নিউজ সোনারগাঁ টুয়েন্টিফোর ডটকম: দীর্ঘদিন পর সোনারগাঁ থানা বিএনপির রাজনীতিতে কেন্দ্রীয় নির্দেশিত কর্মসূচিতে সোনারগাঁয়ে বিএনপির দুটি গ্রুপের রাজপথে দেখা মিলে। হঠাৎই একটি গ্রুপ মাঠে সংক্রিয় হওয়াতে বেশ আলোচনা সমলোচনা শুরু হয়ে যায় সোনারগাঁয়ের রাজনীতিক মহলে। হঠাৎ আচমকা তাদের দেখা মিললেও আবারও মুখ থুবড়ে পড়ে উড়ে এসে জুড়ে বসা গ্রুপটি।
গত ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির ৪৪ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে র্যালি বের করার সময় নারায়ণগঞ্জ দুই নম্বার রেল গেইট এলাকায় পুলিশের লাঠি চার্জে গুরুতর আহত হন সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান। এ ঘটনায় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশের দায়ের করা মামলার আসামীও হন মান্নান। কিন্তু এই ঘটনায় বিএনপির ৪৪ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে র্যালি বের করার সময় সেদিন দেখা যায়নি নতুন আচমকা রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়া গ্রুপটির প্রধান সাবেক এমপি রেজাউলকে এবং তার গ্রুপের নেতাদের। এই ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মামলায়ও তার নাম শুনা যায়নি।
জানা যায়, বিএনপির ৪৪ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্য র্যালি বের করার সময় নারায়ণগঞ্জ দুই নম্বার রেল গেইট এলাকায় পুলিশ ও নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের সময় পরিস্থিতি শান্ত করতে অবস্থান করেন মান্নান। কিন্তু পুলিশ উল্টো লাঠি – পেটা শুরু করে দেয় মান্নানের উপর। পরবর্তীতে সোনারগাঁ থানা বিএনপির নেতা কর্মীরা উত্তেজিত হয়ে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে একটি মানবঢাল তৈরী করে পুলিশের লাঠি চার্জ থেকে মান্নানকে উদ্ধার করে। পরবর্তীতে গুরুতর আহত অবস্থায় নেতাকর্মীরা একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে মান্নানকে। এই ঘটনায় সোনারগাঁয়ের কয়েকশত বিএনপি নেতা কর্মী আহত হয় এবং ২৫ জন নেতা গুলিবিদ্ধ হয়।
আরও জানা যায়, সেদিন এই সংঘর্ষের ঘটনার কয়েক ঘন্টা অতিবাহিত হওয়ার পর পরই সোনারগাঁ থানা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নানের বাড়িটি ঘিরে রাখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। কিন্তু বিএনপির ৪৪ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে দেখা যায়নি হঠাৎ সোনারগাঁ বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে উঠা সাবেক এমপি রেজাউলকে নেতাকর্মীদের।
জানা যায়, ২২ আগষ্ট জ্বালানী তেল, পরিবহন ভাড়া, দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধি ও ভোলায় ছাত্রদল এবং স্বেচ্ছাসেবক দল নেতাকে হত্যার প্রতিবাদে কাঁচপুর এলাকায় অধ্যাপক ওয়াহিদ বিন ইমতিয়াজ বকুলের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন সাবেক এমপি রেজাউল করিম। দীর্ঘদিন আন্দোলন সংগ্রাম থেকে দূরে থাকা এই নেতা সোনারগাঁয়ের রাজনীতিতে ব্যাপক আলোচনা সমলোচনার জন্ম দেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় এই কর্মসূচি পালনের পর থেকেই আবারও যেন তিনি রাজনীতির মাঠ থেকে হারিয়ে গিয়েছেন এমনটিই প্রমান করলেন রেজাউল করিম।
গত ১ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জে বিএনপির ৪৪ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকিতে র্যালীতে অংশগ্রহণ করতে কোথাও তার উপস্থিতি বা তাকে রাজনীতিতে আবার সংক্রিয় করা নেতা অধ্যাপক ওয়াহিদ বিন ইমতিয়াজ বকুলকে দেখা যায়নি।
সূত্রে জানা যায়, ১/১১ সময় কেন্দ্রীয় বিএনপির কর্মসূচীর বিরুদ্ধে গিয়ে পাল্টা কর্মসূচী পালন করে বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে মাইনাস ফর্মুলার সংস্কারবাদীদের অন্যতম নেতা ছিলেন। অধ্যাপক রেজাউল করিম।
তিনি সোনারগাঁয়ে মাইনাস ফর্মুলার অন্যতম রাজনীতিবীদ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। তিনি নির্বাচন আসলেই রাজনীতির মাঠে সক্রিয় হয়ে উঠেন আর সক্রিয় হয়েই সোনারগাঁয়ে তার বিরোধী বিএনপি নেতাদের মাইনাস করতে উঠে পরে লাগেন। আরও জানা যায়, ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে সোনারগাঁ থানা বিএনপির অন্যতম নেতা মান্নানকে দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত করতে বহু কুটকৌশল করেন। কিন্তু ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে যান সেই আজহারুল ইসলাম মান্নান। তারপর ২০১৮ সালের পর আবারও তিনি রাজনীতির মাঠ থেকে হারিয়ে যান ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচন থেকে শুরু করে বহু আন্দোলন সংগ্রাম হামলা মামলা এর মধ্যে দুঃসময় পার করে বিএনপির নেতারা। কিন্তু এই সময়গুলোতে তাকে খুঁজে পায়নি বিএনপির কর্মীরা এবং গত কয়েক বছরে তার বিরুদ্ধে কোন মামলাও হয়নি।
আবারও তিনি সামনে সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দলের সুবিধাজনক অবস্থা দেখে এবং পাল্টা কর্মসূচি পালন করে রাজনীতিতে তিনি সক্রিয় হতে চাচ্ছিলেন। কিন্তু গত ১ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জে বিএনপির ৪৪ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে র্যালিতে পুলিশের দ্বারা বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর হামলা ও যুবদল নেতা শাওন নিহত এবং এর পরবর্তীতে পুলিশের করা মামলার পর থেকে তাকে এবং তার নেতা-কর্মীদের কোন হদিস খুজে পাওয়া যাচ্ছে না। এর মাধ্যমে আবার তিনি জানান দিলেন দল সুবিধাজনক অবস্থায় না থাকায় আবারও তিনি রাজনীতি থেকে ব্যাকফুটে চলে যাচ্ছেন। তার এসব বিষয়ে অতিষ্ঠ হয়ে বিএনপির এক নেতা জানান, আন্দোলন সংগ্রামে এই নেতা এবং নেতার কর্মীরা নেই কিন্তু গ্রুপিং করা বা আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্য এবং বিএনপির মধ্যে কোন্দল সৃষ্টি করার জন্য এরা সময় বুঝে উঠে পড়ে লাগে। অর্থাৎ ঝোপ বুঝে কোপ মারা নামে সোনারগাঁয়ে এরা ব্যাপকভাবে পরিচিত।