নিউজ সোনারগাঁ২৪ডটকমঃ
বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো এবারও আওয়ামীলীগের দলীয় প্রতিক নৌকার মনোনয়ন বঞ্চিত হতে পারে সোনারগাঁ উপজেলার মনোনয়ন প্রত্যাশী হাফ ডজন নেতা। এমনটাই শুনা যাচ্ছে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছ থেকে। ফলে মহাজোট থেকে জাতীয়পার্টির লাঙ্গল প্রতিক মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা অনেকাই নিশ্চিত বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কয়েকজন হেবী ওয়েট রাজনৈতিক নেতারাও। এদিকে টানা দুবার নৌকার মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে সোনারগাঁ আওয়ামীলীগের রাজনীতি অনেকটাই বিলুপ্ত হতে যেতে পারে বলে ধারনা করছেন আওয়ামীলীগ ও তৃনমুল নেতারা।
জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের দীর্ঘদিনের দাবী হচ্ছে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনেই নৌকা প্রতিকের প্রার্থী দেয়া। নৌকা প্রতিকের প্রার্থী ব্যতীত অন্য কোন প্রতিকের প্রার্থী না দেয়ার ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও উপজেলার প্রায় সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ। নৌকা প্রতিকের নির্বাচন করার উদ্দেশ্য নিয়ে ইতোমধ্যে সোনারগাঁ আওয়ামীলীগের অনেক নেতাকর্মীই মাঠে রয়েছেন। তবে দলীয় প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যে কেন্দ্র করে আপাতত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে সে সকল মনোনয়ন প্রত্যাশীদের স্বপ্ন ভঙ্গ হচ্ছে।
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের ৬৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার ২৩ জুন গণভবনে অনুষ্ঠিত বর্ধিত সভায় সভাপতির বক্তব্যে দলীয় প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচন প্রসঙ্গে বলেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্বাচন আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আবার জয়লাভ করে সরকার গঠন করতে পারে, সেই চিন্তা নিয়ে কাজ করতে হবে। ‘জোট করেছি, মহাজোট করেছি। দলের স্বার্থে এটা করতে হয়েছে। আগামীতেও আমরা এটা করবো। আমরা বন্ধু হারাবো না। সবাইকে নিয়েই থাকতে চাই। এজন্য যতটুকু আত্মত্যাগ করতে হবে তা করবো। বড় দল হিসেবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বটা এক্ষেত্রে বেশি।’
তাঁর এই বক্তব্যে অনেকেই ধারণা করছেন হয়তো আগামীতেও নির্বাচনেও মহাজোট থাকছে। যদি মহাজোট থাকে তাহলে নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনের মধ্যে ২ টি আসনে জাতীয় পার্টির লাঙল প্রতিককে ছাড় দেয়া হবে বলে সকলেই অবগত রয়েছেন। এতে সোনারগাঁয়ের আসনটি চলে যাবে বিগত দিনের মতো লাঙ্গলের কাছে। যার জন্য মাঠে কাজ করছেন বর্তমান এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা।
যদিও সোনারগাঁয়ের আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা বলেছেন, জাতীয় পার্টিকে ছাড় দিতে হলে দেশের অন্য কোন জেলায় ছাড় দেয়া হোক। তবে তারা প্রার্থী দেয়ার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর সিন্ধান্তকেই চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত হিসেবে মেনে নিবেন বলে ঐক্যমত রয়েছেন।
নারায়ণগঞ্জ-৩ সোনারগাঁ আসনে লাঙ্গলের প্রার্থী থেকে গেলে কপাল পুড়বে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী অনেক প্রার্থীদেরই। ইতিমধ্যে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতিকে মনোনয়ন পাওয়ার আশায় বুক বেঁধেছেন সাবেক এমপি কায়সার হাসনাত, উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন, উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালাম, ডাঃ আবু জাফর চৌধুরী বিরু, এএইচএম মাসুদ দুলালসহ আরো কয়েকজন নেতা। তারা নির্বাচনী মাঠও চষে বেড়াচ্ছেন। শেখ হাসিনার উন্নয়ন কর্মকান্ডকে জনগণের দ্বারে পৌছিয়ে দেয়ার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় নেতাদের নজরে আসার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জের দুটি আসনে কারা মনোনয়ন পাচ্ছেন এমন একটি খবর প্রকাশ করেছেন দেশের প্রথম সারির দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন। এতে বলা হয়েছে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে শামীম ওসমান ও নারায়ণগঞ্জ-২ আসনে নজরুল ইসলাম বাবু মনোনয়ন পেতে যাচ্ছেন। তাদের মনোনয়ন নিশ্চিত। যদিও বর্তমানে এ দুটি আসনে তারাই এমপি। কিন্ত বাকি ৩টি আসনে এখনো কোন প্রার্থী চুড়ান্ত করা হয়নি।
এদিকে, নারায়নগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগ ও উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতারা সোনারগাঁ আসনটি ছাড় না দেওয়ার জন্য জোড় তদবির চালাচ্ছে। অপরদিকে লিয়াকত হোসেন খোকা তাদের নৌকার মনোনয়ন প্রার্থীদের এ চাওয়াকে চ্যালেঞ্জ করে ফের জাতীয়পার্টির মনোনয়নের জন্য জোড় লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যেও মহাজোট করার কথা স্পষ্ট ভাবে প্রকাশ করেছেন। ফলে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের এমপি সেলিম ওসমান ও সোনারগাঁয়ের এমপি লিয়াকত হোসেন খোকাও দুটি আসন জাতীয়পার্টির কাছে রাখার জন্য দলের চেয়ারম্যানের কাছে জোড় লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া সোনারগাঁয়ে হাফ ডজনের মতো নেতা মনোনয়ন প্রত্যাশী হবার কারণে কারো উপর আস্থা রাখতে পারছেন না কেন্দ্র। ফলে সোনারগাঁ আসনটি জাতীয়পার্টিকেই ছেড়ে দেওয়ার সম্ভাবনা বেশী বলে মনে করেছেন রাজনীতিবিদরা। আর এ ম্যাসেজ সোনারগাঁ আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের অনেকের কাছেও পৌচ্ছে গেছে বলে জানিয়েছেন তারা। ফলে এ আসনটিতে আগামীতেও লাঙ্গলের প্রার্থী থাকছেন!।