• রাত ৩:৫১ মিনিট শুক্রবার
  • ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  • ঋতু : গ্রীষ্মকাল
  • ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
এই মাত্র পাওয়া খবর :
সোনারগাঁয়ে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থীদের মধ্যে প্রতিক বরাদ্দ সোনারগাঁও পৌরসভায় কালামের কেন্দ্র কমিটির সভা সোনারগাঁয়ে বিশ বছর পর বাকপ্রতিবন্ধী ভাইকে ফিরে পেলেন তার বড় ভাই মাহফুজুর রহমান কালামকে বিজয়ী করেতে জামপুরে আলোচনা সভা সোনারগাঁয়ে প্রার্থীতা ফিরে পেলেন ৫ প্রার্থী সোনারগাঁয়ে ভবন ঘেঁষে মাটি খনন, ভেঙ্গে পড়লো পাশের স্থাপনা কালাম একমাত্র যোগ্য প্রার্থী, উপজেলা নির্বাচনে তাকে ভোট দিন: ডা. বিরু সোনারগাঁয়ে সার্বজনীন পেনশন মেলা ও স্পট রেজিষ্ট্রেশন কার্যক্রম উদ্ধোধন বন্দর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী মাকসুদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বউয়ের মামলা সোনারগাঁয়ে ৩ চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ ৯ প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ, ৪ জন বাতিল সোনারগাঁয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে যুবককে অপহরন করে নির্যাতনের অভিযোগ সানাউল্লাহকে ডাকাত আখ্যা দিয়ে হত্যা চেষ্টা ও ১৫ মামলার আসামী গ্রেপ্তার বন্দরে ইউএনও অফিসের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যের আত্মহত্যা সোনারগাঁয়ে ২দিন ধরে মাদ্রাসা ছাত্র নিখোঁজ সোনারগাঁয়ে দুই ব্যাক্তি আটক, ৪৯ লাখ জাল টাকা উদ্ধার অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন আজিজুল ইসলাম মুকুল সোনারগাঁয়ে ৩ চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ ১৪ জনের মনোনয়নপত্র দাখিল তাপদাহের প্রভাব পড়েছে সোনারগাঁয়ের বাজার ও মার্কেটগুলোতে মাহফুজুর রহমান কালামের নির্বাচনী প্রচারনায় নেতাকর্মীর ঢল সোনারগাঁ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভুল চিকিৎসায় নারীর মৃত্যুর অভিযোগ
বৈরি সময়ে বর্ণিল প্রকৃতি…রবিউল হুসাইন

বৈরি সময়ে বর্ণিল প্রকৃতি…রবিউল হুসাইন

Logo


মহামারী করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে এখন সর্বত্রই চলছে বৈরি সময়। মানুষ তার স্বাভাবিক জীবন যাত্রা থেকে অনেকটাই দূরে তাই বলে প্রকৃতি কী মুখ বুঝে বসে থাকবে? প্রকৃতি তার আপন নিয়মে রংয়ে বর্ণে অপরূপ হয়ে সাজিয়ে তুলছে নিসর্গকে। করোনার বৈরি সময়েও মানুষের মনকে প্রশান্তিতে ভরে তুলছে রং বাহারি প্রকৃতি। গ্রীষ্মের এ সময়ে অগ্নি ঝরা লাল কৃষ্ণচূড়া, বেগুনি রংয়ের জারুল, হলদেটে সোনালু ও রক্ত রাঙ্গা হিজল ফুল যেন প্রাণ প্রকৃতিকে দিয়েছে ভিন্ন মাত্রা। গ্রীষ্মের এমনি চারটি ফুল নিয়ে আজকের এ আয়োজন।

কৃষ্ণচূড়া
কৃষ্ণচূড়া গ্রীষ্মের অতি পরিচিত একটি ফুল।বাঙ্গলা কাব্য, সাহিত্য, সংগীত ও বিভিন্ন উপমায় কৃষ্ণচূড়াফুলের কথা ব্যাপক ভাবে ওঠে এসেছে।  কৃষ্ণচূড়ার আদিনিবাস মাদাগাস্কার। এ গাছ মধ্যম থেকে লম্বা গড়নের মাথা ছড়ানো হয়ে থাকে। এপ্রিল থেকে জুন মাস পর্যন্ত ফুল ফোটে। আগষ্ট থেকে অক্টোবরের মধ্যে ৩০-৬১ সেমি লম্বা শুঁটি অর্থাৎ ফল হয়ে থাকে। শোভাবর্ধকারী এ বৃক্ষটি গ্রামের পাশাপাশি এখনো কোন রকমে টিকে আছে শহরের পথে প্রান্তরে। আমাদের দেশে মূলত দুই ধরনের কৃষ্ণচূড়া ফুল ফুটতে দেখা যায়। একটি আগুনের মতো উজ্জ্বল লাল অন্যটি হলদেটে। তবে আমাদের দেশে লাল কৃষ্ণচূড়ার প্রাচুর্যতাই বেশী চোখে পড়ে । হলদেটে রংয়ের কৃষ্ণচূড়া বর্তমানে বেশ বিরল। সারা ঢাকা শহরে এখন সব মিলিয়ে গোটা দশেক হলদেটে ফুলের কৃষ্ণচূড়া গাছ আছে বলে জানা গেছে।
হলদেটে ফুলের কৃষ্ণচূড়াকে অনেকে রাধাচূড়া বলে থাকে। গ্রীষ্মে যখন লাল – হলুদ কৃষ্ণচূড়া ও রাধাচূড়া ফুলে ছেয়ে ওঠে সবুজ বৃক্ষ তখন দেখে মনে হয় কোন দক্ষ চিত্রশিল্পী বুঝি তার সুনিপুণ হাতে মেখে দিয়েছে রংয়ের ছটা। কৃষ্ণচূড়ার মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য সত্যিই সবাইকে বিমোহিত করে। কৃষ্ণচূড়ার রূপে মুগ্ধ হয়ে ব্যস্ত পথচারীও থমকে তাকায় কিছু সময়ের জন্য।

জারুল
গ্রীষ্মের দাবদাহে চোখ ধাঁধানো বেগুনি রংয়ের বিচ্ছুরন নিয়ে প্রকৃতিতে নিজের আগমনের কথা জানান দেয় জারুল ফুল। গ্রামবাংলার এক অন্যতম আকর্ষনীয় গ্রীস্মের ফুল হিসেবে জারুল অতুলনীয়। সবুজ প্রকৃতির বুকে বেগুনি জারুলের হাতছানি কিছুক্ষনের জন্য হলেও উদাস করে তোলে প্রকৃতিপ্রেমীকে। শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে জারুল গাছের আধিক্য লক্ষ করা যায়। সারা বছর যে গাছটি বাড়ীর পাশে সবার অলক্ষ্যে অযতœ অবহেলায় বাড়তে থাকে গ্রীষ্মে সেই গাছটিই বেগুনি রংয়ে রঙ্গিন হয়ে সকলের দৃষ্টি কেড়ে নেয়।  বৃক্ষ জাতীয় জারুল ফুলের আদি শ্রীলংকায়। পত্রঝরা এ বৃক্ষ শীতকালে পত্রশূন্য থাকে। বসন্তে গাঢ় সবুজ পাতা গজায়। জারুল গাছ সাধারণত ১০ থেকে ১৫ মিটার উঁচু হয়ে থাকে। গ্রীষ্মের শুরু থেকে শরত পর্যন্ত এর ফুল ফোটে থাকে। জারুল ভারতীয় উপমহাদেশের নিজস্ব বৃক্ষ। জারুল গাছের নানাবিধ ভেষজ গুণ রয়েছে। এর বীজ, ছাল ও পাতা ডায়াবেটিস রোগের ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও জ্বর, অনিদ্রা, কাশি ও অজীর্ণতায় জারুল উপকারী। চমৎকার বেগুনি রংয়ে রাঙ্গানো এ জারুল ফুল আমাদের মনের গহিনে জাগ্রত করে এক অন্য রকম ভাললাগা।

সোনালু
ঝুমকার মতো ঝুলে থাকা সোনালু ফুল যে কারো মন ছুঁয়ে যায়। সোনালী বর্নের ফুল হওয়ায় এটির নামকরন হয়েছে ‘সোনালু’। ইংরেজি ভাষায় একে বলা হয় গোল্ডেন শাওয়ার ট্রি।  হিমালয় অঞ্চল এর আদিনিবাস ধরা হলেও বাংলাদেশ, ভারত,পাকিস্তান ও মায়ানমার অঞ্চল জুড়ে এর বিস্তৃতি। মূলত সোনালু গাছ আমাদের দেশে ঔষধি গাছ হিসেবেই বেশী পরিচিত। গ্রামাঞ্চলে এ গাছকে অনেকে বানর লাঠি গাছও বলে থাকে। সোনালু গাছের ফল ঠান্ডা ও কাশি উপশমের জন্য বেশ উপকারী। এর বাকল ওপাতাও ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এটি ডায়রিয়া ও বহুমূত্র উপশম করে। আমাদের দেশে সোনালু গাছ আগের মতো তেমন একটা চোখে পড়েনা। তবে গ্রামে এখনো কিছু সোনালু গাছ দেখতে পাওয়া যায়। ঝুমকা ঝুমকা সোনালু ফুলের রূপ সৌন্দর্য সবাইকে নিয়ে যায় ভাবনার জগতে। গ্রীষ্মের বাতাসে হলুদ সোনালু ফুলের দোলা প্রকৃতিতে সৃষ্টি করে এক অন্য রকম আবহ। গ্রীষ্মের ফুল হিসেবে সোনালু ফুল এক কথায় অনন্য। প্রতি বছর গ্রীষ্মে হলুদ পরী হয়ে আমাদের মাঝে হাজির হয় সোনালু ফুল।

হিজল
বাংলাদেশে ঐতিহ্যবাহী গাছের মধ্যে হিজল গাছ একটি।  হিজল ডালপালা ছড়ানো দীর্ঘজীবী উদ্ভিদ। হিজল গাছের সংস্কৃত নাম নিচুল। এছাড়া কিছু কিছু স্থানে এটি জলন্ত, নদীক্রান্ত নামেও পরিচিত। হিজলের আদি নিবাস দক্ষিণ এশিয়া। গাছটি আমাদের প্রকৃতি থেকে দিন দিনই যেন হারিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে গ্রামে কিছু হিজল গাছের উপস্থিতি চোখে পড়লেও শহরে হিজল গাছের কোন অস্থিত্ব চোখে পড়েনা। হিজল গাছ মূলত পুকুর, খাল ও জলাশয়ের ধারে বেশী জন্মায়। এ গাছের গর্তে নিশাচর পাখীরা বাসা বানাতে ভালবাসে। তবে হিজল গাছের সবচেয়ে বেশী ভাললাগার দিকটি হচ্ছে এর চমৎকার ফুল। গ্রীষ্মের মাঝামাঝি সময়ে হিজল গাছে ফুল ফুটতে শুরু করে।রক্ত রাঙ্গা হিজল ফুলের লহরি আর মাতাল ঘ্রান সবাইকে বিমোহিত করে তোলে। সাধারণত রাতের বেলায় এ ফুল ফুটে সকালে ঝরে যায়। এসময় হিজল ফুল ঝরে পড়ে গাছের নিচে সৃষ্টি করে দৃষ্টি নন্দন পুষ্প শয্যা। হিজলগাছ যে কোন প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকতে পারে। কয়েক মাস পানির নিচে নিমজ্জিত থাকলেও হিজলগাছ বেঁচে থাকতে পারে। হাওর অঞ্চলে এ গাছের ডাল মাছের অভয়ারাণ্য তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। হিজলের ফল মারাত্মক বিষাক্ত হয়ে থাকে। চিরায়ত বাংলার হিজল ফুলের প্রেমে পড়ে অনেক কবি -সাহিত্যিক রচনা করেছেন বহু গল্প ও কবিতা। তাই বাঙ্গালী হৃদয়ে হিজল ফুলের আবেদন হয়তো কখনো ফুরাবার নয়।

লেখকঃ সম্পাদক ও প্রকাশক, চারদিক


Logo

Website Design & Developed By MD Fahim Haque - Web Solution