নিউজ সোনারগাঁ টুয়েন্টিফোর ডটকম: ঈদের আগে কয়েক দিন বিভিন্ন জায়গায় পশুর হাট শেষ হলেও ঈদের দিন সোনারগাঁয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপুর্ণ বানিজ্যিক এলাকায় বসেছিল কোরবানীর মাংসের হাট। ঈদের দিন বিকেল বেলা এ হাট বসে বেশ কয়েকটি স্থানে যার বেশীর ভাগ ক্রেতা হলো এ এলাকার ভাড়াটিয়া আর বিক্রেতা হলো গবির অসহায় মানুষ।
সরেজমিনে ঈদের দিন বিকেল বেলা মোগরপাড়া চৌরাস্তা ও কাঁচপুর এলাকা ঘুরে দেখা যায়। বিকাল ৪টার পর থেকে ঝাঁকে ঝাকে মানুষ বাজারের ব্যাগ হাতে নিয়ে আসতে থাকে মোগরাপাড়া চৌরাস্তা ও কাঁচপুর বাসষ্ট্যান্ডের দিকে। তাদের দেখাই বুঝা যায় নিতান্তই গরিব। তাদের গায়ে ছিল পুরোনো জামা, আবার অনেকের জামা ছিল ময়লা। তারা উপজেলার বিভিন্ন বাড়ী বাড়ী ঘুরে এক টুকরো ২ টুকরো করে মাংস জমিয়ে নিজের প্রয়োজনের বাকিটা ৪০০-৫০০ টাকায় বিক্রি করে দিচ্ছে। সেজন্য তারা মোগরাপাড়া চৌরাস্তার বিভিন্ন মার্কেট ও ফুটপাতে ব্যাগ নিয়ে দাড়িয়ে থাকে। তখন যাদের মাংস দরকার তারা তাদের কাছ থেকে দরদাম করে কিনে নেন। তাদের ওজনে সহায়তা করার জন্য সেসব স্থানে কয়েকজন ওজন মাপার যন্ত্র নিয়ে বসে আছেন। সে জন্য তাদের দিতে হয় ১০টাকা করে।
মাংস বিক্রি করতে আসা এক ব্যক্তি জানান, তিনি সকাল থেকে বিভিন্ন বাড়ি বাড়ি ঘুরে ৫ কেজির মত মাংস পেয়েছেন। সে সোনারগাঁয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে সব সময় ভিক্ষে করেন। ঈদের দিনও তিনি বাড়িতে বাড়িতে ঘুরে মাংস তুলেছেন। বাড়িতে ফ্রিজ নেই এত মাংস খেতেও পারবেন না। তাই নিজের যতটুকু দরকার তা রেখে বাকিগুলো বিক্রি করে দিচ্ছেন। এতে নিজের যেমন কিছু টাকা আসলো আরেকজন কম দামে কোরবানীর মাংস খেতে পারলো।
আরেকজন বিক্রেতা জানান, সারা দিন বাড়িতে বাড়িতে ঘুরে এতটুকু মাংস পেয়েছি। এছাড়া মাংস তোলার সময় অনেকের বাড়ি চেয়ে কিছু মাংস খেয়েছি। তাই এগুলো বিক্রি করে দিয়ে যে টাকা পাব সে টাকা দিয়ে কতদিন চলবো।
মাংস কিনতে আসা এক ক্রেতা জানান, তিনি এখানে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করেন। সামর্থ্য নাই বিধায় কোরবানী করতে পারেনি। তার বাড়ি ওয়ালাও কোরবানী দেননি। কোরবানীর ঈদে মাংস খাবেন না এটা কেমনে হয় তাই পরিবারের জন্য কমদামে তাদের কাছ থেকে কোরবানীর মাংস কিনে বাড়িতে নিয়ে পরিবার নিয়ে খাবেন।