নিউজ সোনারগাঁ টুয়েন্টিফোর ডটকম: সোনারগাঁও পৗরসভার বেইস এর সামনে দিয়ে প্রবাহিত খালটি অবৈধ ভাবে ভরাটের অভিযোগে গত ৯ অক্টোবর উপজেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালত সরেজমিনে তদন্ত করে জামান মিয়া নামের এক ব্যক্তিকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছিলেন। জরিমানা গুনার কয়েক দিনের মাথায় সে খালটি দখল করে বালু ভরাট করে দখল নিয়েছেন ইছাপাড়া গ্রামের প্রভাবশালী জামান মিয়া। খালটি ভরাট করার ফলে ইছাপাড়া গ্রামসহ আশপাশের এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবে বলে আশংকা করছেন স্থানীয়রা। তারা অভিযোগ করে বলেন, প্রশাসনের লোকজন সরেজমিনে পরিদর্শন করে জামানকে ধরে নিয়ে গিয়ে জরিমানা করার কিছুদিন না যেতেই জামান কিভাবে খালটি ভরাট করলো। আর খালটি যদি তার নিজের হয় তাহলে প্রশাসন কেন জরিমানা করলো ? এনিয়ে নানা প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা। তবে জামান দাবি করেন যে খালটি তিনি ভরাট করেছেন সেটি তার জমি সেজন্য তিনি বালু ভরাট করে টিনের ভেড়া দিয়ে জমিটি দখল নিয়েছেন।
জানা গেছে, সোনারগাঁও পৌরসভার দৈলেরবাগ মৌজা হয়ে বেইস এর পাশ ঘেঁষে ইছাপাড়া ও তাছপুর গ্রামের ভেতর দিয়ে একটি খাল প্রবাহিত হয়ে পাশ্ববর্তি আরেকটি বড় খালে সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। খালটি ইছাপাড়া ও তাছপুরসহ আশপাশের এলাকার বৃষ্টির পানি ওই খালে গিয়ে পড়তো। কিন্তু গত ৯আগষ্ট ইছাপাড়া গ্রামের জামান নামের এক ব্যক্তি বেইস এর সামনের ব্রিজের নিচে বাঁধ দিয়ে খালটি বালু ভরাটের চেষ্টা করে। প্রশাসনের লোকজন খবর পেয়ে সেখানে সরেজমিনে পরিদর্শন করে জামান মিয়াকে আটক করে উপজেলায় নিয়ে যায়। পরে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতিকুর ইসলাম তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন এবং খালটি যাতে দখল না করেন সেজন্য মুচলেকা দেন। মুচলেকা ও জরিমানা গুনার মাত্র কয়েক দিন পর ব্রিজটির নিচ দিয়ে খালটি বাঁধ দিয়ে বালু করে সেখানে টিনের ভেড়া দিয়ে দখল করে নিয়েছেন জামান মিয়া।
খাল দখলের ব্যাপারে স্থানীয়রা ক্ষোভে প্রকাশ করে বলেন, খালটি অনেক পুরোনো এ খাল দিয়ে এক সময় মেঘনা নদী থেকে মালীখালী নদ হয়ে সরাসরি অনেক দর্শনার্থী জাদুঘরে ঘুরতে আসতো। কিন্তু স্থাণীয় লোকেরা খালটি নাল জমি দেখিয়ে নিজের নামে নামজারী করে কয়েকটি অংশ ভরাট করে ফেলেছে। এতে দিঘিরপাড়ম ইছাপাড়া ও তাজপুর এলাকায় কৃত্রিম জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে খালের পানি রাস্তায় চলে এসে রাস্তাঘাট ডুবে যায়। এখন খালের অবশিষ্ট অংশ ভরাট করার ফলে আগামী বর্ষাকালে বৃষ্টির পানি সরতে না পেরে হয়তো আশপাশের বাড়ীঘর ও পানাম হতে মোগরাপাড়া সড়কটির দিঘিরপার এলাকার একটি অংশ ডুবে যাবে। এতে দূর্ভোগে পড়বে তিন গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ।
এ ব্যাপারে জামান মিয়া জানান, জমিটি আমার ব্যক্তিগত। প্রশাসনের লোকজন না জেনে শুনে আমাকে ধরে নিয়ে জমিমানা করেছে। পরে আমি এক রাজনৈতিক নেতাকে সাথে নিয়ে কাগজপত্র দেখানোর পর তারা জমিটি ভরাটের অনুমতি দিয়েছে। এছাড়া এটাকে যারা খাল বলছেন তারা জানেন না যে এ খালটি বেইস পর্যন্ত শেষ। অবশেষে তিনি স্বীকার করেছে এক সময় এক সময় এ ব্রিজটির নিচ দিয়ে খড়স্রোতের পানি প্রবাহিত হতো এখন আর সেই খড়স্রোত নেই।
এ ব্যাপারে সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতিকুর ইসলাম জানান, সরকারী খাল ভরাটের খবর পেয়ে আমি সরেজমিনে গিয়ে জামান নামের এক ব্যক্তিকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছিলাম। পরে জামান মিয়া একজন নেতাকে সাথে নিয়ে জমির কাগজপত্র নিয়ে এসে খালটিসহ তার জমি বলে দাবি করে কাগজপত্র দেখিয়েছেন।