নিউজ সোনারগাঁ টুয়েন্টিফোর ডটকম: সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইদুল ইসলামের বিরুদ্ধে দাবিকৃত চাঁদা না পেয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার ও একজন ইউপি সদস্যকে বহিস্কারের অভিযোগ আনা হয়েছে। এ সংক্রান্ত উচ্চতর তদন্ত ও আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কে অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী ইউপি সদস্য কবির হোসেন। তবে, বিষয়টিকে ষড়যন্ত্র দাবি করে অভিযোগ প্রমানের আহ্বান জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইদুল ইসলাম।
অভিযোগ থেকে জানা যায়, পিরোজপুর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড মেম্বার কবির হোসেনকে গত ১২ এপ্রিল ত্রান আত্মসাৎ ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ এনে কারন দশানোর নোর্টিস প্রদান করেন স্থানীয় সরকার বিভাগ। নোর্টিসে উল্লেখ করা হয় করোনা ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট সংকট মোকাবেলায় সরকার কর্তৃক প্রদত্ত ত্রাণ বিতরণ না করে আত্মসাৎ ও গুজব ছড়ানোর মাধ্যমে সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করার অভিযোগে সোনারগাঁ উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তার প্রস্তাবে স্থানীয় সরকার বিভাগ আপনাকে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত কর া হল এবং আগামী ১০ দিনের মধ্যে আপনাকে উক্ত বরখাস্তের কারণ দর্শনের জন্য বলা হলো। যদি আপনি তার সঠিক জবাব দিতে না পারলে আপনাকে স্থায়ী ভাবে বহিস্কার করা হবে।
তবে এ নোর্টিশের প্রেক্ষিতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ দাবির অভিযোগ তুলেন। তিনি বলেন তিনি নির্দোষ। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দাবিকৃত চাঁদা না দেয়ার তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে তাকে বহিস্কার করা হয়েছে।
অভিযোগে মো. কবির হোসেন উল্লেখ করেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুল ইসলামের অনৈতিক চাহিদার ভিত্তিতে ত্রাণ বিতরণের অজুহাতে তাকে নগদ দুই লক্ষ টাকা চাঁদা হিসেবে প্রদান না করায় বা অন্যকোন অসৎ উদ্দেশ্যে বা ব্যক্তিগত আক্রোশে বা অন্য কাহারো ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা প্ররোচনায় ক্ষুব্ধ হয়ে রাগ-অনুরাগ ও আবেগের বশবর্তী হয়ে তার বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যমূলক ভাবে তার জান-মাল, সম্মান ও সুনাম ক্ষুন্ন করার হীনস্বার্থে উল্লেখিত ১০০% মিথ্যা, কাল্পনিক অভিযোগে তাকে সোনারগাঁ উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের ০৮ নং ওয়ার্ডের নির্বাচিত সদস্য পদ হতে বরখাস্তের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেছেন। একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমার অজান্তে, তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে, স্থানীয় প্রশাসন কর্তৃক কোনরূপ কারণ দর্শানোর নোটিশ ইস্যু ছাড়াই ১০০% মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও প্রামাণ্য বিহীন অভিযোগ আনয়ন করে আমাকে অন্যায় ও অনৈতিকভাবে বরখাস্তের ব্যবস্থা গ্রহণ করায় তিনি সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও পারিবারিক ভাবে চরম অপমানিত ও হেয় প্রতিপন্ন হই। তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগে সরকার কর্তৃক প্রদত্ত ত্রাণ আত্মসাতের পরিমাণ সম্পর্কিত তথ্য, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আত্মসাৎকৃত ত্রাণ উদ্ধার সম্পর্কিত তথ্য, গুজব ছড়ানোর মাধ্যমে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার বিষয়ে কোনরূপ প্রামাণ্য আলামত এবং নির্দিষ্ট কোনো উপকারভোগী কর্তৃক কোনরূপ অভিযোগ ছাড়াই তার বিরুদ্ধে শাস্তির প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করতঃ মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রেরিত হঠাৎ সাময়িক বরখাস্তের আদেশ ও কারণ দর্শানো নোটিশ পেয়ে তিনি হতবিহ্বল ও মানসিকভাবে চরম বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে উচ্চতর তদন্ত ও আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যান কে অনুরোধ করেছেন।
এ ব্যাপারে সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দুদুকে অভিযোগ তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র উল্লেখ করে তিনি বলেন আমি যদি ঘুষের জন্য ইউপি সদস্যকে বরখাস্তের অনুরোধ করতাম তাহলে তিনি এতোদিন পরে এসে নতুন করে অভিযোগ করলেন কেন? এক প্রশ্নের জবাবে ইউএনও পাল্টা সাংবাদিকদের মাধ্যমে ইউপি সদস্যসের প্রতি প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেন, আমি কখন, কিভাবে, কার মাধ্যমে তার কাছে ঘুষ দাবি করেছি সেটার প্রমান থাকলে সেটা যেন তিনি আপনাদের কাছে দেন। এছাড়া তিনি বরখাস্ত হওয়ার পর শুনেছি একটি সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন সেখানে আমি তার কাছে যে ঘুষ দাবি করেছি তখন তিনি সেটি তো আপনাদের কাছে অভিযোগ করেননি। তাহলে এতোদিন পর তিনি কোন উদ্দেশ্যে কার ইশারায় আমার বিরুদ্ধে ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ তুলতেন সেটি সম্মানিত ইউপি সদস্যকে আপনারা জিঞ্জেস করেন।