছে মশা। তবে বর্তমানে যে ঔষধ ছিটানো হচ্ছে তার শতভাগ কাজ করছে না বলে পৌর কর্তৃপক্ষ স্বীকার করে জানান আগামী সপ্তাহ ১০দিনের মধ্যে নতুন ঔষধ কিনে তা ছিটানোর ব্যবস্থা করা হবে।
জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে ২০০১ সালের দিকে আমিনপুর ইউনিয়নকে সোনারগাঁও পৌরসভা হিসেবে ঘোষনা করা হয়। তৎকালিন সময়ে আমিনপুর ইউনিয়নটি পৌরসভা করার মত প্রয়োজনীয় অবকাঠামো না থাকলেও সাবেক জাতীয়পার্টির এমপি আনম বাহাউল হক আমিনপুর ইউনিয়নটিকে পৌরসভার অর্ন্তভুক্ত করেন। সেসময় থেকেই একটি পৌরসভার যা যা দরকার তার অধিকাংশই ছিলনা এ পৌরসভায়। এখনও অনেক এলাকায় গড়ে উঠেনি রাস্তাঘাট, পানি নিস্কাশনের ড্রেনেজ ব্যবস্থা , সাপ্লাই পানির ব্যবস্থা, নেই ময়লা আবর্জনা ফেলার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। এরমধ্যে বর্তমানে পৌরসভার মানুষ মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। এ বছর শীত মৌসুম আশার পর থেকে পৌরসভায় মশার প্রকোপ তীব্র আকার ধারন করে। সে সময় পৌরবাসী মশার ঔষধ ছিটানোর জন্য পৌরসভাকে অনুরোধ করলেও পৌর মেয়র সাদেকুর রহমান দেই দিচ্ছি বলে কাল ক্ষেপন করে কিন্তু ঔষধ ছিটানো কোন ব্যবস্থা না করায় বর্ষা মৌসুম শুরু সঙ্গে সঙ্গে পৌরসভাতে ডেঙ্গুর প্রকোপ উদ্বেগজনকরভাবে বেড়েছে। ইতিমধ্যে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয় বেশ কয়েকজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এদিকে, সারা দেশে যখন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মানুষ মৃত্যুও হার বাড়ছে তখন সরকারের নির্দেশে পৌরসভার একটি রাস্তা নামে মাত্র পরিস্কার করে কয়েকটি এলাকায় মশার ঔষধ ছিটিয়ে দায় সাওে পৌর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু যে মশার ঔষধ ছিটানো হচ্ছে সে ঔষুধ কাজ করছেনা বলে অভিযোগ করেছেন পৌরবাসী। তারা জানান, পৌরসভা পক্ষ থেকে ২জন ব্যক্তি বিভিন্ন এলাকায় ঔষধ ছিটানোর কাজ করছে। তারা বাসা বাড়িতে এসে ঘরের চারদিকে ঔষধ ছিটিয়ে চলে যান। বাড়ীর আশপাশে ঝোপজাড় ও অপরিস্কার মজা পুকুরে ছিটানোর কথা বললে তারা বলেন এখানে ঔষধ দেয়ার পারমিশন আমাদের নেই। তাছাড়া যে ঔষধ ছিটানো হচ্ছে তার একদিন পর মশার যে অবস্থা ছিল সে অবস্থায় ফিরে এসে। এছাড়া ছিটানো ঔষধের কার্যকারীতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। এতে করে গত এক সপ্তাহে পৌরসভায় ১০ জনের মত ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন বিভিন্ন হাসপাতালে। তবে, দিন যত বাড়ছে পৌরসভার বিভিন্ন স্থানে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে।
সংশ্লিষ্ট গবেষক ও সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, পৌরসভার বহু বছর ধরে মশা মারতে একই ওষুধ বা কীটনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে। দীর্ঘ ব্যবহারে এ অকার্যকর হয়ে পড়েছে ওষুধ। মশা ওষুধপ্রতিরোধী হয়ে উঠেছে। মশা মারতে হলে নতুন ওষুধ ব্যবহার করতে হবে। কীটনাশকের বাইরে অন্য বিকল্প পন্থাও বেছে নিতে হবে।
এ ব্যাপারে মশার ঔষধ ছিটানোর তত্ত্ববধানকারী পনির হোসেন বলেন, পৌরসভার বিভিন্ন স্থানে ঠিক মতো ঔষধ দেয়া হচ্ছে কিনা সেটা দেখার দায়িত্ব আমার কিন্তু মশা মরছে কি মরছেনা সেটা আমার দেখার দায়িত্ব আমার নয়।
এ ব্যাপারে পৌরসভার সচিব সামসুল আলম জানান, আমাদের যে ঔষধ পৌরসভায় দিচ্ছি তা সরকারী নিয়ম মেনে কেনা হচ্ছে। তবে এ ঔষুধে এসিড মশা মরেনা সাধারণ মশা মরে। তাহলে কি পৌরসভাবাসী মশা থেকে বাঁচতে ভাল ঔষধ পাবে না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান আগামী ১০/১২ দিনের মধ্যে নতুন ঔষধ ও নতুন মেশিন কিনে ঔষধ ছিটানোর ব্যবস্থা করবো।
মশার ঔষধ ছিটানোর পরও মশা মরছেনা তা স্বীকার করে পৌর মেয়র বলেন, আমাদের লোক সীমিত, অর্থ সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে। সেজন্য আমরা ঠিক মত ঔষধগুলো ছিটাতে পারছিনা। তাছাড়া বর্তমানে আমরা যে ঔষধ ছিটাচ্ছি তা কাজ করছেনা ইভেন আমার বাড়িতেও দেখেছি ঔষধ দেয়ার এক ঘন্টার মধ্যে মশা আবার ফিরে এসেছে। তবে, কিছু দিনের মধ্যে ভাল ঔষধ কিনে পুনরায় ছিটানো বলে বলে জানান পৌর মেয়র সাদেকুর রহমান।