আমাদের দেশে শীতকালে প্রতিবছর যে পরিমাণ ঠাণ্ডা পড়ে, এবার তার চেয়ে অনেক বেশি পড়েছে। উত্তরাঞ্চলে ৩ ডিগ্রির নিচে রেকর্ড পরিমান ঠাণ্ডা ছিল গত সপ্তাহে। কিন্তু বিশ্বের এমন কিছু জায়গা আছে, যেখানকার ঠাণ্ডার তুলনায় এ ঠাণ্ডা একেবারেই কিছু না।
রাশিয়ার এমনই একটি গ্রামের নাম ওইমিয়াকন। এটি বিশ্বের শীতলতম গ্রাম। এখানে এত আবহাওয়া এত ঠাণ্ডা হয় যে পারদ নামতে নামতে থার্মোমিটার পর্যন্ত ভেঙে যায়।
মঙ্গলবার ইয়াকুশা অঞ্চলের ওই গ্রামে তাপমাত্রা নেমেছিল মাইনাস ৬৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। উত্তর-পূর্ব রাশিয়ায় সাইবেরিয়া অঞ্চলে গ্রামটির অবস্থাণ।
ইয়াকুশা মস্কো থেকে ৩ হাজার ৩শ’ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত। সেখানে মাইনাস ৪০ ডিগ্রিতেও স্কুল খোলা থাকে। রোববার সেখানে প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় জমে মারা গেছেন দুইজন। গাড়ি নষ্ট হওয়ায় রাস্তায় বের হওয়ার পর তারা ঠাণ্ডায় জমে যান।
ইয়াকুশার গ্রাম ওইমিয়াকনে মঙ্গলবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে মাইনাস ৬৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মানুষের বসতি আছে এমন স্থানের মধ্যে শীতলতম ওইমিয়াকন।
মাইনাস ৬৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস ডিজিটাল থার্মোমিটার ধারণ করতে পারে না, অর্থাৎ ভেঙে যায়। কেননা, এই থার্মোমিটারে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা দেয়া আছে মাইনাস ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এরকম প্রচণ্ড ঠাণ্ডা পড়লে স্থানীয়রা আশ্রয়শিবিরে চলে যান। স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। রাস্তায় হঠাৎ দু’ একজনকে চোখে পড়ে, তারা হয়তো সেলফি তোলার জন্য বের হন, অর্থাৎ চোখের পাতা জমে কেমন হয় সেটার ছবি তোলেন।
প্রত্যন্ত এই গ্রামটি সবসময়ই বরফে ঢাকা থাকে। কিন্তু শীতকালে ভয়াবহ ঠাণ্ডা পড়ে সেখানে। এই গ্রামে থাকেন প্রায় ৫০০ জন মানুষ। গ্রীষ্মের সময়ে আগে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকত ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি, ২০১০ সালে সেই তাপমাত্রা পৌঁছেছিল ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
এখানকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ডটটি ছিল ১৯৩৩ সালে, মাইনাস ৬৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মানুষের বসতি আছে এমন স্থানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড এটি। নাসা থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড অ্যান্টার্কটিকায়, মাইনাস ৯০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে।