নিউজ সোনারগাঁ২৪ডটকম:
সোনারগাঁ উপজেলার মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকার রয়েল স্পেশালাইজড হসপিটারে সুলতানা নামের এক প্রসূতির ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত মঙ্গলবার বিকালে প্রসূতি সুলতানাকে সিজার করতে হাসপাতালে ভর্তি করে স্বজনরা। পরে গতকাল বুধবার রাতে তার মৃত্যু হয়।
সুলতানার স্বজনরা জানান, উপজেলার মোগরাপাড়া চৌরাস্তার এলাকার কলেজ রোডে রশিদ প্লাজার ২য় তলায় রয়েল স্পেশালাইজড হসপিটারে গত মঙ্গলবার বিকালে প্রসব ব্যাথা উঠলে সুলতানাকে তার স্বামী মোহাম্মদ আলী ভর্তি করান। সেখানে গাইনী ডাক্তার ফারহানা তার স্বামীকে বলেন সুলতানাকে দ্রুত সিজার করতে হবে নয়ত রোগীর সমস্যা হতে পারে। এ কথা শুনে সুলতানার স্বামী ভয় পেয়ে ডাক্তার ফারহানা বলেন আলট্টাসোনোগ্রাম ছাড়া কি তাকে সিজার করা যাবে? এমন প্রশ্নের জবাবে ডাক্তার ফারহানা জানান করা যাবে কোন সমস্যা হবে না। তখন ডাক্তার ফারহানা সুলতানাকে দ্রুত সিজার করতে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যান। সন্ধ্যা ৬টার দিকে সুলতানা একটি পুত্র সন্তানের জম্ম দেয়। কিন্তু সিজার শেষে ডাক্তার জানান, সুলতানার জলায়ুর ফুল (প্যালাসেন্টা) কেটে গেছে। আলট্টা সোনোগ্রামের সময় জলায়ুর ফুলটি শিশুর নিচে না উপরে ছিল সেটি বুঝা যায়নি। তাই সিজার করার সময় জলায়ুর ফুলটি কেটে গিয়ে ব্লিডিং হচ্ছে। তার জন্য রক্ত লাগবে। এ সময় স্বজনরা ৩ ব্যাগ রক্ত তাৎক্ষনিক যোগার করেন। কিন্তু রক্ত দেয়ার পরও সুলতানার রক্ত বন্ধ না হলে ডাক্তার ফারহানা তাকে চিটাগাং রোড প্রো-একটিভ হাসপাতালে প্রেরণ করে। সেখানে ঘন্টা খানিক রাখার পর কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে স্কয়ার হাসপাতালে প্রেরণ করে। সেখানে ফের সুলতানাকে অপারেশন করা হলে তার শারীরিক কিছুটা উন্নতি হলে ডাক্তার তাকে আইসিওতে রাখেন। পরে গতকাল রাত ১০টার দিকে সুলতানা মারা যান।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ডাক্তার ফারহানার সাথে যোগাযোগ করা হলে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে সোনারগাঁ স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হালিমা সুলতানা জানান, এ ঘটনা শুনার পর আমি হাসপাতাল পরিদর্শন করে মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জেন অফিসে রির্পোট পাঠিয়েছি। রির্পোট আসলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
এ ব্যাপারে সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, হাসপাতালের ব্যাপারগুলো নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জেন দেখেন। পর পর দুটি মাতৃ মুত্যুর ঘটনা দুঃখ জনক উল্লেখ করে তিনি জানান সিভিল সার্জেন রোগী মৃত্যুর ঘটনায় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি করে দিয়েছেন। রির্পোট পেলেই এসব হাসপাতালগুলির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া শুরু করবো।