নিউজ সোনারগাঁ টুয়েন্টিফোর ডটকম: পৃৃত্রিক সূত্রে সদ্য ঘোষিত উপজেলা আওয়ামীলীগের আহবায়ক কমিটিতে সদস্য পদ পেয়েছেন জামপুর ইউনিয়নের মাহাবুর রহমান লিটন। আহবায়ক কমিটিতে উড়ে এসে জুড়ে বসা লিটনের পদ পাওয়া নিয়ে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের দেখা দিয়েছে মিশ্ল প্রতিক্রিয়া। বিশেষ করে এ নিয়ে জামপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সিনিয়র নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে চাপা ক্ষোভ।
মাহাবুর রহমান লিটনের পদ পাওয়া নিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই জানিয়েছেন, তার বাবা জামপুর ইউনিয়নের দীর্ঘদিন ইউপি সদস্য ছিলেন সে সময়ে তিনি আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন এবং মাহাবুব রহমান লিটন তার মামাতো ভাই ভাল ছেলে সেই কারনে তাকে আহবায়ক কমিটির সদস্য করা হয়েছে।
মাহাবুব রহমান লিটন জানিয়েছেন, তিনি ছাত্র জীবন থেকেই আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি ঢাকার এক আত্মীয়ের সাথে ঢাকার বিভিন্ন সভা সমাবেশে যোগ দিয়েছেন। তবে তিনি যে আত্মীয়ের নাম বলেছেন তিনি বিএনপি রাজনীতির সাথে জড়িত বলে জানিয়েছেন সেই আত্মীয়ের গ্রামবাসী। বর্তমানে তার সেই আত্মীয় সরকারের একটি গুরুত্বপুর্ন প্রশাসনিক দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি আরো জানান, লেখাপড়া শেষ করে তিনি সাইপ্রাস চলে যান সেখান থেকে দেশে ফিরে ঢাকায় একটি ট্রাভেলস এজেন্সির সাথে জড়িত হন। বর্তমানে সেখানেই তিনি রয়েছেন।
সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা জানান, চলতি মাসের ২২ তারিখে উপজেলা আওয়ামীলীগের আহবায়ক কমিটি পূর্নবিন্যাস করা পর। সেই কমিটিতে সাবেক এমপি কায়সার হাসনাতকে যুগ্ন আহবায়ক করে ৮ সদস্য বিশিষ্ট কমিটিকে পূর্নবিন্যাস করে ১৯ সদস্য বিশিষ্ট করা হয়। সেই কমিটি ঘোষনা করার পর মাহবুবু হোসেন সরকার ও মাহবুর রহমান লিটন নামের দুই সদস্যকে নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়। কমিটির ঘোষনার দিন রাতে উপজেলার ইটালী থেকে মাহবুব হোসেন সরকার নামের এক ব্যক্তি আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আযম এমপির ছবি সম্বলিত একটি পোষ্টার পোষ্ট করেন। তখন খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায় তার বাড়ী শম্ভুপুরা ইউনিয়নে। পরে অবশ্য মাহবুব সরকারের বিষয়টি জেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্পষ্ট করেন। সেখানে তারা জানান, মাহবুব হোসেন সরকার নামে যে ব্যক্তি আহবায়ক কমিটিতে স্থান পেয়েছেন তিনি বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। যদিও পরে তাকে নৌকার বিদ্রোহী হিসেবে আহবায়ক কমিটি থেকে বাদ দেয়া হয়। তার পরিবর্তে কমিটিতে নেয়া হয় উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মাসুদ রানা মানিককে। অপর দিকে মাহবুব রহমান সরকার লিটন নামের ব্যক্তিকেও সনাক্ত করতে পারেনি উপজেলা আহবায়ক কমিটি। পরে খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে তার বাড়ি জামপুর ইউনিয়নে। তিনি একটি ট্রাভেলস ব্যবসার সাথে জড়িত।
আহবায়ক কমিটিতে স্থান পাওয়া মাহবুব রহমান লিটনের ব্যাপারে মিশ্ল প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন উপজেলা আহবায়ক কমিটির সদস্য ও সিনিয়র নেতাকর্মীরা। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, জেলা আওয়ামীলীগের নেতারা একটি পকেট আহবায়ক কমিটি নামে একটি কমিটি ঘোষনা করে দলের ভেতর কোন্দলের সৃষ্টি করে। পরে যদিও সেটিকে পুন্যবিন্যাস করে ১৯ সদস্য বিশিষ্ট করে কিন্তু সেখানে অনেক সিনিয়র নেতাকে বাদ দিয়ে নতুন অপরিচিত ও জেলা নেতাদের আত্মীয়দের নেয়া হয়। নেতারা আরো জানান, মাহাবুর রহমান লিটন নামের যে ব্যক্তিকে কমিটিতে নেয়া হয়েছে, সে ব্যক্তিকে উপজেলা আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে দেখা যায়নি। তিনি জেলা নেতাদের আত্মীয় হওয়ায় তাকে দলে অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে। তিনি সোনারগাঁয়ে এসেই জেলা নেতার আত্মীয়তার ক্ষমতা দেখিয়ে সিনিয়র নেতাকর্মীদের সাথে খারাপ আচারন করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন।
মাহাবুর রহমান লিটনের সাথে আলাপ-চারিতায় তিনি জানান, তিনি দীর্ঘদিন আওয়ামীলীগের সাথে জড়িত। তিনি অনেক দিন দেশের বাহিরে থাকার কারণে রাজনীতির সাথে কিছুটা দুরত্ব তৈরী হয়েছে। এখন তিনি উপজেলা আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে মনোনিবেশ করে দলকে শক্তিশালী করতে কাজ করবেন।