নিউজ সোনারগাঁ টুয়েন্টিফোর ডটকম; অন্য নারীর সাথে স্বামীর অবৈধ সম্পর্ক, সেদিনই গোপনে বিয়ে করতে যাচ্ছে; অজ্ঞাত নারীর মাধ্যমে এমন সংবাদ দিয়ে গৃহবধুকে বাড়ি থেকে বের করেন। স্বামীর সন্ধান দেওয়ার বাহানায় সাদা রঙের মাইক্রোবাসে তুলে করা হয় অপহরণ, এরপর আটকে রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করে মাহফুজ নামের এক ব্যক্তি।
শনিবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় অবস্থিত পিবিআই কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম ।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত মাহফুজকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
গত ২২ অক্টোবর সোনারগাঁয়ের এক গৃহবধূকে তার মোবাইলে ফোন করে শারমিন নামে এক নারী। ওই নারী গৃহবধূকে জানায়, তার স্বামীর সাথে অন্য এক মেয়ের অবৈধ সম্পর্ক আছে এবং তারা সেদিনই গোপনে বিয়ে করতে যাচ্ছে। শারমিন নামের সেই অজ্ঞাত নারীর কাছ থেকে এ খবর পেয়ে ওই গৃহবধূ তার স্বামীর মোবাইলে কল দিয়ে ফোন বন্ধ পান। এতে ওই গৃহবধূ দিশেহারা হয়ে অজ্ঞাত নারী শারমিনের সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে, শারমিন তাকে স্বামীর সন্ধান দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে মেঘনা সেতু এলাকায় যেতে বলে। শারমিনের কথামতো ওই গৃহবধূ সেখানে গেলে মাহফুজসহ আরো দুই তিনজন অজ্ঞাত ব্যক্তি তাকে একটি সাদা রঙের মাইক্রোবাসে তুলে অপহরণ করে নিয়ে যায়। প্রথমে যাত্রাবাড়ী ও গেণ্ডারিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে ঘুরায় অপহরণকারীরা, গৃহবধূকে অবচেতন করে দোহার এলাকায় মাহফুজের নিজ বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে আটকে রেখে মাহফুজ তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় ২৩ অক্টোবর সোনারগাঁ থানায় নিখোঁজর একটি সাধারণ ডায়রী করেন ওই গৃহবধুর স্বামী।
২৯ অক্টোবর রাতে রাজধানীর পোস্তগোলা এলাকা থেকে মুমূর্ষু অবস্থায় ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করেছে পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নারায়ণগঞ্জ। এরই সাথে অপহরণ ও ধর্ষণের ঘটনায় মাহফুজ নামে মূল অভিযুক্তকে পরদিন রাতে রাজধানীর দোহার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম জানান, ওই গৃহবধূ নিখোঁজ হলে তার পরিবার সোনারগাঁ থানায় একটি জিডি করেন। সেই জিডি ও নিখোঁজ গৃহবধূর মোবাইল ফোনের কল লিস্টের সূত্র ধরে তদন্ত শুরু করে নারায়ণগঞ্জ পিবিআই। প্রযুক্তির সহায়তায় ২৯ অক্টোবর রাতে রাজধানীর পোস্তগোলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে মেডিকেল পরীক্ষা করানো হয়। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরদিন ৩০ অক্টোবর রাতে দোহার এলাকা থেকেই মাহফুজকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাহফুজ স্বীকার করে, শারমিন তার বড় ভাই জসীমের স্ত্রী। তারা তিনজন মিলে পরিকল্পিতভাবে গৃহবধূকে অপহরণ করে। এ ঘটনায় নির্যাতিত গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে মাহফুজ, তার বড় ভাই জসীম ও জসীমের স্ত্রী শারমিনকে আসামি করে সোনারগাঁও থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
একই সাথে গ্রেপ্তারকৃত আসামি মাহফুজকে তিনদিনের রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে পাঠানোসহ অপর দুই আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।