ছোট পোশাক। চড়া মেকআপ। যে মহিলাকে আপনি দেখছেন তিনি সদ্য পা রেখেছেন ফিল্মি দুনিয়ায়। তবে দেখে মোটেই নভিস মনে হচ্ছে না। বরং পেশাদার মডেল বা অভিনেত্রীদের সঙ্গে দৃশ্যত খুব একটা তফাত চোখে পড়ছে না অনেকেরই।
ইনি মাস কয়েক আগে ক্রিকেটার স্বামীর ‘বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক’কে প্রকাশ্যে এনে শিরোনামে এসেছিলেন। স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করেছিলেন। আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে দাম্পত্য কলহ। শিশু সন্তানদের নিয়ে তাঁর লড়াইয়ের কথা বারবার বলেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছিলেন। পেয়েছিলেন নিরাপত্তারক্ষী। সব মিলিয়ে স্বামী অর্থাত্ মহম্মদ শামির সঙ্গে সাংসারিক দ্বন্দ্ব এনে ফেলেছিলেন খোলা হাটে। মহম্মদ শামির স্ত্রী হাসিন জাহান ফের ফিরলেন শিরোনামে। এ বার নিজের কেরিয়ার নিয়ে।
সদ্য ফিল্মি দুনিয়ায় পা রেখেছেন হাসিন। এসকেপ (ESCAPE) এবং সরি (SORRY)— দুটো শর্ট ফিল্মে অভিনয় করে ফেলেছেন তিনি। সব কিছু ঠিক থাকলে অগস্টে মুক্তি পাবে এই দুটি ছবি। গত ছ’মাসের মধ্যেই যেন আমূল বদলে গিয়েছে হাসিনের জীবন। ‘‘আমি এখন পুরোপুরি মডেলিংয়ে চলে এসেছি। দুটো শর্ট ফিল্মও করলাম। এই জগতেই থাকব এখন’’— ফোনের ওপারে যেন খুশি খেলে গেল হাসিনের গলায়।
হাসিন নিজস্ব ঠিকানা খুঁজছেন বলিউডেও। তাঁর দাবি, বলিউডের অফারও রয়েছে তাঁর কাছে। এখনই ছবির নাম বলতে চাইলেন না। তবে দু’জন পরিচালকের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগের কথা স্বীকার করে নিলেন।
অভিনয় ও মডেলিংয়ের নতুন পর্ব শুরু হাসিনের।
গত ছ’মাস কী ভাবে কেটেছে হাসিনের? শামির বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ যখন সামনে আনছিলেন, তখন কাঁটাছেড়া চলছিল তাঁকে নিয়েও। তখনই প্রকাশ্যে এসেছিল তাঁর প্রথম বিয়ের কথাও। হাসিনের দাবি, ওই পরিস্থিতিতে মানসিক চাপে তিনি ডিপ্রেশনে চলে গিয়েছিলেন। ‘‘আমি যে কী ভাবে ছিলাম, বললে হয়তো অনেকেরই বিশ্বাস হবে না। চরম ডিপ্রেশন ছিল আমার। তবে যাঁরা আমার ভাল চান, তাঁরা উত্সাহ দিয়েছিলেন। নিজের পায়ে দাঁড়াতে বলতেন তাঁরা। সে জন্যই নতুন উদ্যোগে শুরু করছি। সকলেরই সাপোর্ট চাই’’— আত্মবিশ্বাসী হাসিন একটানা বলে থামলেন।
হঠাত্ মডেলিং বা অভিনয় কেন? অন্য কোনও পেশার কথা কি ভাবেননি? এক সময়ের পেশাদার মডেল এবং আইপিএলের চিয়ারলিডার হাসিনের দাবি, এই দুনিয়ার প্রতি তাঁর দীর্ঘদিনের আগ্রহ। কিন্তু বেশি দূর এগোনোর সুযোগ হয়নি। আর সে জন্যও তিনি দায়ী করলেন শামিকেই। ‘‘আসলে আমি মডেলিং করি, এটা শামি চাইত না। বাড়ি থেকে বেরোতেই দিত না। ও তো ভয় পেত। বাড়ি থেকে বেরোলেই ওর কুকীর্তি জেনে ফেলতাম’’— রাগটা এখনও স্পষ্ট হাসিনের কথায়।
তখন সুখের সময়। শামি ও মেয়ের সঙ্গে হাসিন।
তা হলে শামির চ্যাপ্টার হাসিনের জীবনে কি একেবারেই ক্লোজ? ‘‘দেখুন শামির আমার ব্যাপারে কোনও আগ্রহ নেই। ও তো টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ করতে চেয়েছিল’’— রেগে বলে ওঠলেন হাসিন। এখন বরং শামির তুলনায় নিজের মডেলিং, অভিনয় নিয়ে কথা বলতে অনেক বেশি উত্সাহী তিনি।
তবে শামির চ্যাপ্টার মন থেকে মুছে ফেললেও বাস্তবে এখনও তাঁর বিরুদ্ধে তিনটি মামলা চালাচ্ছেন হাসিন। হাসিনের আইনজীবী জাকির হুসেন জানালেন, স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেছিলেন হাসিন। সেই মামলায় মহম্মদ শামিকে ইতিমধ্যেই জেরা করা হয়েছে। ওঁর আত্মীয়দেরও জেরা করা হয়েছে। লালবাজার এখনও তদন্ত করছে। শামির কাছ থেকে পরিবার প্রতিপালনের জন্য প্রতি মাসে ১৫ লক্ষ টাকা দাবি করেছিলেন হাসিন। সেই মর্মে একটি খোরপোষের মামলাও দায়ের করেছিলেন। সেটিও চলছে। এ ছাড়া শামি একটি এক লক্ষ টাকার চেক হাসিনকে দিয়েছিলেন। সেই চেক বাউন্স করে। তারও একটি মামলা চলছে।