সারা দেশে এখন একটাই আতংক করোনা ভাইরাস।এ আতংক থেকে সোনারগাঁবাসীও মুক্ত নয়। দিন যত যাচ্ছে হুহু করে সোনারগাঁয়ে বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা। সরকারী হিসেবে সোনারগাঁয়ে মোট ২৯ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে ইতি মধ্যে মারা গেছেন ২জন। কিন্তু এতে কারো কোন মাথা ব্যাথা নেই। সবাই যে যার মতো করে বাইরে ঘুরাফেরা করছেন, আড্ডা দিচ্ছেন করোনাকে পাত্তাই দিচ্ছেন না। করোনা সংক্রমন থেকে রক্ষা পেতে সরকার ইতিমধ্যে যেসকল বিধি নিষেধ আরোপ করেছেন সেগুলো অমান্য করার ক্ষেত্রে সোনারগাঁ উপজেলা মনে হয় এক নম্বরে রয়েছে। কেননা রাস্তায় নামলেই চোখে পড়ে সোনারগাঁয়ের মানুষ করোনার বিধি নিষেধকে বৃদ্ধঙ্গুলি দেখিয়ে কিভাবে অবাঁধে চলাফেরা করছেন।
বিশেষ করে সোনারগাঁয়ের ব্যস্ততম বানিজ্যিক এলাকা মোগরাপাড়া চৌরাস্তার অবস্থা খুবই ভয়াবহ। সরকার যেখানে শর্ত সাপেক্ষে ঔষধ ও নিত্যপন্যের দোকানগুলো খোলা রাখার কথা বলেছেন সেখানে চৌরাস্তায় ফার্নিচার, হার্ডওয়ার, কসমেটিক্স, জুতা, সেলুন, স্বর্নের দোকান, টিভি ফ্রিজের দোকান, মোবাইল মার্কেট, সিমেন্টের দোকানসহ প্রায় সব দোকানই খোলা রয়েছে। এসব দোকানে ক্রেতারা করোনা বিধি না মেনে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন এতে সোনারগাঁয়ে করোনা ঝুঁকি চরম আকার ধারন করছে।
এমন পরিস্থিতিতে চৌরাস্তা এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের জন্য প্রশাসনের কোন সক্রিয় ভূমিকা দেখা যায়নি। হয়তো প্রশাসন কাজ করতে করতে এখন অনেকটাই ক্লান্ত পরিশ্রান্ত না হয় নিময় ভঙ্গকারীদের উপর ত্যক্ত বিরক্ত। প্রকাশ্য দিবালোকে লক ডাউন ভেঙ্গে যেভাবে দোকানপাট খোলা হচ্ছে তাতে সোনারগাঁবাসীর জন্য সামনে যে মহাবিপদ অপেক্ষা করছে তা নিশ্চিত ভাবেই বলা যায়।
ব্যাবসায়ীরা ধীরে ধীরে দোকানপাট খুলছেন প্রশাসন কিছুই বলছে না সুতরাং সাধারণ মানুষও এ সুযোগে প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে মার্কেটমুখী হচ্ছেন। চৌরাস্তা এলাকাসহ উপজেলার প্রায় প্রতিটি মার্কেটের একই চিত্র। কিছু কিছু ক্ষেত্রে দোকানের একটি সাটার খুলে দোকানী বসে থাকেন ক্রেতার আশায় এভাবেও অনেক দোকান খোলা রাখা হচ্ছে। সরকার একদিকে লক ডাউন ঘোষনা করে বসে আছেন অপরদিকে সবকিছুই খোলা হচ্ছে তাহলে এমন লক ডাউনের প্রয়োজন কী? সোনারগাঁয়ের কথা যদি বলি সোনারগাঁয়ে লক ডাউন পালনের কোন বালাই নেই । অবস্থা দেখে মনে হয় সোনারগাঁ থেকে লক ডাউন বুঝি তুলে দেয়া হয়েছে।
অনেকেই বলছেন পেটের দায়ে বাইরে বের হতে হয়। আসলে পরিসংখ্যান করলে বুঝা যেত এ পরিস্থিতিতে কত শতাংশ লোক পেটের দায়ে বের হচ্ছেন আর কত শতাংশ লোক অযথা বের হচ্ছেন। একটা শ্রেণিকে পেটের দায়ে বাইরে বের হতে হচ্ছে এটা অস্বীকার করার কিছু নেই কিন্তু অনেকেই বের হচ্ছেন অনর্থক তাদের বেলায় আমরা কি বলব? সোনারগাঁবাসীর এখনো শুভ বৃদ্ধির উদয় হয়নি। প্রতিদিন যেভাবে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে তাতে বিপদ প্রত্যেকের সন্নিকটে। এখনো সময় আছে প্রত্যেকে সচেতন হোন। অল্প কিছুদিন বাড়িতে অবস্থান করে যদি সবাই ভাল ও সুস্থ থাকতে পারি তাতে এ সাময়িক কষ্টটা সকলেরই মেনে নেয়া উচিত।
মনে রাখবেন অন্ধকারের পরেই আলোর হাতছানি। সুতরাং প্রত্যেকেই সচেতন হই, ঘরে অবস্থান করি, নিজে বাঁচি, সমাজ ও দেশকে বাঁচাই।
লেখকঃ সম্পাদক ও প্রকাশক, চারদিক