আর এমন তাপমাত্রার প্রভাবে বাংলাদেশে এবারের শীত হতে পারে ব্যতিক্রমী। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আবহাওয়ার এমন আকস্মিক পরিবর্তনের জন্য দায়ী মানুষের নানা কর্মকাণ্ড।
ডিসেম্বরের শুরুতে এবার দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দেখা যায় দুই থেকে তিনদিনের বৃষ্টি। এরজন্য আপাত দৃষ্টিতে গভীর নিম্নচাপকে দায়ী করা হলেও- বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আসল কারণ দীর্ঘমেয়াদে জলবায়ুর পরিবর্তন।
এসবের ফলে দেশে এবারের শীতকাল অন্য সময়ের তুলনায় হবে কিছুটা ব্যতিক্রমী। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, বঙ্গোপসাগরের পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে একদিকে সাগরের পানি অস্বাভাবিক ভাবে গরম হয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় কমে আসবে শীত।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি ওয়েবসাইট ‘ইউনাইটেড স্ট্যাটাস এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সি’ বলছে নগরায়ন, কল-কারখানার সংখ্যা বৃদ্ধি, বন উজাড়, মোটর গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধিসহ মানুষের নানা কর্মকাণ্ড বাড়িয়ে দিচ্ছে গ্রিন হাউস প্রভাব।
পরিবেশবিদ ড. রুমানা সুলতানা বলেন, অনেক বেশি নির্মাণ বেড়ে যাচ্ছে এবং অবকাঠামোগত উন্নয়ন হচ্ছে। এই প্রত্যেকটা খাত থেকে আসলে গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণ হচ্ছে যার কারণে জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে।
‘ইউনিসেফ বাংলাদেশ’ এবং ‘বাংলাদেশ কৃষি তথ্য সার্ভিস’ এর তথ্য মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্বের যেসব দেশ ক্ষক্তিগ্রস্ত হচ্ছে তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। উষ্ণায়নের ফলে বাড়ছে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা যার ফলে ঘটছে ভয়াবহ দুর্যোগ। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে খরা, অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, ঘূর্ণিঝড় সহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ।
আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, ঘূর্ণিঝড়গুলো ডিসেম্বরে কম হয়, কিন্তু আমরা সম্প্রতি দেখলাম বঙ্গোপসাগরে জাওয়াদ তৈরি হয়েছে এর ফলে সারা দেশে দুই দিন টানা বৃষ্টিপাত হয়েছে। পাশাপাশি শীতকালে তীব্র শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা অনেকটা কমে গেছে। এই যে অস্বাভাবিক চরিত্র তা আমরা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি এর ফলে বাংলাদেশের আবহাওয়া ও জলবায়ুতে বিরূপ প্রভাব পড়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, জলবায়ুর এ পরিবর্তন আবহাওয়ার পাশাপাশি প্রভাব ফেলবে জীববৈচিত্রের উপর।
বিশেষজ্ঞদের মতে, জলবায়ুর এ পরিবর্তন আবহাওয়ার পাশাপাশি প্রভাব ফেলবে জীববৈচিত্রের উপর।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বাংলাদেশের খাদ্য, বাসস্থান, স্বাস্থ্য এবং কৃষি খাত সহ অবকাঠামোগত খাত। যার প্রভাব পরবে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন প্রক্রিয়ায়। তাই এখন থেকেই সবাইকে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।