নিউজ সোনারগাঁ২৪ডটকম: দখল ঠেকাতে নদীকে জীবন্তসত্ত্বা ঘোষণা দিয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে রায় দিয়েছে উচ্চ আদালত। রায়ে বাংলাদেশে কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে নদ-নদী দখলের অভিযোগ থাকলে তাকে সব ধরণের নির্বাচনে অযোগ্য করার ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একই সাথে এমন অভিযুক্ত ব্যক্তিকে কিংবা প্রতিষ্ঠানকে কোনো ব্যাংক থেকে ঋণ না দেয়ার ব্যবস্থা নেয়ারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গত ১ জুলাই প্রকাশিত এই রায়ে নদী দখলকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবেও চিহ্নিত করা হয়। তা সত্ত্বেও সোনারগাঁয়ে এক জনপ্রতিনিধি, শিল্পমালিক, ছাত্রলীগ নেতাসহ অনেকেই শীতলক্ষ্যা নদীর তীরবর্তী জায়গা অবৈধ দখল করে আছে।
রায়ে দখলদারদের তালিকা তৈরি করে তা প্রকাশ করার নির্দেশনাও দেওয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় দখলদারদের তালিকা চেয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসককে চিঠি দেয় জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন। তার পরিপ্রেক্ষিতে বিআইডব্লিউটিএ’র মাধ্যমে জেলা প্রশাসন দখলদারদের একটি তালিকা প্রস্তুত করে। তালিকায় কে-কী পরিমাণ কোন জায়গা দখল করে রেখেছেন তার আদ্যোপান্ত তুলে ধরা হয়েছে।
সেই তালিকায় নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের ১৮ দখলদারকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই তালিকায় আছে সোনারগাঁয়ের উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বাবুল ওমর (বাবু) ও সোনারগাঁ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাসেল মাহমুদ। আছে শিল্প প্রতিষ্ঠান জয়া ডাইং।
জানা গেছে, এই দুই নেতা কাঁচপুর মৌজার সেনপাড়া এলাকা দিয়ে শীতলক্ষ্যা নদীর তীর ভূমির ১০০০ বর্গফুট করে জায়গা ভরাট করে দখল করেছেন। অপরদিকে জয়া ডাইং ভরাট করে দখল করেছেন ৬০০০ বর্গফুট জায়গা। দখলদারদের তালিকায় আরও আছেন কাঁচপুর মৌজার সেনপাড়া এলাকার মো. এরশাদ, মো. আসফাক, মো. লাবু মিয়া, মো. সাইফুল ইসলাম, মো. খোকন মিয়া, মো. মনজুর হোসেন, মো. মজিানুর রহমান, মো. রাসেদ, মো. নিজাম উদ্দিন, মো. জামান খান, মো. মুসলিম খান, মো. আলমগীর, মো. মিলন খান, মো. কামাল সাওদ, মো. আছমত ওরফে নানা।
নদী দখলের বিষয়ে সোনারগাঁ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বাবুল ওমর বাবুর মুঠোফোনের নম্বরে কল করলে তিনি মিটিংয়ে আছেন জানিয়ে পরে কল করতে বলেন। এর দুই ঘন্টা পর আবার কল করলে অন্য একজন কল করে জানান, ভাই (ভাইস চেয়ারম্যান) সাহেব মিটিংয়ে আছেন পরে কল করেন।
এ বিষয়ে একাধিকবার সোনারগাঁ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাসেল মাহমুদের মুঠোফোনের নম্বর কল করলেও তিনি কোন সাড়া দেননি।
এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ’র নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের যুগ্ম পরিচালক মাসুদ কামাল বলেন, অবৈধভাবে দখল করে কেউ থাকতে পারে নাই। আমাদের অভিযান এখনও চলছে রূপগঞ্জে। সেখানেও কাউকে ছাড় দেওয়া হয়নি। অবৈধ দখলদার মানে সে কেবলই অবৈধ দখলদার। আদালতের রায় অনুযায়ী নদীর অবৈধ দখলকারীর আলাদা কোন পরিচয় নেই। আমরা পর্যায়ক্রমে কাজ করছি। শীঘ্রই সকল অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা হবে।সূত্র: প্রেস নারায়ণগঞ্জ