নিউজ সোনারগাঁ টুয়েন্টিফোর ডটকম: নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আবু হাসনাত মােহাম্মদ শহিদ বাদল দায়িত্ব পালন করছেন। দলীয় প্রটোকল অনুযায়ী এরাই নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়মী লীগের অভিভাবক । কিন্তু কমিটি গঠনের পর থেকে এখন পর্যন্ত কোনাে কিছুতেই তারা অভিভাবকের পরিচয় দিতে পারছে না। অভিভাবক হয়েও নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের কাছে নালিশ দিতে হয়। তারা নিজেরা কোনাে সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না।
জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের সূত্রে জানা গেছে, ২৯ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের একটি গ্রুপ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজমের সাথে আওয়ামী লীগের এই গ্রুপের মধ্যে ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই, সহ সভাপতি মিজানুর রহমান বাচ্চু, খবির উদ্দিন, মাে : শিকদার রসূল, সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মােহাম্মদ শহীদ বাদল, যুগ্ম সম্পাদক আবু জাফর চৌধুরী বিরু, ইকবাল পারভেজ, দপ্তর সম্পাদক এম এ রাসেল ও সদস্য অ্যাডভােকেট শামসুল ইসলাম ভূইয়া সহ অন্যান্য নেতৃৃৃৃৃৃবৃন্দ।
সাক্ষাতের মূল উদ্দেশ্য ছিল নারায়ণগঞ্জ -২ আসনের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবুর বিরুদ্ধে মির্জা আজমের কাছে নালিশ করা। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই বাবুর বিরুদ্ধে নানা নালিশ করেন মির্জা আজমের কাছে। সেই সাথে উপস্থিত অন্যান্য নেতাকর্মীরাও নানা নালিশ করেন । তবে আব্দুল হাই ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল পারভেজই বেশি কথা বলেছেন।
আর এসকল নালিশের মধ্য রয়েছে। নজরুল ইসলাম বাবু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করেন না। বিএনপি জামাত নেতাকর্মীদের সাথে তার সখ্যতা বেশি। প্রমাণ হিসেবে ইকবাল পারভেজ বিভিন্ন লিফলেট দেখান মির্জা আজমকে। কথা না শুনলে দলীয় নেতাকর্মীদের গালাগালি করেন নজরুল ইসলাম বাবু। এই গালিগালাজের প্রমাণ হিসেবে ইকবাল পারভেজ নজরুল ইসলাম বাবুর একটি অডিও রেকর্ডও শুনান মির্জা আজমকে। তবে মির্জা আজম তাদের এসকল অভিযােগ শুনে বলেন, এগুলাে দেখার দায়িত্ব জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের। বিশেষ করে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এগুলাে দেখবেন । আমার কাছে অভিযােগ করার তাে কিছু নেই। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অন্যান্য নেতাকর্মীদের নিয়ে বসে এসকল বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবেন।
এর আগে ২০১৯ সালের ১৫ জুলাই সােনারাগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের চলমান কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন আহবায়ক কমিটির ঘােষণা দিয়েছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই ও সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মােহাম্মদ শহীদ বাদল। একই সাথে সােনারগাঁ আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালামকে সােনারগাঁ আওয়ামী লীগ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
আহবায়ক কমিটিতে সামসুল ইসলাম ভূইয়া আহবায়ক এবং সােনারগাঁয়ের পিরােজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমানকে যুগ্ম আহবায়ক করা হয়। কিন্তু এই আহবায়ক কমিটি ঘােষণার পর পরই জেলা আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট নেতারা সভাপতি আব্দুল হাই ও সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ বাদলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘােষণা করেন এবং কেন্দ্রীয় আওয়মী লীগে অভিযােগও করেন। সেই সাথে সােনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারাও বিদ্রোহ করে আহবায়ক কমিটির বিরুদ্ধে মাঠে নামেন। সােনারগাঁ আওয়ামী লীগের গঠনকে কেন্দ্র করে ২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর জামপুর ইউনিয়নের ওটমা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জামপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের আহবায়ক কমিটি ঘােষণা উপলক্ষে বিদ্যালয় মাঠে এক জনসভার আয়ােজন করেন সােনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য ডাঃ আবু জাফর চৌধুরী বিরু। যেখানে উপস্থিত থাকার কথা ছিল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই এবং সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ বাদল। সেই কথা অনুযায়ী তারা উপস্থিতও হয়েছিলেন সম্মেলনস্থলে। কিন্তু বিদ্রোহী পক্ষের নেতাকর্মীদের বাধার মুখে পড়ে তাদেরকে বিনা সফলতায় ফিরে আসতে হয়। ফলশ্রুতিতে বিদ্রোহী কমিটির নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই। কিন্তু এরপর আর সভাপতি হিসেবে আব্দুল হাই নিজে কালামের বিরুদ্ধে কোনাে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি। ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তাকে কেন্দ্রের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়। জেলা আওয়ামীলীগের অভিভাবক হিসেবে কোন দায়িত্ব তিনি পালন করতে পারেননি।