নিউজ সোনারগাঁ টুয়েন্টিফোর ডটকম: চলমান এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্রে অনৈতিক ভাবে প্রবেশের জন্য প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে সোনারগাঁ উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) এবং উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যানের সাথে দ্বন্ধ হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয় বাধা প্রয়োগ করায় প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার সহ হুমকি ধমকি দেওয়ার অভিযোগও পাওয়া গেছে। এতেই ক্ষ্যান্ত হয়নি উল্টো অন্যান্য জনপ্রতিনিধিদের ভুল তথ্য দিয়ে উপজেলার মাসিক সমন্বয় সভায় উপস্থিত না হওয়ার জন্য বিভ্রান্ত সৃষ্টি করেছেন।
এ নিয়ে সোনারগাঁয়ে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়েছে। এজন্য উপজেলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রকিবুর রহমানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তোলা হচ্ছে। তবে সব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে স্পষ্ট ভাষা জানিয়ে দিয়েছেন ইউএনও।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কাঁচপুর একটি স্কুলের শিক্ষক জানান, কাঁচপুর ওমর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র করা হয়েছে। সম্প্রতি উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বাবু ওমর ওই পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে অনৈতিক ভাবে প্রবেশের চেষ্টা করেন। প্রথমে পরীক্ষার নিরাপত্তা রক্ষায় থাকা পুলিশ সদস্যরা তাকে বাধা দেন। এ নিয়ে পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে তার বাকবিতন্ডা হয়। পরে পরিস্থিত নিয়ন্ত্রনে আনতে পরীক্ষা কেন্দ্রের সার্বিক পরিস্থিত নিয়ন্ত্রনে রাখার দায়িত্ব প্রাপ্ত নিয়ন্ত্রক সোনারগা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) আল মামুন ঘটনাস্থলে আসেন। তখন তিনি চেয়ারম্যানকে বুঝাতে চেষ্টা করেন এটা পাবলিক পরীক্ষা যেখানে বহিরাগতদের প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষেধ। যা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ রয়েছে। এ নিয়ে বুঝাতে চেষ্টা করলেও বাবু ওমর সহকারী কমিশনারের সঙ্গে অশুভনীয় ব্যবহার করেন। পরে তিনি ইউএনওকে ফোনে বিষয়টি জানান। কিন্তু ইউএনও তাকে প্রবেশ করার অনুমতি না দিয়ে চলে যাওয়ার জন্য বলেন।
সোনারগাঁ উপজেলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রকিবুর রহমান নিউজ সোনারগাঁ বলেন, ‘তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভাইস চেয়ারম্যান সাহেব বিভ্রান্ত সৃষ্টি করছেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ রয়েছে বহিরাগতদের যেন পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে না দেয়া হয়। সেই নির্দেশ পালন করতে গিয়েই চেয়ারম্যানকে প্রবেশ করতে বাধা দেয়া হয়। এমনও বলা হয়েছে যদি এসিল্যান্ড তাকে কেন্দ্র প্রবেশ করতে দেয় তাহলে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনের ব্যর্থতার জন্য আমরা বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতে পারে। কিন্তু তিনি তাতেও মানতে নারাজ। এজন্য এসিল্যান্ডের সঙ্গে বাকবিতন্ডা হয়।’
তিনি বলেন, এসিল্যান্ডের সঙ্গে আমি নিজে কথা বলেছি। সম্পূর্ণ বিষয়টি জেনেছি। একটা তুচ্ছ ঘটনা। কিন্তু কেন তিনি এনিয়ে আমরার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছেন আমার বোধগম্য নয়।
স্থানীয়দের মাধ্যমে জানা যায় মাসিক সমন্বয় কমিটির সভা জনপ্রতিনিধিরা বয়কট করেছেন? প্রশ্নের প্রেক্ষিতে ইউএনও বলেন, মাসিক সমন্বয় কমিটির সচিবের দায়িত্ব পালন করি আমি। আর এ সভার সভাপতি হলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। যদি বয়কট করা হয় তাহলে বিষয়টি তিনি দেখবেন। তাছাড়া এ বিষয়ে কেউ আমাকে কোন লিখিত ভাবে জানায়নি। এমনিতে গত বৃহস্পতিবারের সভায় কয়েকজন ছাড়া অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
অবৈধ বালু উত্তোলন সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রনে অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ‘অবৈধ বালু উত্তোলন বিষয়টি আজ কিংবা কয়েক মাসের নয়। দীর্ঘ দিন ধরে চলে আসছে। কিন্তু আমি দায়িত্ব গ্রহণের পর এ অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে একাধিক মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছি। কুমিল্লার জেলা প্রশাসক, বিআইডব্লিউটিএ, নৌ পুলিশ সহ উর্ধ্বতনদের কাছে চিঠি দিয়ে জানিয়েছি। যার অনুলিপি এখন আমার কাছে আছে। এ চিঠির প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে তারও কাগজ রয়েছে। চাইলে যে কেউকে দেখাতে পারি। তাই যেসব অভিযোগ তোলা হচ্ছে এটা সম্পূর্ণ ভাবে ভিত্তিহীন।
সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বাবু ওমরের মোবাইলে যোগাযোগ করলে নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বাবু ওমর হলেন ইউনিয়ন উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য। ক্ষমতাসীন দলের হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে কাঁচপুর এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে আসছেন। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অভিযোগ উঠলেও তেমন কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দেখা যায়নি।