নিউজ সোনারগাঁ টুয়েন্টিফোর ডটকম: নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সিদ্ধিরগঞ্জে করােনায় মারা যাওয়া দুইজনের জানাযার নামাজে এলাকার কেউ উপস্থিত হননি। একজনের জানাযাতে এসেছিলেন ২ জন আর অপজনের জানাযাতে ৫ জন। অথচ তাদের একজন ছিলেন প্রচুর ধনী ব্যক্তি ও অপরজন ছিলেন নারী। টিম খােরশেদের একজন সদস্য এ সংক্রান্ত একটি ছবি পােস্ট করেন ফেসবুকে। সেখানে দেখা যায় বিশাল ঈদগাহ মাঠের মাঝে একটি কফিন। পাশে একজন লােক দাঁড়ানাে আর কেউ নাই ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে , সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি কান্দাপাড়া নিবাসী রফিকুল ইসলাম ( ৭৫ ) করােনা আক্রান্ত হয়ে ৩ জুলাই সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপাড়ের ইস্ট ভিউ হসপিটাল এন্ড ল্যাবে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। তার পরিবারের আহবানে টিম খােরশেদের স্বেচ্ছাসেবকরা হাসপাতাল থেকে মরদেহ বুঝে নেন। নেওয়া হয় এলাকাতে । সেখানে মাইকিং করা হয়েছিল। কিন্তু পরিবারের ২ জন ছাড়া আর কেউ আসেনি। মরদেহ যখন মাহমুদপুর ঈদগাহ মাঠে রাখা হয় সেখানেও লাশের আশেপাশে কেউ আসেনি। পাহারা দিতে হয়েছে টিম খােরশেদের লােকজনদেরকে প্রায় আধাঘণ্টা পর যে বাড়ির মালিক সে বাড়ির নিচে নেওয়া হলেও ভাড়াটিয়ারাও আসেনি। অথচ রফিকুল ইসলাম এলাকাতে ধনী লােক হিসেবেই খ্যাত ছিলেন । পরে টিম খােরশেদের লােকজন তাকে কান্দাপাড়া কবরস্থানে নিয়ে দাফন করেন ।
অপরদিকে সিদ্ধিরগঞ্জ ৮ নং ওয়ার্ড সৈয়দ পাড়া নিবাসী সালমা বেগম ( ৬৫ ) করােনায় আক্রান্ত হয়ে নারায়ণগঞ্জ করােনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে রােববার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। সােমবার সকালে মরহুমার পরিবারের আহবানে মরহুমাকে মাসদাইর কবরস্থানে গােসল শেষে এলাকার ঈদগাহ মাঠে নেওয়া হয়। সেখানে এলাকাতে মাইকিং করা হয়েছিল। কিন্তু পরিবারের ৫ জন ছাড়া আর কেউ আসেনি ।
দাফনে ছিলেন টিম খােরশেদ এর স্বেচ্ছাসেবক রানা মজিব , হাফেজ শিব্বির , আনােয়ার হােসেন , সুমন দেওয়ান , মােঃ শহীদ , শফিউল্লাহ রনি ও নাইম মােল্লা । তারা জানান , শুধু জানাযা নয় বরং দাফনের সময়েও কেউ ছিলেন না । পরিবারের ৪-৫জন থাকলেও তারা ছিলেন মরদেহ থেকে অনেক দূরে । গত বছর করােনার শুরুতে এ অবস্থা ছিল । বাবার লাশ ধরেনি সন্তানেরা । মায়ের লাশ ছুয়নি কেউ । বাবা মায়ের লাশ থেকে দূরে ছিল পরিবারের লােকজনও । মাঝখানে মানুষ সাহসী হয়ে করােনায় মৃতদের জানাযায় মােটামুটি আগ্রহ নিয়ে অংশ নিলেও বর্তমানের ডেল্টা ভ্যারিয়সনে । আবারাে মানুষের মধ্যে ভীতি ছড়িয়ে পরেছে । এখন আবার করােনা শুরুর দিকে যেমন দাফন জানাযায় মানুষ ভয়ে শরীক হতাে না , তেমনি পরিবেশের সৃষ্টি হচ্ছে ।