নিউজ সোনারগাঁ টুয়েন্টিফোর ডটকম: আধুনিক সভ্যতার যুগে হারিয়ে যাচ্ছে এক সময়কার সনাতন পদ্ধতিতে তৈরী করা আগের দিনে মানুষের বিভিন্ন উদ্ভাবনী বাহনগুলো। বিলুপ্ত হয়ে গেছে এক সময়কার ঘোড়া দিয়ে তৈরী করা মানুষের ঘোড়ার গাড়ী। যদিও পুরান ঢাকায় ঐতিহ্য রক্ষা করছে কিছু ঘোড়ার বাহন। কিন্তু আধুনিকতায় ছোয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে ঘোড়া কিংবা গাধা দিয়ে তৈরী করা মাল বহনকারী বাহনগুলো। কিন্তু এখনো অনেকে ঐতিহ্য রক্ষার পাশাপাশি খরচ বিহীন পরিবেশ বান্ধব সেই বাহনটিকে স্বযত্মে লালন করে যাচ্ছেন। এরমধ্যে সবির আহম্মেদ একজন। তার বাড়ি বন্দর উপজেলার সাবদি এলাকায়। যিনি এখনও বাহন হিসেবে ব্যবহার করছেন এক সময়কার মালটানার ঘোড়ার গাড়ী। তিনি প্রতিদিনই তার খামারের গরুর ঘাস ও ভুষি আনা নেয়ার কাছে ব্যবহার করছেন এ বাহনটি। প্রতিদিনই এই বাহনটির দেখা দিলে ঐতিহাসিক কাইকারটেক হাটে। সাবদি খামার থেকে প্রতিদিনই ঘোড়ার বাহনটি ৫ কিলোমিটার হেটে আসেন কাইকারটেক হাটে সেখান থেকে ভুষি ও অন্যান্য মালামাল নিয়ে রওয়ানা দেন খামারের পথে। এ ঘোড়ার গাড়ীর বাহনটি সাথে থাকেন মন্টু পরা মানিক ও লতিফ নামের ২জন শ্রমিক। তারা মাল বোঝাই করে ঘোড়ার গাড়ীতে করে প্রতিদিন ২/১ আসেন কাইকারটেক হাটে।
মন্টু পরা মানিক জানান, খামার মালিক সবির আহম্মেদ তার বাপ দাদার ব্যবহৃত ঐতিহ্যবাহী এ ঘোড়ার বাহনটি ধরে রেখেছেন। খামারের জন্য ঘাস, ভুষি ও বাড়ীর জন্য ভারী যে কোন জিনিস এ গাড়ীতে বহন করা যায়। খরচ কম ও পরিবেশ বান্ধব এ ঘোড়ার বাহনটি খুবই ভাল। অন্য গাড়ীর মতো কোন সমস্যা করে না। ঠিকমতো খাবার দিলেই ঘোড়া তার দায়িত্ব পালন করেন। তাছাড়া গরুকে যে খাবার দেয়া হয় ঘোড়াকে একই খাবার দেয়া হয় তাই খরচের দিক দিয়ে অনেক কম। এছাড়া ঘোড়া হলেও মানুষের হৃদয়ের সাথে সর্ম্পক গড়ে তুলেছেন নিবিড় ভাবে। দীর্ঘ ১০ বছর ধরে ঘোড়াটাকে দেখাশোনা করেন তিনি নিজেই। ঘোড়ার গাড়ীতে বসে ঘোড়ার গলায় লাগানো রশির মাধ্যমেই ঘোড়ার নিয়ন্ত্রন। ঘোড়ার সাথে থাকতে থাকতে ঘোড়াই তার সুখ দুঃখের সাথী। যখন তার মন খারাপ হয় তখই তিনি ঘোড়ার সাথে কথা বলেন। ঘোড়া কথা বলতে না পারলেও তার মনের ভাষা বুঝেন। ফলে একে অপরের প্রতি ভালবাসার বন্ধন তৈরী করে ফেলেছেন। তিনি জানান ঘোড়াটি অনেক সময় মাল বহন করতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে গেলে তাকে ইশারায় অনেকে কিছু বুঝাতে চেষ্টা করেন তিনিও তার ইশারার ভাষা বুঝতে পেরে সুখ দুঃখ ভাগাভাগি করে মালামাল বহন করে গন্তব্যে পৌচ্ছে দেন।