নিউজ সোনারগাঁ টুয়েন্টিফোর ডটকম: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) কাঁচপুর ইউনিয়ন শাখার দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে তৃণমূলের মতামতের উপেক্ষা করে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত করা হয়েছে রাজাকারের পুত্র খ্যাত মোমেন খানকে।
এ নিয়ে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এর আগে শুক্রবার (২৫ মার্চ) বিকেলে কাঁচপুরের সোনাপুর এলাকায় কাচঁপুর ইউনিয়ন বিএনপির আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকা বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সোনারগাঁও থানা বিএনপির আহবায়ক আজহারুল ইসলাম মান্নান তাকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মনোনীত করেন।
এ ঘোষণার পর সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী পীর মোহাম্মদ পীরু এর তীব্র প্রতিবাদ জানান। কারো মতামত না নিয়ে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। এসময় তার সমর্থকরা মোমেনকে প্রত্যাখান করে ভোটের মাধ্যমে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করার দাবি জানান। এ নিয়ে পীরু এবং তার সমর্থকদের সাথে বিএনপি নেতাদের বাকবিতন্ডা দেখা যায়।
তখন আজহারুল ইসলাম মান্নান পীরুকে শান্ত করে তাকে ধৈর্য ধারণ করার অনুরোধ করেন।
তিনি পীরুর উদ্দেশ্য বলেন, তোমাকে ভবিষ্যতে বিএনপির আরো বড় পদে দায়িত্বে দেওয়া হবে। দল যা সিদ্ধান্ত নিয়েছে তুমি আপাতত তা মেনে নেও। এ কথা বলেই তিনি অনুষ্ঠান সমাপ্তি করে তড়িগড়ি করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
ইউনিয়ন বিএনপির নেতাকর্মীরা জানান, এই মোমেন খান মূলত একজন রাজাকার পুত্র হিসেবে এলাকায় পরিচিত। তার বাড়ির সকলে আওয়ামীলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। মোমেন সোনারগাঁ থানা বিএনপির সদস্য সচিব মোশারফ হোসেনের বন্ধু। সেই সুবাধে তাকে ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব পদ দিয়েছেন মোশারফ। তবে তার নিজ বাড়ি ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডেই নেই তার কর্মী সমর্থক। তাকে বিএনপির কোনো কাজেই দেখা যায় না অথচ তাকেই কিনা সাধারণ সম্পাদক বানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, নারায়গঞ্জের সোনারগাঁয়ের প্রতিটি ইউনিয়নে সম্মেলন করে নেতৃত্ব নির্বাচন করছে দলটি। ইতোমধ্যে উপজেলার একাধিক ইউনিয়নে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নেতা নির্বাচন করেছে দলটি। তবে কাঁচপুর ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলনে একজন রাজাকারের ছেলে সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় এ নিয়ে দেখা দিয়েছে বিতর্ক। এ ইউনিয়নে সভাপতি পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হয়েছেন সেলিম হক এবং সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হিসেবে ছিলেন পীর মোহাম্মদ পীরু, সজল হোসেন ও রাজাকারের পুত্র খ্যাত মোমেন খান।
জানা যায়, মোমেন খানের বাবা নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানার (ইউনিয়ন কাঁচপুর) বাসিন্দা হোসেন খাঁ মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত মুক্তিযুদ্ধ কোষের তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম খন্ডে এবং রীতা ভৌমিক তার মুক্তিযুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ বইতে ১৯৭১ এ নারায়ণগঞ্জে স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার, আল বদর, আল শামস, মুজাহিদ, শান্তি কমিটির সদস্য , রাজনৈতিক নেতা কর্মী সবাইকে এক কথায় যারাই মুক্তিযুদ্ধে বিরোধিতা করেছে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত করেছেন। সেই সময়কার অনেক রাজাকার ও তাদের বংশধররা আজ রাজনীতিতে, সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত বলে জানান সোনারগাঁবাসী। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ভূমিকায় ছিলেন হোসেন খাঁ।