নিউজ ডেস্ক: আশরাফ হাকিমির মা সাইদা মৌ, ছেলেকে ফুটবলার তৈরি করবেন বলে স্পেনে ঘর পরিষ্কার করতেন। সাইদার স্বামী ছিলেন একজন স্ট্রিট হকার। রাস্তায় রাস্তায় জিনিসপত্র বিক্রি করতেন। ফুটবল তাদের জীবন বদলে দেবে, এটাই সবসময় মনে করেছেন সাইদা। ফুটবলার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর হাকিমি একজন প্রতিভাবান স্প্যানিশ অভিনেত্রী হিবা আবৌককে বিয়ে করেন।
গোল করে কেউ প্রিয় বান্ধবীকে উৎসর্গ করেন, কেউ প্রেমিক দিকে ছুঁড়ে দেন চুম্বন। কেউ আবার জার্সি খুলে গ্যালারির দিকে ছুটে যান। বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বেলজিয়ামের বিরুদ্ধে ২–০ ব্যবধানে জেতার পর মরক্কোর ডিফেন্ডার আশরাফ হাকিমিও গ্যালারির দিকে ছুটে গিয়েছিলেন। মরক্কোর পতাকা গায়ে জড়িয়ে থাকা এক মহিলার গালে এঁকে দিয়েছিলেন চুম্বন। সেই মহিলাও হাকিমিকে জড়িয়ে ধরে চুম্বন করেন। গোটা ফুটবল বিশ্ব অবাক হয়ে দেখেছিল হাকিমির সেই আচরণ। নিমেষের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায় সেই মিষ্টি ছবি। সেই মহিলা আর কেউ নন, আশরাফ হাকিমির জন্মদাত্রী।
দেখা গেছে। নিজের জীবনের মায়ের অবদান প্রসঙ্গে হাকিমি বলেন, ‘আমার বাবা-মা, ভাই, বোন আমাকে সবই দিয়েছে। বাবা–মা আমাদের জন্য আত্মত্যাগ করেছে। আমাদের সর্বোত্তম শৈশব দেওয়ার জন্য একটি নতুন ভাষা শিখেছে।’মরক্কোর হয়ে খেলার সিদ্ধান্তের বিষয়ে হাকিমি বলেছিলেন, ‘প্যারিসে আপনি শহরের দলের হয়ে খেলেন, কিন্তু আপনার দেশের দলের সাথে খেলা একই রকম নয়। লক্ষ লক্ষ মানুষ আপনাকে সমর্থন করবে কারণ আপনি তাদের হয়ে খেলেন। এটা আপনি আপনার দাদা এবং তাদের দাদার জন্য খেলার মত ব্যাপার।’।
করে কেউ প্রিয় বান্ধবীকে উৎসর্গ করেন, কেউ প্রেমিক দিকে ছুঁড়ে দেন চুম্বন। কেউ আবার জার্সি খুলে গ্যালারির দিকে ছুটে যান। বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বেলজিয়ামের বিরুদ্ধে ২–০ ব্যবধানে জেতার পর মরক্কোর ডিফেন্ডার আশরাফ হাকিমিও গ্যালারির দিকে ছুটে গিয়েছিলেন। মরক্কোর পতাকা গায়ে জড়িয়ে থাকা এক মহিলার গালে এঁকে দিয়েছিলেন চুম্বন। সেই মহিলাও হাকিমিকে জড়িয়ে ধরে চুম্বন করেন। গোটা ফুটবল বিশ্ব অবাক হয়ে দেখেছিল হাকিমির সেই আচরণ। নিমেষের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায় সেই মিষ্টি ছবি। সেই মহিলা আর কেউ নন, আশরাফ হাকিমির জন্মদাত্রী।
কলাপাতা রেষ্টুরেন্টের বিজ্ঞাপন
মা সাইদা মৌ–ই আশরাফ হাকিমির জীবন। প্রতিটি খেলার আগে এবং পরে তিনি তাঁর মায়ের সাথে ফোনে কথা বলেন কিংবা দেখা করেন। ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপেও খেলার পরে তাঁকে মায়ের চুম্বন করার একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা গেছে। নিজের জীবনের মায়ের অবদান প্রসঙ্গে হাকিমি বলেন, ‘আমার বাবা-মা, ভাই, বোন আমাকে সবই দিয়েছে। বাবা–মা আমাদের জন্য আত্মত্যাগ করেছে। আমাদের সর্বোত্তম শৈশব দেওয়ার জন্য একটি নতুন ভাষা শিখেছে।’মরক্কোর হয়ে খেলার সিদ্ধান্তের বিষয়ে হাকিমি বলেছিলেন, ‘প্যারিসে আপনি শহরের দলের হয়ে খেলেন, কিন্তু আপনার দেশের দলের সাথে খেলা একই রকম নয়। লক্ষ লক্ষ মানুষ আপনাকে সমর্থন করবে কারণ আপনি তাদের হয়ে খেলেন। এটা আপনি আপনার দাদা এবং তাদের দাদার জন্য খেলার মত ব্যাপার।’
এই ঘটনার পেছনে রয়েছে এক মর্মস্পর্শী গল্প। আশরাফ হাকিমির মা সাইদা মৌ, ছেলেকে ফুটবলার তৈরি করবেন বলে স্পেনে ঘর পরিষ্কার করতেন। সাইদার স্বামী ছিলেন একজন স্ট্রিট হকার। রাস্তায় রাস্তায় জিনিসপত্র বিক্রি করতেন। ফুটবল তাদের জীবন বদলে দেবে, এটাই সবসময় মনে করছেন সাইদা মৌ। ফুটবলার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর হাকিমি একজন প্রতিভাবান স্প্যানিশ অভিনেত্রী হিবা আবৌককে বিয়ে করেন। সবই শুরু হয়েছিল মাদ্রিদের দরিদ্র রাস্তায়। প্রতিষ্ঠা পাওয়ার পরও প্রতিদিন বাবা–মার জন্য সংগ্রাম করেন আশরাফ হাকিমি।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে হাকিমি বলেছিলেন, ‘আমার মা ঘর পরিষ্কার করতেন এবং আমার বাবা একজন স্ট্রিট হকার ছিলেন। আমি একটা দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে এসেছ, যারা জীবিকা অর্জনের জন্য সংগ্রাম করেছিল। আজ আমি প্রতিদিন তাদের জন্য লড়াই করি। বাবা–মা আমার জন্য নিজেদের উৎসর্গ করেছে। আমার সাফল্যের জন্য ভাইদের অনেক কিছু থেকে বঞ্চিত করেছিল।’
হাকিমির মরক্কোর হয়ে খেলার ইতিহাস একটু অন্যরকম। বাবা–মা মরক্কোর হলেও পরে জীবিকার টানে স্পেনের মাদ্রিদে চলে যান। হাকিমি মাদ্রিদে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। স্পেনের হয়ে খেলতেও পারতেন। কিন্তু তিনি মরক্কোকে বেছে নিয়েছিলেন। যখন তার বয়স ৭ বছর, তাদের বাড়িতে একটা চিঠি এসেছিল। রিয়াল মাদ্রিদের ক্লাব ‘লস ব্ল্যাঙ্কোস’ থেকে এসেছে দেখে হাকিমির বাবা অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। তিনি হাকিমিকে ক্লাব থেকে আসা চিঠির কথা বলেছিলেন। হাকিমি প্রথমে বিশ্বাস করেননি। ভেবেছিলেন, বাবা পেছনে লাগছে। কিন্তু পরে দেখেন সত্যিই চিঠি এসেছে।লস ব্ল্যাঙ্কোসের পক্ষ থেকে হাকিমিকে চুক্তির প্রস্তাব দেওয়া হয়। এরপর তাঁর জীবনের গতিপথ ঘুরে যায়। মাদ্রিদে জন্মগ্রহণ করা সত্ত্বেও তাঁকে কম বয়সী অস্পেনীয় খেলোয়াড়দের মধ্যে ফেলা হয়। রিয়াল মাদ্রিদের রিজার্ভ এবং যুব দলে সারা জীবন খেললেও রিয়াল মাদ্রিদের সিনিয়র দলে খেলার আগে ফিফা তাঁকে ২০১৬ সালে নিষিদ্ধ করে। ফিফা শুধুমাত্র অভিবাসীদের কাছ থেকে নাম পরীক্ষা করেছিল যেখানে ছেলেটির জন্মস্থানের জায়গায় মরক্কোর নাম দেখেছিল এবং তাঁকে অন্যায়ভাবে শাস্তি দেওয়া হয়েছিল।
অবশেষে আইনের আশ্রয় নেন হাকিমি। মামলা জেতার পরে তিনি রিয়াল মাদ্রিদে ২০১৭ সালে সিনিয়র দলের হয়ে খেলার সুযোগ পান। পরে লোনে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডে গিয়েছিলেন। তিনি তাদের জার্মান সুপার কাপ জিততে এবং টানা দুই বছরের জন্য আফ্রিকান সেরা যুব ফুটবলার নির্বাচিত হন। ইন্টার মিলানে খেলার পর তিনি মেসির প্যারিস সাঁ জাঁ–তে যোগ দেন।