নিউজ সোনারগাঁ টুয়েন্টিফোর ডটকম: প্রশাসনের চোখের সামনে দখলদাররা একটু একটু করে বালু ভরাট করে ফেলছে সোনারগাঁ উপজেলার পিরোজপুর ও পৌরসভার উপর দিয়ে প্রবাহিত মারীখালী নদীটি। দখলদাররা দিনের আলোতে নদীতে বালু ফেলে ভরাট করে বাড়ীঘর নির্মান করার ফলে দিনে দিনে মরতে বসেছে এ নদীটি। ফলে নদীর পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে শুস্ক মৌসুমে শুকিয়ে খালে পরিনত হয় নদটি। স্থানীয়দের অভিযোগ প্রশাসন দখলদারদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন না করার এক জনকে দেখে আরেকজন উৎসাহী হয়ে নদীটি দখলের মহোৎসবে মেতে উঠেছেন। এতে করে অল্প কিছু দিনের মধ্যে হারিয়ে যেতে পারে এ নদটি।
স্থানীয়রা জানান, সোনারগাঁ উপজেলার বৈদ্যেরবাজার এলাকার মেঘনা নদী থেকে প্রবাহিত হয়ে পৌরসভা পিরোজপুর ইউনিয়ন ও মোগরাপাড়া ইউনিয়নের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ব্রক্ষ্মপুত্র নদে গিয়ে মারীখালি নদীটি মিলিত হয়েছে। এক সময় এ খালটি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের মালামাল পরিবহন ও ট্রলার দিয়ে আড়াইহাজার মেঘনা ও উপজেলার বিভিন্ন এলাকার লোকজন যাতায়াত করতো। এ নদটির উপর নির্ভর করে বিভিন্ন ধরনের ফসল ফলাতো তিনটি ইউনিয়নের কয়েক হাজার হেক্টর ফসলি জমির কৃষকরা। নদের পানির উপর নির্ভর করে নদের দু’পাশে চাষাবাদ করা হতো বিভিন্ন ধরনের ফসল। অপরদিকে, ব্যবসা বানিজ্যের জন্য নদটির প্রয়োজনীতা ছিল অপরিসীম। এক সময় ব্যবসায়ীরা এ নদটি দিয়ে বন্দর নগরী নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, নরসংদী ও মুন্সিগঞ্জসহ আশপাশের কয়েকটি জেলা থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় মালামালসহ অন্যান্য ভারী মালামাল বহন করে বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে যেত। কিন্তু গত এক যুগ ধরে নদটির দু’পাশে জমির মালিকরা ভরাট করে বাড়ীঘর নির্মান করে খালটি সরু করে ফেলেছে। অনেকে আবার নদের উপরই পিলার তৈরী করে নির্মান করেছেন বড় বড় ইমারত। এতে করে নদীর প্রবাহ কমে গিয়ে শুস্ক মৌসুমে নদীর পানি শুকিয়ে মরা খালে পরিনত হয়। তখন নৌকা তো দুরের কথা মানুষ হেঁটে নদী পারাপার হয়। প্রশাসন খালটির উপর নজর না দেয়ায় এখনও অব্যাহত রয়েছে খালটির দখল। স্থানীয়রা জানান, প্রশাসন যদি এখনও ব্যবস্থা নেন তাহলে ঐতিহ্যবাহী মারীখালি নদটি এখন বাঁচানো সম্ভব। এতে এক দিকে যেমন নদীর দু’পাশের ফসলি জমিতে ফসল করে দেশের কৃষিকে বাঁচাতে পারবেন কৃষকরা অপরদিকে কম খরচে বিভিন্ন এলাকা থেকে মালামাল পরিবহনের খালটি হতে পারে একটি যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম।
এ ব্যাপারে সোনারগাঁ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) গোলাম মোস্তফা মুন্না জানান, আমি গত কয়েকদিন ধরে এখানে যোগদান করেছি। যাতায়াতের সময় নদটি আমি দেখেছি। নদী মাতৃক দেশে নদ-নদীর গুরুত্ব অপরিসীম। নদটি কে বা দখল করছে সে ব্যাপারে আমি খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো।